খায়রুল বাসার
খায়রুল বাসার

সহিংসতা ভাঙচুর আঘাত কোনোভাবেই ন্যায্য না, কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য না: খায়রুল বাসার

১৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ঢাকার কারওয়ান বাজারে অবস্থিত প্রথম আলোর অফিস উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত আক্রমণের শিকার হয়েছে। প্রথম আলোর কর্মীরা এই সন্ত্রাসী হামলার মুখে সম্পূর্ণ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েন এবং জীবনের ঝুঁকিতে পড়ে যান। আক্রমণকারীরা অফিসের ভবন ব্যাপকভাবে ভাঙচুরের পর তাতে অগ্নিসংযোগ করে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা অগ্নিকাণ্ডের কারণে ভবন পুড়ে যায় এবং তাতে সংরক্ষিত সম্পদ ও মূল্যবান নথিপত্র ভস্মীভূত হয়। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষেরা। ফেসবুক পোস্টে ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাসার লিখেছেন, সহিংসতা ভাঙচুর আঘাত কোনোভাবেই ন্যায্য না এবং কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য না।

খায়রুল বাসার। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

এই সন্ত্রাসী হামলায় ভস্মীভূত হয়েছে প্রথম আলোর পাঠক সংগঠন বন্ধুসভা। বন্ধুদের সাহস জুগিয়ে অভিনেতা লিখেছেন, ‘আমাদের মন ভাঙুক তারা, সব ভাঙুক তারা, ভাঙতে ভাঙতে নিশ্চয়ই একদিন তারা ক্লান্ত হবে।’ পোস্টে খায়রুল বাসার লিখেছেন, ‘আমাদের বন্ধুসভা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যে বন্ধুসভার বন্ধুরা চর্চা করে পরিমল মানুষ হওয়ার চর্চা, চর্চা করে কীভাবে মানুষের পাশে থাকা যায়, কীভাবে বন্ধুর পাশে বন্ধু থাকা যায় এবং আমরা তা চেষ্টা করেছি। আমরা চেয়েছি প্রতিদিন একটা ভালো কাজ, যা এগিয়ে দিতে পারে আমাকে-আপনাকে-আমাদের এক সুন্দর আগামীর দিকে। নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো বা স্বেচ্ছাসেবী হাজারো বন্ধুরা এই বন্ধুসভার হয়ে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজ করে গেছে শুধু একটা উর্বর সুন্দর বিকশিত বাংলাদেশের আশায়।’

খায়রুল বাসার আরও লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা রইল, ভালোবাসা আর হৃদ্যতার বন্ধন অটুট থাকুক। বন্ধুসভার বন্ধুরা যেন সৃজনশীলতায় থাকে, ভালোবাসা নিয়ে মানুষের পাশে থাকে, ন্যায়ের পক্ষে থাকে। বরাবরের মতোই যেন যেকোনো দুর্যোগে বন্ধু হয়ে থাকে মানুষের পাশে। এই সামান্য সুন্দর চর্চা চালিয়ে যাবে বন্ধুসভা এই কামনা। আমাদের মন ভাঙুক তারা, সব ভাঙুক তারা, ভাঙতে ভাঙতে নিশ্চয়ই একদিন তারা ক্লান্ত হবে।’

পোস্টে এই অভিনেতা আরও লিখেছেন, ‘জনতা অধিকারের আওয়াজ তুলবে, আঘাত এলে তা প্রতিরোধ করবে; স্বপ্রণোদিত হয়ে সহিংসতা জনতার কাজ না। যারা সহিংসতা করছে, তারা কেবল জনতা শব্দের অধিকারী হলে খুব ভুল হচ্ছে, বস্তুত জনতা থেকে ক্রমেই দূরে যাচ্ছে তারা। সহিংসতা ভাঙচুর আঘাত কোনোভাবেই ন্যায্য না এবং কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য না। আমরা এই কালচারের অবসান চাই বর্তমান ও আগামীর জন্য। আঘাত করতে মেধা লাগে না। লেখাকে লেখা দিয়ে কলমকে কলম দিয়ে জবাব দিতে হয়। সন্ত্রাস না, আমাদের যেতে হবে যুক্তিতর্ক শেষে ন্যায্যতা ও সুন্দরের দিকে।’
সবশেষ বাসার লিখেছেন, ‘জেনে রাখা ভালো, ছায়ানট ভেঙে গান থামবে না, নজরুল–রবীন্দ্র–লালন বাদে বাংলা না।’