এশা মার্ডার: কর্মফল সিনেমায় পুলিশ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হচ্ছেন ফারুক আহমেদ। মঞ্চনাটক রঙমহাল-এর নির্দেশনার কাজে ব্যস্ত এখন এই অভিনেতা। কাজসহ নানা প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে মনজুরুল আলম
সিনেমায় আপনাকে খুব একটা দেখা যায় না।
সিনেমা করি। কিন্তু সেগুলো চরিত্র বা আমার অংশের গল্পে তেমন গুরুত্ব না থাকায় চোখে পড়ে না। যে কারণে মনে হয় সিনেমা করি না। তবে এটাও সত্য, সিনেমায় অভিনয় নিয়ে আমার রাগ-ক্ষোভ আছে।
রাগ–ক্ষোভ কেন?
অনেক সিনেমায় আমাকে কেন নেয়, আমি জানি না। বেশির ভাগ সিনেমার চিত্রনাট্য দেখে মনে হয়, আমাকে খামাখা নেয়। দেখা যায়, চরিত্র খুবই দুর্বল। অভিনয়ের জায়গা থাকে না। কিছু পরিচালক কেন ডাকে, জানি না। শুটিং করেও কেউ কেউ চরিত্র কমিয়ে ফেলে। এসব কারণে নিজের ওপর রাগ হয়। আমি তো দুর্বল বা খারাপ অভিনেতা নই।
তাহলে সিনেমায় আপনাকে যথাযথ ব্যবহার করা হয়নি?
সেটা বলব না। আমি শ্যামল ছায়া, তারকাঁটা, ভয়ংকর সুন্দরসহ বেশ কিছু সিনেমায় ভালো চরিত্রের সুযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে বলব মোস্তফা কামাল রাজের তারকাঁটা সিনেমার কথা। সিনেমায় খল চরিত্রে অভিনয় করেছি, সেটা বড় সুযোগ ছিল। কিন্তু সেখানেও আমার কিছু ভুল ছিল। মনে হয়েছে, গেটআপ আরও ভালো হতে পারত। সিনেমায় অনেক হাসির দৃশ্য ছিল, সেটা কমানো যেত। আমি ভুল থেকে শিখতে চাই। শেখার তো বয়স নেই। অনিমেষও (আইচ) ভালো সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কারণে অনেকের সঙ্গেই কখনো ব্যাটে–বলে মিলেছে, কখনো মেলেনি।
‘এশা মার্ডার: কর্মফল’ নিয়ে কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?
যারাই দেখছে, ভালো বলছে। প্রশংসা পাচ্ছি। কিন্তু এখন আর প্রশংসা ভালো লাগে না। ভালো চরিত্রের অপেক্ষা ভালো লাগে, যে কাজ করে আমি আনন্দ পাব। আমার বউ আমার অভিনয়ের সবচেয়ে বড় সমালোচক। সে আমার অভিনয় তেমন পছন্দই করে না। কমেডি দেখলেই বলে, আমি এসব কী করি, কেন করি। কিন্তু এবারের পুলিশের চরিত্র দেখে পছন্দ করেছে। তার কথা, এমন চরিত্রে অভিনয় করি না কেন? এমন ধরনের চরিত্র তো পাই না।
চরিত্রটি আপনার কতটা ভালো লেগেছে?
পুরোটাই ভালো লেগেছে, সেটা বলব না। সিরিয়াস চরিত্র, সিচুয়েশনাল কমেডি দর্শক উপভোগ করেছেন। এ চরিত্রের যদি আরও ব্যাপ্তি থাকত, দর্শক মজা পেত। চিত্রনাট্যে চরিত্র দিয়ে দাগ কাটার মতো জায়গা তৈরি করতে হবে। তখন অভিনেতা হিসেবে দক্ষতা দেখানো যায়। এগুলো নিয়ে ভবিষ্যতে টিম যদি ভাবে, তাহলে দর্শক আরও ভালো অভিনয় পাবে। তবে পরিচালক সানীকে (সানোয়ার) ধন্যবাদ, তিনি আমার কথা ভেবেছিলেন।
কখনো মনে হয়, নাটকের অভিনয়শিল্পীই রয়ে গেলেন?
আমি তো নাটকের অভিনয়শিল্পীই। এটাই তো আমার পরিচয়। বাইরে বের হলেও অনেকে বলেন, নাটকের অভিনেতা ফারুক আহমেদ। এটাকে আমি অনেক বড় পরিচয় বলে মনে করি। কারণ, দর্শক আমাকে নাটক দিয়েই চেনে। কিন্তু একসময় চেয়েছিলাম সিনেমা করতে। সেই সুযোগ ও গল্প ভাগ্যে মেলেনি। আমার সিনেমা-ভাগ্যটাই খারাপ। যে কারণে এখনো প্রচুর চিত্রনাট্য পাই, বেশির ভাগ দেখেই বলে দিই, করব না। কাজে লাগানোর মতো সুযোগ না থাকলে দিন শেষে হতাশ লাগে।
ক্যারিয়ারে কোনো চরিত্রকে কখনো চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছিল?
অনেক দুর্বোধ্য চরিত্রে অভিনয় করে সফল হয়েছি। করতে পারব দেখেই নাম জড়িয়েছি। চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিইনি। দর্শক হাসাতে হবে ভাবিনি। জোর করে দর্শক হাসানো যায় না। আমি আমার কাজ করে গেছি।
এখন কী নিয়ে ব্যস্ততা?
বেশির ভাগ সময় নাটকের শুটিং থাকে। তবে ঈদের পর থেকে রঙমহাল নির্দেশনার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগেই ঘোষণা দিয়েছিলাম, এ বছরই নাটকটি মঞ্চে আনব। দীর্ঘদিন পর একটি মঞ্চনাটকে অভিনয় করছি। সেলিম আল দীনের জন্মবার্ষিকীতে এটা মঞ্চায়িত হবে।