আলাপন

গানই আমার আসল দেশ

>তরুণ প্রজন্মের সংগীতশিল্পী আরমীন মুসা। একক গানের পাশাপাশি ছয় বছর ধরে ‘দ্য আরমীন মুসা ব্যান্ড’ নিয়েও শ্রোতাদের গান শোনাচ্ছেন। গত শনিবার রাতে জর্জ হ্যারিসনের ‘বাংলাদেশ’ গানটি নতুন করে প্রকাশ করে গানের দলটি। ১৯৭১ সালে বহির্বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে জনমত গঠন ও অর্থসাহায্য সংগ্রহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর ও শিল্পী জর্জ হ্যারিসন। সেখানেই প্রথম গানটি গেয়েছিলেন তিনি। গতকাল রোববার বিকেলে এই গান ও অন্যান্য বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন আরমীন মুসা।
আরমীন মুসা l ছবি: সংগৃহীত
আরমীন মুসা l ছবি: সংগৃহীত

‘বাংলাদেশ’ গানটি গাওয়ার পেছনে কোনো গল্প আছে?
কনসার্ট ফর বাংলাদেশের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে ওই কনসার্টে গাওয়া আটটি গান গেয়েছিলাম। সম্প্রতি একটি রেডিও থেকে আমাকে চারটি গান গাওয়ার প্রস্তাব দেয়। তখন ভাবলাম, ‘বাংলাদেশ’ গানটি দিয়ে শুরু করি। শিল্পীদের শক্তি কতটা, সেটা আমরা ১৯৭১ সালে দেখেছি। রবিশঙ্কর ও জর্জ হ্যারিসন কনসার্টের মাধ্যমে বিশাল দর্শকের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। একজন সংগীতকর্মী হিসেবে জর্জ হ্যারিসন তাঁর সংগীতের শক্তি যেভাবে ব্যবহার করেছেন, সেটাকে শ্রদ্ধা জানাতে গানটি নতুন করে গাইলাম।
আর বাকি তিনটি গান?
বাকি তিনটি গান পর্যায়ক্রমে করব। এই গানগুলো পুরোপুরি অ্যাকুস্টিকে গাওয়া। সেভাবে কোনো গানের থিম নেই। আমরা চেয়েছি, গানগুলোতে শুধু পিয়ানো আর কণ্ঠ থাকবে। সেটাই রাখার চেষ্টা করেছি।
আপনার মা শিল্পী নাশিদ কামাল ‘বাংলাদেশ’ গানটি শুনেছেন?
তিনি শুনেছেন, কিন্তু কিছু বলেননি। আমি সব সময় দেখে আসছি, মায়ের কাছে যদি অসাধারণ মনে না হয়, তাহলে তিনি কিছু বলেন না। তবে মা মাঝেমধ্যে আমার গান শুনে মতামত দেন।
তিনি যখন কিছু বলেন, তখন কেমন লাগে?
অনেক অনুপ্রেরণা দেন। একজন মিউজিশিয়ান হিসেবে অনেক ভালো লাগে। তবে আমি মনে করি, আমার গান কারও জীবনে যদি সামান্যতম প্রভাব ফেলে, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির জায়গা। যখন শুনতে পাই, আমার গান কাউকে গভীর রাতে সঙ্গ দিয়েছে, কারও হৃদয় স্পর্শ করেছে, তখন খুব খুশি হই।
বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন?
আমার মা-বাবারা যে বাংলাদেশে বড় হয়েছেন, সেই বাংলাদেশ এখন আর নেই। এরপরও এখনো যে কয়জন সংগীত ও শিল্পকে ধরে রেখেছেন, তাঁদের প্রতি অনেক শ্রদ্ধা। তাঁরা যেন নিয়মিত কাজ করে যান, সেটাই চাই। একজন মিউজিশিয়ান তাঁর মিউজিক যেখানে ভালো করতে পারবেন, সেটাই তাঁর দেশ। গানই আমার আসল দেশ। গান যেখানে যাবে, আমিও সেখানে যাব।

সাক্ষাৎকার: মনজুর কাদের