কান উৎসব কি তবে অনলাইনে হবে
এ বছর ৭৩তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে থাকছে না প্যারালাল সেকশন। অর্থাৎ ডিরেক্টরস ফোর্টনাইট, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিকস উইক ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ইনডিপেনডেন্ট সিনেমা অ্যান্ড ইটস ডিস্ট্রিবিউশন (এসিআইডি) এবার নেই!
কান চলচ্চিত্র উৎসবের মূল প্রতিযোগিতার পাশাপাশি এই তিন শাখাকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। ১৩ এপ্রিল ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ঘোষণা দেন, আগামী জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত কোনো ধরনের উৎসব আয়োজিত হবে না। এরপরই এই তিন শাখার আয়োজকদের পক্ষ থেকে একটি যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। সেখানে জানানো হয় যে কান চলচ্চিত্র উৎসব জুনের শেষ ও জুলাইয়ের প্রথম দিকে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন এটিও সম্ভব নয়। সুতরাং উৎসবের প্যারালাল সেকশন জানাচ্ছে যে এবারের আসরে এসিআইডি শাখাটি না থাকায় তারা দুঃখিত।
চলচ্চিত্রকার ও চলচ্চিত্র প্রযোজকদের জন্য এসিআইডি একটি লোভনীয় শাখা। ১৯৯৩ সালে এই শাখার যাত্রা শুরু হয়। নয়টি প্রামাণ্য ও ফিচার ফিল্ম প্রতিবছর এই শাখায় দেখানো হয়। তরুণ চলচ্চিত্রকারদের জন্যও শাখাটি গুরুত্বপূর্ণ।
ইন্টারন্যাশন্যাল ক্রিটিকস উইক তরুণ চলচ্চিত্রকারদের জন্য খুবই সম্মানজনক। এটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের মূল প্রতিযোগিতার বাইরের সবচেয়ে পুরোনো প্যারালাল সেকশন। ১৯৬২ সালে এটি শুরু হয়। যেকোনো চলচ্চিত্রকারের প্রথম ও দ্বিতীয় ছবিটি সাধারণত এখানেই দেখানো হয়। প্রতিবছর সাতটি ফিচার ফিল্ম ও সাতটি শর্টফিল্ম প্রদর্শিত হয় এই শাখায়। আলেহান্দ্রো গঞ্জালেস ইনারিতু ও ওং কার-ওয়াইয়ের মতো চলচ্চিত্রকারদের ছবিও এখানেই দেখানো হয়েছে।
১৯৬৯ সালে যাত্রা শুরু করে ডিরেক্টরস ফোর্টনাইট। মূল ধারার বাইরের চলচ্চিত্রকারদের জন্য শাখাটি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের নির্মাতা তারেক মাসুদের মাটির ময়না ছবিটি এখানেই দেখানো হয়েছিল। এ ছাড়া জর্জ লুকাস, মার্টিন স্করসেজি, জিম জারমাশ ও কেন লোচের মতো খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকারদের সিনেমাও এখানেই দেখানো হয়।
সম্প্রতি কান চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এবারের উৎসবটি তার নিজস্ব ঢঙে করা যাচ্ছে না। অন্য কোনোভাবে করা যায় কি না, সে বিষয়ে ভাবছে তারা। মার্চের মাঝামাঝি সময়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, গোটা বিশ্বে করোনা–আতঙ্ক। এমন পরিস্থিতিতে ১২ থেকে ২৩ মে অনুষ্ঠেয় কান চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করা যাচ্ছে না। এটি জুন মাসের শেষ বা জুলাই মাসের গোড়ার দিকে আয়োজন করা হতে পারে।
কিন্তু পরিস্থিতি এখনো অস্বাভাবিক। ফ্রান্সে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তাই ১১ মে পর্যন্ত বেড়েছে লকডাউনের মেয়াদ। সে কারণে এক বিবৃতিতে উৎসব কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রতিবছর কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব যেভাবে অনুষ্ঠিত হয়, এ বছর সেভাবে করা সম্ভব নয়। অন্য কোনো উপায়ে ‘কান-২০২০’ আয়োজনের কথা ভাবা হচ্ছে।
প্যারালাল সেকশন বাদ হওয়ায় কমে গেছে উৎসবটির পরিসর। তবে কি কান কর্তৃপক্ষ অনলাইনেই উৎসব করার কথা ভাবছে? তা অবশ্য পরিষ্কার জানা যায়নি। যদিও আরেক সম্মানজনক চলচ্চিত্র উৎসব ট্রিবেকা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অনলাইনেই আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সূত্র: বিবিসি, ফোর্বস, ডেডলাইন