কলকাতায় এবার নতুন আঙ্গিকে নাটক পরিবেশিত হবে। এত দিন দর্শক-শ্রোতারা নাটক দেখে এসেছেন মঞ্চে, থিয়েটার হলে, বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে অথবা খোলা মঞ্চে। এবার নাটক দেখবেন চলন্ত ট্রামে। নতুন করে এই নতুন আঙ্গিকে চলন্ত ট্রামে নাটক মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে কলকাতার নাট্যদল ‘সম্পর্ক’। ট্রামের দুটি কামরায় নাটকটি পরিবেশিত হবে। ট্রাম চলবে, সঙ্গে নাটকও চলবে। প্রথম কামরায় থাকবেন নাটকের কলাকুশলীরা। আর দ্বিতীয় কামরার ৩০ জন দর্শক বসে নাটকটি উপভোগ করবেন।
কলকাতার নাট্যদল ‘সম্পর্ক’ পরিবেশিত নাটকটির নাম ‘উড়ো চিঠি’। নাটকটির লেখক ও পরিচালক জিতাদিত্য চক্রবর্তী। চলন্ত ট্রামে ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর নাটকটির দুটি করে প্রদর্শন পরিবেশিত হবে। প্রথম প্রদর্শন হবে বিকেল পাঁচটায় আর দ্বিতীয় প্রদর্শন হবে সন্ধ্যা সাতটায়। ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের এই নাটকের চলন্ত ট্রামের রুট হবে কলকাতার টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো পর্যন্ত। নাটকটির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে ট্রাম নিয়েই। ফুটে উঠবে ট্রামের অতীত দিনের নানা কথাসহ বর্তমানের নানা কথা ও ছবি।
পরিচালক জিতাদিত্য চক্রবর্তী বলেন, ‘এ ধরনের নাটককে বলা হয় “সাইট স্পেসিফিক থিয়েটার”, অর্থাৎ যে জায়গায় নাটক করছি, সেটাকে নিয়ে গল্প বলা। এই নাটক শুরু হবে টালিগঞ্জের ট্রাম ডিপোতে। দর্শক আসবেন, তাঁদের আমরা ট্রামে বসাব, চা খাওয়াব। ট্রাম চলতে শুরু করবে। টালিগঞ্জ মেট্রোর সামনে থামবে। আমাদের চরিত্ররা উঠবে। অভিনয় শুরু হবে। এভাবে নাটক চলতে থাকবে। বিভিন্ন স্টপেজে থামবে। নতুন চরিত্ররাও উঠবে। নাটক এগিয়ে চলবে। ট্রামটাও এই নাটকের একটা চরিত্র।’
এ নাটকে অভিনয় করছেন নয়জন কলাকুশলী। ২০১৯ সালে চলন্ত ট্রামে এ ধরনের একটি নাটক পরিবেশনের চিন্তা করে নাট্যদল ‘সম্পর্ক’। কিন্তু ট্রামের ভাড়া শুনে তখন তারা আর এগোয়নি। এরপর পথনাটক, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাটক পরিবেশন করে তারা অর্থ সংগ্রহ করে। এবার সত্যি সত্যিই একটি ট্রাম দুই দিনের জন্য ভাড়া করে। অবশেষে আড়াই বছরের বেশি সময় পর চলন্ত ট্রামে নাটকটি মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে নাট্যদল ‘সম্পর্ক’। পরিচালক বলেছেন, এই ভিন্নধর্মী নাটকটি দেখে দর্শক–শ্রোতারা মুগ্ধ হলে তাঁরা মনে করবেন, তাঁদের এই চলন্ত ট্রেনে পরিবেশিত নাটকটি সফল হয়েছে, সার্থক হয়েছে।