
গান কিংবা কোনো পেশাগত কাজে নয়, সুন্দরবনে তিনি গেছেন ভিন্ন উদ্দেশ্যে। প্রথমে শুধু বন্ধুদের নিয়ে তেল বিপর্যয়ের চিত্র দেখার জন্যই সেদিকে যাত্রা করেছিলেন আনুশেহ আনাদিল। কিন্তু এখন সুন্দরবনের ভেতর জয়মনি নামের একটি গ্রামের মানুষদের নিয়ে কাজ করছেন তিনি। হাতে নিয়েছেন দুই সপ্তাহের একটি প্রকল্প।
লম্বা সময় সুন্দরবনে কাটিয়ে আনুশেহ দুই দিনের জন্য ঢাকায় ফেরেন। গতকাল ঢাকার কাজ শেষে আবারও তিনি ফিরে যান সুন্দরবনে। আনুশেহ জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, তাঁর কাজের ক্ষেত্র হচ্ছে বিপর্যস্ত এলাকার মানুষ। তিনি জানান, তেল বিপর্যয়ের পর যখন ছড়িয়ে পড়া তেল বিক্রির সুযোগ আসে গ্রামবাসীর কাছে, তখন তেল সংগ্রহের উৎসাহ তাদের আরও বেড়ে যায়। কিন্তু তেল সংগ্রহ করতে গিয়ে স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয় অনেকের। সে সময় সুন্দরবনের গ্রামগুলোতে কোনো মেডিকেল টিমও ছিল না বলে জানান আনুশেহ। প্রথমে আনুশেহ ও তাঁর বন্ধুরা মিলে জয়মনি গ্রামে তেল সংগ্রহ করা পরিবার ও এর সদস্যদের একটি তালিকা করেন। এরপর তাঁরা শুরু করেন তাঁদের প্রকল্পের আরও একটি ধাপ। গ্রামবাসী তেলের বর্জ্য মাটিতে পুঁতে রাখছিল, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ছিল। আনুশেহ ও তাঁর বন্ধুরা ঘরে ঘরে গিয়ে সেই বর্জ্য মাটি থেকে তুলে বাঁশের তৈরি নির্দিষ্ট ঘরে সংরক্ষণ শুরু করেন। তিনি জানান, জমা করা বর্জ্য নিয়েও তাঁদের অন্য আরেকটি পরিকল্পনা রয়েছে।
দুই সপ্তাহের প্রকল্পটি তাঁরা ও বন্ধুরা নিজ উদ্যোগে শুরু করছেন বলে জানান এ সংগীতশিল্পী। তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধুরা অনেক আগে থেকে সুন্দরবনের সঙ্গে নানাভাবে নানা প্রকল্পের মাধ্যমে জড়িত। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পরই মূলত আমি সেখানে যাই এবং এ কাজের সঙ্গে যুক্ত হই। আসলে সেখানকার দৃশ্য না দেখলে পরিস্থিতির ভয়াবহতা সম্পর্কে আন্দাজ করা যাবে না।’ ব্যক্তি উদ্যোগ ছাড়াও আনুশেহ জানান, বন বিভাগ তাঁদের প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক সাহায্য করছে। পাশাপাশি ডলফিন প্রজেক্ট ও বাংলাদেশ পাইথন প্রজেক্টের মতো কিছু সংগঠনও অনেক সহায়তা করেছে আনুশেহ ও তাঁর বন্ধুদের। আনুশেহর বন্ধুদের আরেকটি দল বনের ভেতর বন্যপ্রাণি ও উদ্ভিদ নিয়ে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।