নিজের পরিচালনায় প্রথম ধারাবাহিক। বাংলাভিশনে ‘বিবাহ হবে’ শিরোনামের এই ধারাবাহিকের আজ শততম পর্ব প্রচারিত হবে। পরিচালনার পাশাপাশি এই নাটকে অভিনয়ও করছেন রওনক হাসান।
প্রথম পরিচালিত ধারাবাহিক নাটকের শততম পর্ব প্রচারে অনুভূতি কেমন?
যখন নাটকটি শুরু করেছিলাম, তখন চিন্তা ছিল, দর্শক পছন্দ করবেন কি না। চ্যানেল থেকে আমাকে বলাও হয়েছিল, এখন যেসব ধারাবাহিক প্রচারিত হয়, স্পন্সরের ওপরই নির্ভর করতে হয়। দর্শক পছন্দ করলে শত পর্ব হবে, না হলে আগেই বন্ধ হয়ে যাবে। ফাইনালি দর্শক পছন্দ করায় শততম পর্ব প্রচারিত হচ্ছে। ১০৪ পর্বে নাটকটি শেষ হচ্ছে। সেই হিসাবে আমি খুবই খুশি। এখন তো ভিউও একটা গুরুত্ব বহন করে। প্রতিটা পর্ব ইউটিউবে আপলোড করার পরও দর্শক আগ্রহ নিয়ে যে দেখছেন, লাখ আর মিলিয়ন ভিউতে তা বোঝা যাচ্ছে। এটা আমার জন্য ভীষণ উৎসাহের।
শুরুতে কত পর্ব পর্যন্ত বানাতে চেয়েছিলেন?
হান্ড্রেড এপিসোডই করার পরিকল্পনা ছিল। আমার গল্পে মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে বিবাহ। আমাদের সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত—সব শ্রেণির বিয়ে নিয়ে নানা ধরনের চিন্তা আছে। আমি ও আমার কো–রাইটার নওমী কামরুন বিধু গবেষণা করে বিয়েবিষয়ক ৪৬টা পয়েন্ট বের হয়েছি। এই নাটকে মাত্র ১২টা পয়েন্ট ব্যবহার করতে পেরেছি। আরও বাকি আছে, এটা দিয়ে সিকুয়েল বা নেক্সট সিজন—যে নামেই হোক, কিছু একটা বানাতে চাই।
একসঙ্গে নির্দেশনা ও অভিনয়ে ভালো না খারাপ?
নিজের ডিরেকশনে অভিনয় করতে গেলে ডিরেকশনটা এনজয় করা যায় না। সারাক্ষণই একটা টেনশন মাথায় নিয়ে কাজ করতে হয়। যখন পরিচালনার সময় অভিনয় করি না, তখন পরিচালনা উপভোগ করতে পারি। আবার এমনও হয়, চাপ অনুভব করলেও নিজের পরিচালনায় অভিনয় করলে অভিনয় একটা ভালো জায়গায় দাঁড়ায়। নিজের ইচ্ছেমতো টেক নিতে পারি। মনিটরে দেখতে পারি। অন্য সময় চাইলেও বারবার টেক নিতে পারি না। নিজেই যেহেতু হর্তাকর্তা, এই সুবিধাও থাকে।
এটা কি একধরনের স্বজনপ্রীতি?
(হাসি)। এটা শুধুর আমার ক্ষেত্রে না, সবার জন্য একই। আমি যেহেতু অভিনেতা, তাই সবাই আমাকে সেই সহযোগিতাও করেছেন। এমনও হয়েছে, ভালোর জন্য তাঁদের ৩০–৪০ বারও টেক নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিনয়টা যতটুকু বুঝি, ওই জায়গাটায় আমি কোনো ছাড় দিই না। আমার সঙ্গে কাজ করে আমার অধিকাংশ শিল্পীই খুব খুশি। তাঁরাও আমাকে নির্মাণের ব্যাপারে বেশি উৎসাহ দিচ্ছেন। আমি অন্য পরিচালকের কাজ করার সময় অভিনেতা হিসেবে যা কিছু প্রত্যাশা করি, আমার শুটিং সেটে তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
চলচ্চিত্র পরিচালনার কোনো স্বপ্ন আছে?
পাঁচ বছর ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। স্ক্রিপ্ট ডেভেলপমেন্টের কাজ করে যাচ্ছি। সরকারি অনুদানের জন্য জমাও দিয়েছিলাম, পাইনি। এখন নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রথম সিনেমা হয়তো নিজের বা বন্ধুবান্ধবের টাকায় বানাতে হতে পারে। সবকিছু তো আমাকে প্রমাণ করে করে যেতে হয়। তবে একদিক থেকে আমি অনেক ভাগ্যবান। আমার সবকিছু পেতে অনেক কষ্ট হয়।
প্রথম সিনেমা কেমন হবে—বাণিজ্যিক, না ভিন্নধারা?
আমি আসলে ওভাবে ভাবি না। আমি বুঝি, ভালো সিনেমা আর খারাপ সিনেমা। আমার কাছে কয়েক রকম গল্প আছে। মনে হয়, সাহিত্যনির্ভর অথবা মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে সিনেমা বানানো উচিত।
আপনার স্বপ্ন কি চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা, নাকি অভিনয় চালিয়ে যাওয়া?
অভিনয় নিয়ে স্বপ্ন দেখতে হতাশা লাগে, ক্লান্ত লাগে। একসময় অভিনয় নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতাম। আমার কাছে মনে হয়, অভিনয়টা পরনির্ভরশীল শিল্প। আমার তাকিয়ে থাকতে হয়, ভালো বাজেটে, একটি ভালো গল্পে, একজন ভালো পরিচালকের অধীনে একটি ভালো চরিত্রে সুযোগের। আমি যত অসামান্য অভিনেতাই হই না কেন, এটি আসলে আমার হাতে নেই।