Thank you for trying Sticky AMP!!

দুবাই বিমানবন্দরে হঠাৎ কেন প্রবাসীদের সঙ্গে নিজেই ছবি তুললেন কনকচাঁপা

কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। ছবি: প্রথম আলো

কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপার জীবনে ভক্তদের নিয়ে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। প্রতিবারই ভক্তদের কাছ থেকে শুনতে হয়েছে ছবি তোলার বায়না। তবে এবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার সময় দুবাই বিমানবন্দরে ভিন্ন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন তিনি। নিজেই দেশের তিন তরুণের সঙ্গে ফ্রেমবন্দী হন। কেন এই তরুণদের সঙ্গে নিজ থেকে ছবি তোলার জন্য এগিয়ে গেলেন কনকচাঁপা?

সেই অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে কনকচাঁপা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পরে দুবাই বিমানবন্দরে ৯ ঘণ্টার ট্রানজিট। এর মধ্যে লাউঞ্জের প্লাটিনাম কার্ড হারিয়ে ফেলে নাজেহাল অবস্থা। দুবাই নেমে বোকার মতো জবুথবু হয়ে ট্রলি ঠেলছি। সঙ্গে একগাদা জিনিস। দুই হাতে, কাঁধে এত বাক্সপেটরা যে মনে হচ্ছিল গ্রাম থেকে কাজ করার জন্য ট্রেনে করে ঢাকা আসছি। যা–ই হোক এর মধ্যেই হঠাৎ এক জোড়া চোখ আমাকে অনুসরণ করে সামনে এসে দাঁড়াল। আমাকে সালাম দিয়ে জানতে চাইল, “আপনি কনকচাঁপা কি না?” আমি হেসে বলি, হ্যাঁ আমি আমিই।’ দেশের তরুণদের দেখে কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন এই গায়িকা।

সেই সময় এই গায়িকা তরুণের জানান, তাঁর কাছে থাকা লাউঞ্জের প্লাটিনাম কার্ড হারিয়ে গেছে। সমস্যার কথা শুনে তরুণেরা এই গায়িকার পাশে দাঁড়ান। এই তরুণেরা দুবাই বিমানবন্দরে কাজ করেন।

প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে কনকচাঁপা

তাঁদের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়েছেন কনকচাঁপা। তিনি লিখেছেন, ‘আমার সব দুরবস্থার কথা শুনে বলল, “চিন্তা করবেন না আমরা ব্যবস্থা করছি।” আরও কয়েকজন তরুণ এসে গেল। তাদের বিস্ফারিত নয়নে শ্রদ্ধা–ভালোবাসা ঝরে পড়ছে দেখছিলাম। একটা জায়গায় আমাকে তারা বসাল। জায়গাটা মারহাবা লাউঞ্জের মতোই নির্জন। সেখানে আরাম করে বসলাম। পাশে নামাজের জায়গা আছে। না করতেও তারা অনেক খাবার, জুস, পানি এনে দিয়ে বলল, “আপনি কোনো চিন্তা করবেন না আমরা যথাসময়ে এসে একেবারে ফ্লাইটে উঠিয়ে দিয়ে আসব।”’

কনকচাঁপা ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরও লিখেছেন, ‘আমি বারবার বলছিলাম আমি পারব, আমাকে নিয়ে এত ব্যস্ত হওয়ার দরকার নেই। ওরা কিছুতেই নিশ্চিন্ত হতে পারছিল না। তারা আমার জন্য এটা–ওটা করবেই।’

কনকচাঁপা

সচরাচর দেখা যায়, দেখা হলেও ভক্তরা সবার আগে বায়না ধরে ছবি তোলার। কিন্তু দীর্ঘ সময় তরুণগুলো তাঁর পাশে থাকলেও একাবারও বলছিলেন না ছবি তুলবেন। কিন্তু কনকচাঁপাই কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা থেকে তাঁদের সঙ্গে ছবি তোলার কথা বলেন।

কনকচাঁপা স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘তোমরা আমার দেশের সোনার ছেলে। নিজেদের অজান্তেই দেশের জন্য অকাতরে কাজ করে দেশের উন্নতি করে যাচ্ছ। আজ আমিই তোমাদের সঙ্গে ছবি তুলব, এসো, দাঁড়াও। তোমাদের সঙ্গে একাত্মতা জানাতেই, তোমাদের ভালোবাসা জানাতেই, তোমাদের কৃতজ্ঞতা জানাতেই এই আমি কনকচাঁপা নিজেকে তোমাদের কাতারে দাঁড়াতেই কণ্ঠশ্রমিক পরিচয় দিতে ভালোবাসি। আমি তোমাদের ভালোবাসি, বাবা। আল্লাহ তোমাদের কাজ সহজ করে দিক, প্রবাসজীবন আরামের করে দিক। আশীর্বাদ বাবারা।’ সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘আজ এই মে দিবসে পৃথিবীর সমস্ত শ্রমিকদের জন্য রইল এই কণ্ঠশ্রমিকের হৃদয় থেকে উৎসারিত ভালোবাসা ও লাল সালাম ও মায়ের দোয়া।’

কনকচাঁপা।