‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’–এর দৃশ্য। আইএমডিবি
‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’–এর দৃশ্য। আইএমডিবি

সমালোচকেরা পাত্তা দিচ্ছেন না, তবু বিশ্বজুড়ে ‘অ্যাভাটার–ঝড়’

১৯ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে ‘অ্যাভাটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় কিস্তি ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’। সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্স ও ব্লকবাস্টার সিনেমাসেও মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। মুক্তির পর সমালোচকেরা জেমস ক্যামেরনের সিনেমাটিকে সেভাবে পাত্তা না দিলেও বক্স অফিসে ভালো দাপট দেখাচ্ছে; বড়দিনেও আয়ে এগিয়ে আছে ‘অ্যাভাটার ৩’।

একচেটিয়া আধিপত্য
ক্রিসমাস ইভে উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়েছে জেমস ক্যামেরন পরিচালিত বিজ্ঞান কল্পকাহিনির ছবি ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’। ডিজনির টোয়েনটিনথ সেঞ্চুরি স্টুডিওস প্রযোজিত ছবিটি গত বুধবার এক রাতেই আয় করেছে ১ কোটি ৭ লাখ ডলার, যা এসেছে উত্তর আমেরিকার ৩ হাজার ৮০০টি প্রেক্ষাগৃহ থেকে।

তবে এই আয় ২০২২ সালের ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’–এর তুলনায় কিছুটা কম। ওই বছর ছবিটি ক্রিসমাস ইভে আয় করেছিল ১ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। তবে সে বছর ক্রিসমাস ইভ পড়েছিল শনিবার, যা সাধারণত সিনেমা দেখার জন্য সপ্তাহের সবচেয়ে জনপ্রিয় দিন।

‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

প্রথম সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে আয় প্রায় ৪৮ কোটি ডলার
ডিজনির পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার থেকে রোববার—এই চার দিনে ‘অ্যাভাটার ৩’ আয় করতে পারে ৭ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৮ কোটি ডলার। মুক্তির এক সপ্তাহ পেরোতেই ছবিটি উত্তর আমেরিকায় আয় করেছে ১২ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, আর আন্তর্জাতিক বাজারে আয় ৩৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। সব মিলিয়ে ছবিটির বিশ্বব্যাপী আয় দাঁড়িয়েছে ৪৮ কোটি ৩৩ লাখ ডলারে।

বড়দিনের আগে প্রিভিউ শোতে তিন নতুন ছবি
বড়দিন উপলক্ষে মুক্তির আগে গত বুধবার প্রিভিউ শোতে প্রদর্শিত হয়েছে তিনটি নতুন ছবি—টিমোথি শ্যালামে অভিনীত স্পোর্টস ড্রামেডি ‘মার্টি সুপ্রিম’, মিউজিক্যাল ড্রামা ‘সং সাং ব্লু’ ও ডিজাস্টার কমেডি ছবি ‘অ্যানাকোন্ডা’।

‘অ্যানাকোন্ডা’ বুধবার প্রিভিউ শোতে ২ হাজার ৮০৮টি প্রেক্ষাগৃহ থেকে আয় করেছে ২১ লাখ ডলার। ছবিটি বৃহস্পতিবার থেকে রোববার পর্যন্ত চার দিনে আয় করতে পারে প্রায় দুই কোটি ডলার।

‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’–এর প্রিমিয়ারে দর্শকের ভিড়। এএফপি

৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার বাজেটের এই মেটা-রিবুট ছবির গল্প দুই বন্ধুকে নিয়ে, যারা নিজেদের শৈশবের প্রিয় ছবি ১৯৯৭ সালের ‘অ্যানাকোন্ডা’ নতুন করে বানাতে জঙ্গলে যায়; কিন্তু গল্পে মোড় নেয় তখনই, যখন বাস্তব জীবনের এক ভয়ংকর অ্যানাকোন্ডা তাদের শিকার করতে শুরু করে।

‘মার্টি সুপ্রিম’: আর্টহাউস ছবির শক্তিশালী শুরু
প্রিভিউ আয় তালিকায় ‘অ্যানাকোন্ডা’র খুব কাছেই রয়েছে ‘মার্টি সুপ্রিম’। ছবিটি ২ হাজার ৬৬৮টি প্রেক্ষাগৃহ থেকে আয় করেছে ২০ লাখ ১০ হাজার ডলার। সীমিত পরিসরে মুক্তির এক সপ্তাহ পেরিয়ে ছবিটির মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

‘মার্টি সুপ্রিম’ সিনেমায় টিমোথি শ্যালামে। আইএমডিবি

তবে শৈল্পিক ঘরানার ছবিটি চার দিনের ছুটিতে দুই কোটি ডলারের বেশি আয় করার লক্ষ্য নিয়েছে। সাত কোটি ডলার বাজেটের এই ছবির জন্য এমন সূচনা বেশ আশাব্যঞ্জক বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এতে বড় ভূমিকা রেখেছেন টিমোথি শ্যালামে নিজেই—কাল্পনিক টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন মার্টি মাউজার চরিত্রে অভিনয় করা এই তারকা ছবির প্রচারে একাই যেন পুরো মার্কেটিং টিম হয়ে উঠেছেন। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ‘আনকাট জেমস’খ্যাত জশ সাফাদি।

‘সং সাং ব্লু’র পূর্বাভাস আয় ১–১.৪ কোটি ডলার
‘সং সাং ব্লু’ বুধবার প্রিভিউ আয় প্রকাশ করেনি। তবে অনুমান করা হচ্ছে, ছবিটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহে ২ হাজার ৪০০টি প্রেক্ষাগৃহ থেকে আয় করতে পারে ১ কোটি থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

তিন কোটি ডলার বাজেটের এই ছবি পরিচালনা করেছেন ব্রুয়ার। এতে অভিনয় করেছেন হিউ জ্যাকম্যান ও কেট হাডসন। গল্পটি দুই হতাশাগ্রস্ত সংগীতশিল্পীকে নিয়ে, যারা একসময় নিল ডায়মন্ড ট্রিবিউট ব্যান্ড গড়ে তোলে।

‘জুটোপিয়া ২’ সিনেমার পোস্টার। আইএমডিবি

দ্বিতীয় স্থানে ‘জুটোপিয়া ২’
এদিকে বুধবারের বক্স অফিস তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল ডিজনির অ্যানিমেশন ছবি ‘জুটোপিয়া ২’। ছবিটি এক দিনে ৩ হাজার ৫৪০টি সিনেমা হল থেকে আয় করেছে ৩২ লাখ ডলার।

থ্যাংকসগিভিংয়ের সময় মুক্তির পর থেকে ছবিটি উত্তর আমেরিকায় আয় করেছে ২৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার, আর বিশ্বব্যাপী আয় ১৩০ কোটি ডলার। এর মাধ্যমে ‘জুটোপিয়া ২’ চলতি বছরের সবচেয়ে বেশি আয় করা হলিউড ছবি হয়ে উঠেছে।

ভ্যারাইটি অবলম্বনে