
‘চুড়ি ছাম ছাম’ গেয়ে আলোচনায় রয়েছেন সংগীতশিল্পী লুইপা। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে গানটির ভিডিও ইউটিউবে ৪০ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। নতুন গান, সঙ্গে গানের ভিডিওতে উপস্থিতি মিলিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় এই গায়িকা। সাম্প্রতিক নানা প্রসঙ্গ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো।
গানটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ চর্চা চলছে...
লুইপা: অনেক দিন পর কোনো মৌলিক গান প্রকাশ করেছি। এটি আমার অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এসেছে। ২০২১ সালের পর চ্যানেলটাতে আর কোনো মৌলিক গান প্রকাশ করা হয়নি। এ রকম অনিয়মিত চ্যানেল থেকে গানটা এত মানুষের কাছে ছড়াবে, ভাবিনি। গানটা শুনে মানুষ প্রশংসা করছে, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। সত্যিই এটা আমার কাছে অনেক আনন্দের।
এত দিন মৌলিক গানের বাইরে ছিলেন কেন?
লুইপা: আসলে মৌলিক গানের বাইরে ছিলাম না, গানের সঙ্গেই ছিলাম। আমার গানগুলো আমি নিজেই প্রডিউস (প্রযোজনা) করি। ফিল্মেও আমার ওই রকম গান করা হয়নি। নিজেই যেহেতু নিজের গান বানাই, ফলে নিজেকেই অর্থ লগ্নি করতে হয়। ফলে খুব বেশি গান বানানো যায় না।
‘চুড়ি ছাম ছাম’ গানটা কীভাবে তৈরি হলো?
লুইপা: জুয়েল মোর্শেদ (গায়ক ও সংগীত পরিচালক) ভাই আমাকে তানভীর (সুরকার), রাকিব আহমেদ (পরিচালক) ও আবিরের (গীতিকার) সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তারা এই প্রজন্মের ছেলে, তিনজন বন্ধু। তাদের কাজ আমার খুব ভালো লাগে। তারা এখনকার অডিয়েন্স ও সাউন্ড বোঝে। আমি তানভীরকে বললাম, আমার গানটা মেলোডিয়াসও হতে হবে, আবার ট্রেন্ডিও হতে হবে। তখন তানভীর আমাকে ‘চুড়ি ছাম ছাম’ গানটা পাঠাল। আমি ভাবলাম, এর মধ্যে বিয়ের মৌসুম চলে এসেছে। বিয়েবাড়িতে প্রোগাম হলে নিজে যেন একটা গান করতে পারি, সেই ভাবনা থেকেই গানটা করেছি।
গানটার মধ্যে নব্বইয়ের বলিউডি সিনেমার গানের প্রেরণা আছে।
লুইপা: হ্যাঁ। এটা ওয়েডিং সং। আমরা বিয়েবাড়িতে সাধারণত কোন গানগুলো বাজাই আর নাচি? নাইনটিজের বলিউড ভাইবের গানগুলো বাজাই, নাচি। আমাদের মতো নাইনটিজ কিডরা এখনো বিয়েতে সেসব গানই বাজাই। আমার কাছে মনে হয়েছে, এ রকম যদি একটা বাংলা গান থাকে, তাহলে মানুষ বিয়েবাড়িতে বাংলা গানই বাজাবে।
সংগীত পরিচালকেরা হয়তো আমাকে যোগ্য মনে করেনি, সে কারণেই আর পরে গাওয়া হয়নি। সব আর্টিস্টেরই সিনেমায় গাওয়ার ইচ্ছা থাকে। আমারও ইচ্ছা আছে।
সিনেমায় আপনাকে গাইতে দেখা যায় না কেন?
লুইপা: এটা আমার হাতে নেই। এমনিতে আমাদের দেশে সিনেমার সংখ্যা খুবই কম। আর আমাদের দেশে প্রচুর আর্টিস্ট। পরাণ-এ আমার প্রথম প্লেব্যাক ছিল। এরপর আর কোনো সিনেমায় গাওয়া হয়নি। সংগীত পরিচালকেরা হয়তো আমাকে যোগ্য মনে করেনি, সে কারণেই আর পরে গাওয়া হয়নি। সব আর্টিস্টেরই সিনেমায় গাওয়ার ইচ্ছা থাকে। আমারও ইচ্ছা আছে। যেহেতু আমার ফিল্মে গাওয়ার সুযোগ হচ্ছে না, সেহেতু আমার মৌলিক গানগুলো ফিল্মি প্যাটার্নে (সিনেমার মতো) করার চেষ্টা করি।
এখন তো ডিজিটাল মাধ্যম শিল্পীদের দুনিয়া খুলে দিয়েছে।
লুইপা: আমরা এখন নিজেরা নিজেদের গান তৈরি করতে পারি। নিজেদের পছন্দটাকে মূল্য দিতে পারি। আমি কেমন গান গাইতে চাই, সেটা এখন আমাদের হাতেই রয়েছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থাকলে নিজেকে নিজের মতো করে এগিয়ে নেওয়া যায়।
সামনে কী গান করছেন?
লুইপা: আমার বেশ কয়েকটি মৌলিক গান করা আছে। যেহেতু ‘চুড়ি ছাম ছাম’ মানুষের ভালো লেগেছে, এরপর ফোক মেলোডি ঘরানার গান প্রকাশের চেষ্টা করব। এরপর ধারাবাহিকভাবে গান প্রকাশ করব।
‘আরটিভি লিটল স্টার-আগামীর কণ্ঠস্বর’-এ বিচারক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
লুইপা: এবার প্রথম কোনো রিয়েলিটি শোর বিচারকের দায়িত্ব পালন করছি। এটা সত্যিই খুব দারুণ একটা জার্নি। বাচ্চাদের রিয়েলিটি শোর জাজ হিসেবে বসেছি, এটা অনেক কঠিন কাজ। বাচ্চাদের জাজ করা যায় না। কাউকে বাদ দিতে ইচ্ছা করে না। এটা আমার ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
শো করছেন?
লুইপা: আজ (পরশু) শো শুরু করেছি। নিয়মিত শো করব।