বাপ্পা মজুমদার
বাপ্পা মজুমদার

বাপ্পার একক কনসার্ট ও ১২ গান নিয়ে সিডি

কয়েক মাস বিরতির পর আবার একক কনসার্টে গাইবেন বাপ্পা মজুমদার। আজ শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার তেজগাঁওয়ের ইয়ামাহা মিউজিক লাউঞ্জে দুই ঘণ্টার আয়োজনে গাইবেন এই শিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য সুখবর, এদিন তাঁরা দীর্ঘ বিরতির পর প্রকাশিত হতে যাওয়া বাপ্পার নতুন অ্যালবাম প্রকাশের সাক্ষী হয়েও থাকবেন। ভার্টিক্যাল হরাইজন; সেই সময় এই সময়’ শিরোনামে সিডি আকারে নতুন অ্যালবামটি প্রকাশিত হবে।

বাপ্পা মজুমদার

‘ভার্টিক্যাল হরাইজন; সেই সময় এই সময়’ অ্যালবামে মোট ১২টি গান রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি গান পুরোনো, যেগুলো বাপ্পার ক্যারিয়ারের প্রথম দিককার গান বলা যায়। আর ৫টি গান নতুন সময়ের, কোনো না কোনোভাবে শ্রোতারা শোনার সুযোগ পেয়েছেন ইউটিউব কিংবা অন্য প্ল্যাটফর্মে। একটি গান একেবারে নতুন। তবে পুরোনো গানগুলোর নতুন সংগীতায়োজন করে এই অ্যালবামে রাখা হয়েছে।
বাপ্পা জানালেন, নতুনের পাশাপাশি পুরোনো গানের সংগীতায়োজন করেছেন একেবারে নতুনভাবে। ফলে নতুন আঙ্গিকেই গানগুলো পাবেন শ্রোতারা। অ্যালবামের প্রতিটি গানেরই সুর ও সংগীত বাপ্পার করা।

বাপ্পা মজুমদার

বেশ কয়েক বছর ধরে সিডি আকারে অ্যালবাম কেউ প্রকাশ করেন না। সবাই ইউটিউব বা অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে একটি করে গান প্রকাশ করেন। সেখানে সিডি আকারে অ্যালবাম প্রকাশের কারণ প্রসঙ্গে বাপ্পা বললেন, ‘এটা আমার অনেক দিনের ভাবনা। সেই ভাবনা থেকে সিডি আকারে অ্যালবাম প্রকাশ। এটা একধরনের পাগলামিও বলা যেতে পারে। বিষয়টা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতোও ব্যাপার। তারপরও নিজের ভেতরে একটা তাগিদ অনুভব করেছি। আমার মনে হচ্ছিল, মানুষের সঙ্গে গানের সম্পর্ক অনুজ্জ্বল হয়ে যাচ্ছিল। তাই অ্যালবাম প্রকাশের চিন্তা। সিডির আকারে অ্যালবাম প্রকাশের কারণ দুটি। প্রথমত, প্রযুক্তির যুগে আমরা স্পর্শের বাইরে চলে যাচ্ছি। গান এখন আর ব্যক্তিগত মনে হয় না, কারণ এখানে আর স্পর্শ নেই। সেই ক্যাসেট, সিডি কিনে আনা, হাত দিয়ে ধরে দেখার আবেগ নেই। গানপ্রেমীদের মধ্যে সিডি নিয়ে পুরোনো সেই অভ্যাস, সেই আবেগ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা সিডি। অন্য কারণ হলো, সিডিতে গানের সাউন্ডটা একদম ভালোভাবে পাওয়া যায়, যেটা অন্তর্জালে সম্ভব হয় না।’

বাপ্পা মজুমদার

নাম প্রসঙ্গে বাপ্পার মত হচ্ছে এ রকম, ‘ভার্টিক্যাল মানে লম্বালম্বি আর হরাইজন্টাল মানে পাশাপাশি। একটা সময়কে আসলে লম্বালম্বি এবং পাশাপাশি দুইভাবেই ধরার প্রচেষ্টা থেকে এই অ্যালবাম। তাই এমন নাম রাখা হয়েছে।’

বাপ্পা মজুমদার তাঁর অ্যালবামের প্রচ্ছদে লিখেছেন, ‘একটি অ্যালবাম, কতগুলো গানের একত্রে অবস্থান। ভিন্ন ভাবনা, ভিন্ন চিন্তা, ভিন্ন আইডিয়া অথচ সবগুলো গান এক হয়ে গড়ে তোলে এক অনন্য চরিত্র। আমার মতে, এটাই একটা অ্যালবামের মূল বৈশিষ্ট্য, যা আজ প্রায় আমাদের দেশে নেই বললেই চলে। অথচ সারা পৃথিবী যখন আবার অ্যালবামে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে, সেখানে আমরা ছুটছি পেছনে, আরও পেছনে, ছুটে চলছি ফ্রি আর সস্তার পেছনে! গানগুলো সেই অর্থে শ্রোতার সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারছে না, স্পর্শের সেই ব্যাপারটা যে নেই। হাতে করে অ্যালবাম কাভার নেড়েচেড়ে দেখার সেই রোমাঞ্চ হয়তো এই ব্যস্ত আর জটিল জীবনযাত্রায় বড় অপাঙ্‌ক্তেয়, কারও মতে কালক্ষেপণ মাত্র। ডিজিটাল জগতে স্পর্শের নেই কোনো স্থান, নেই কোনো বস্তুগত উপস্থিতি! স্পর্শ এখানে অর্থহীন। কিন্তু ভুলে গেলে হবে না, স্পর্শ আমাদের মনস্তাত্ত্বিক জগতে এক অবিচ্ছেদ্য অনুভূতি। স্পর্শ ছাড়া আমরা প্রায় অসম্পূর্ণ। সেই স্পর্শকে আরেকবার অনুধাবন, আমন্ত্রণ জানানোর জন্যই এ প্রয়াস। কিছু পুরোনো গানের সঙ্গে আনকোরা গানের একটি সংকলন করার জন্যই এ পাগলামি।’

একক কনসার্ট প্রসঙ্গে বললেন, ‘আমাদের একটা লাইনআপ তৈরি আছে। সেখানে নতুন গান, পুরোনো গান তো আছে পাশাপাশি উপস্থিত শ্রোতাদের অনুরোধে গান গাইব। এই আয়োজন বরাবরই চমৎকার, আশা করছি এবারও চমৎকার অভিজ্ঞতা হবে।’