
১২ বছরের এক কিশোরের জন্য গান গেয়ে শুরু হয়েছিল রুনা লায়লার সংগীতজীবন। ৫৭ বছরের বর্ণাঢ্য সংগীত ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের খুব কম নায়িকাই আছেন, যাঁরা তাঁর গাওয়া গানে ঠোঁট মেলাননি। ১৯৬৪ সালে বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলীর অনুমতি নিয়ে সাড়ে ১১ বছর বয়সে পাকিস্তানের ‘জুগনু’ চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাক করেন রুনা লায়লা। ‘গুড়িয়াসি মুন্নি মেরি ভাইয়া কি পেয়ারি’ গানটি কণ্ঠে তোলার জন্য টানা দুই মাস তালিম নিয়েছিলেন তিনি।
রুনা লায়লা এ দেশের প্রথম সংগীতশিল্পী যিনি জয় করে নেন উপমহাদেশের মানুষের হৃদয়। ৯০ দশকে মুম্বাইয়ে পাকিস্তানি সুরকার নিসার বাজমির সুরে ১ দিনে ১০টি করে ৩ দিনে ৩০টি গানে কণ্ঠ দিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। ১৭টি ভাষায় ১০ হাজারেরও বেশি গান করেছেন রুনা লায়লা। কাল ১৭ নভেম্বর কিংবদন্তিতুল্য এ শিল্পীর জন্মদিন।
মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রতিদিন সকালের নিয়মিত আয়োজন ‘রাঙা সকাল’-এর বিশেষ একটি পর্ব সম্প্রতি ধারণ করা হয়েছে এই কিংবদন্তির ৬৯তম জন্মদিনকে ঘিরে। সেখানেই স্বাধীনতা পদক বিজয়ী রুনা লায়লা তাঁর জীবনের নানা জানা-অজানা গল্পের ডালি মেলে ধরেন।
রুনা লায়লার ৬৯তম জন্মদিন সামনে রেখে বিশেষ এই সাক্ষাৎকারটি প্রচার হবে কাল সকাল ৭টায়, মাছরাঙা টেলিভিশনে।
রুম্মান রশীদ খান ও সিঁথি সাহার সঞ্চালনায় বিশেষ এই ‘রাঙা সকাল’-এ রুনা লায়লা জানান, সংগীতশিল্পী নয়, তাঁর হওয়ার কথা ছিল নৃত্যশিল্পী। টানা চার বছর করাচীর বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভরতনাট্যম, কত্থক, কথাকলি শেখেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত গানেই থেকে যান। গান গেয়েই বাংলাদেশের রুনা লায়লা ভারত, পাকিস্তানসহ উপমহাদেশের কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন।
‘রাঙা সকাল’–এর বিশেষ এই পর্বটি প্রযোজনা করেছেন জোবায়ের ইকবাল।
পাঁচ দশকের দীর্ঘ সংগীতজীবনে ১৭ ভাষায় ১০ হাজারেরও বেশি গান করেছেন রুনা লায়লা। অর্জন করেছেন উপমহাদেশের কোটি মানুষের ভালোবাসা। বাংলা ছাড়া রুনা লায়লা উর্দু, হিন্দি আর ইংরেজি ভাষা জানেন। তবে বাংলা, হিন্দি, উর্দু, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, গুজরাটি, পশতু, বেলুচি, আরবি, পারসিয়ান, মালয়, নেপালি, জাপানি, ইতালিয়ান, স্পেনিশ, ফ্রেঞ্চ ও ইংরেজি ভাষায় গান করেছেন তিনি।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। তাঁর বাবার নাম এমদাদ আলী ও মায়ের নাম আমিনা আলী। বাংলাদেশের সংগীতের কিংবদন্তি এই শিল্পী চলচ্চিত্র, পপ ও আধুনিক সংগীতের জন্য বিখ্যাত। দেশের বাইরে গজল গায়িকা হিসেবেও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে তাঁর সুনাম আছে। এ ছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের অনেক চলচ্চিত্রের গানেও তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন।