Thank you for trying Sticky AMP!!

সালমান শাহ, নাঈম, ও আরেকটি ছবিতে একসঙ্গে শাবনাজ, চম্পা ও মৌসুমী। ছবি: কোলাজ

তখন কী করছিলেন সালমান শাহ? কোথায় ছিলেন শাবনাজের নাঈম

এক ছবিতে দুই প্রজন্মের জনপ্রিয় তিন তারকা। জনপ্রিয় অভিনেত্রী চম্পাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন সেই সময়ের আলোচিত দুই চিত্রনায়িকা শাবনাজ ও মৌসুমী। হাসিমুখে তাকিয়ে থাকা ছবিটির সময়কাল ১৯৯৩ সাল। নব্বই দশকের তিন তারকার এ ছবিটি যেন অনেক কথা বলে। তখন নাঈম–শাবনাজের প্রেম চলছে। অন্যদিকে একের পর এক অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পাচ্ছেন সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার জুটি সালমান শাহ ও মৌসুমী। তাঁদের বেশির ভাগ সময়ই একসঙ্গে দেখা যেত। কিন্তু ফ্রেমবন্দী হওয়ার মুহূর্তে কোথায় ছিলেন নাঈম? সালমান শাহ–ই বা কী করছিলেন?

স্থিরচিত্রটি নিয়ে কথা হয় ‘চাঁদনী’র চরিত্রে অভিনয় করে আলোচিত নায়িকা শাবনাজের সঙ্গে। কথার শুরুতেই বললেন, ‘তখন আমাদের মধ্যে দেখা হলেই আড্ডা জমত। সবার সঙ্গে এত ভালো বন্ধুত্ব ছিল, এখনো ভাবতেই ভালো লাগে। শুটিংয়ে কী মজা হতো, কারা কী কাজ করছে—সবকিছু নিয়েই কথা হতো। সিনিয়রদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারতাম। এই যে চম্পা আপার সঙ্গে বসে আছি। আপা খুবই মিশুক ছিলেন। খুবই আদর করতেন। অনেক খাওয়াতেন। আদর করে খাওয়াতে ভালোবাসতেন। সেই সুন্দর দিনগুলোতে সবার মধ্যে ভালো সম্পর্ক ছিল।’

ছবিতে শাবনাজ, চম্পা ও মৌসুমী। ছবি: শাবনাজের সৌজন্যে

নাঈম-শাবনাজ প্রথম মান্না ও চম্পার সঙ্গে অভিনয় করেন ‘সাক্ষাৎ’ সিনেমায়। সেই সিনেমার শুটিং থেকেই প্রথম চম্পার সঙ্গে শাবনাজদের বন্ধুত্ব। বয়সে সিনিয়র হলেও সম্পর্কটা ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। শাবনাজ বলেন, ‘চম্পা আপা অনেক মজা করে আড্ডা দিতেন। আর তিনি তো রান্না করতে খুবই পছন্দ করতেন। দেখা যেত প্রতিটা শুটিংয়ে গিয়েই রান্না নিয়ে মজার ঘটনা ঘটত। সেগুলো আমাদের বলতেন। তখন শুটিংয়ে গিয়ে অনেক ভালো সময় কাটত।’

নাঈম ও শাবনাজের অভিনয়ের শুরুটা এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী’ সিনেমা দিয়ে। সেই সময় এই জুটি ছিলেন একেবারে তরুণ। এমন তরুণদের ওপর ভরসা করে তখন অনেকেই লগ্নি করতে সাহস পেতেন না। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় ‘চাঁদনী’ সিনেমার জনপ্রিয়তার পর। হলে গিয়ে ভক্তদের চাপে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছে। একটি সিনেমা দিয়েই আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পান। তাঁরাও চাইছিলেন তরুণদের সংখ্যা বাড়ুক। সেই সূত্রেই ১৯৯২ সালে মৌসুমীর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়। সেদিন মৌসুমীদের আশীর্বাদ করতে গিয়েছিলেন শাবনাজরা। সেই থেকেই তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক।

ঢালিউড তারকাদের আয়োজনে খেলা হয়। ছবি: শাবনাজের সৌজন্যে

শাবনাজ বলেন, ‘আমি আর মৌসুমী সমসাময়িক। কিন্তু আমি মৌসুমীকে আগে থেকে চিনতাম না। নাঈম চিনত। “কেয়ামত থেকে কেয়ামত”-এর মহরতের দিন মৌসুমীর কথা শুনি। তখন এফডিসিতে আমাদের “চোখে চোখে” সিনেমার শুটিং হচ্ছিল। নাঈমকে বললাম চলো নতুন জুটির সঙ্গে দেখা করে আসি।’

সালমান শাহ আর মৌসুমীর জুটি নিয়ে শাবনাজ বলেন, ‘আমরা জানতাম না শুটিং শুরু হচ্ছে। আর আমরা খুব চাইতাম তরুণেরা মিডিয়ায় আসুক। আমাদের দল ভারী হোক (হাসি)। কারণ, বলতে গেলে আমাদের সমসাময়িক তেমন কেউ ছিল না। আমাদের দেখাদেখি আসা শুরু হচ্ছে। তো তাদের শুভকামনা জানাতে গিয়ে পাশেই যে ফুল ছিল, সেগুলো দিয়েই বরণ করে নিই।’
সেদিন তাঁদের কী বলেছিলেন—জানতে চাইলে শাবনাজ বলেন, ‘তাদের বলেছিলাম যখন যে সাপোর্ট লাগে আমরা পাশে আছি। অভিনয় দিয়ে তাদের চেষ্টা করতে হবে। তাদের একটি জায়গা তৈরি করতে হবে।’

শাবনাজ। ছবি: শাবনাজের সৌজন্যে

সেই থেকেই মৌসুমীর সঙ্গে পরিচয়। তাঁরা একে অন্যকে তুমি বলে সম্বোধন করতেন।
১৯৯৩ সালে এফডিসির প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পীদের খেলাকে কেন্দ্র করে স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন অনেক তারকা। এসব তারকার মধ্যে শাবনাজ, চম্পা ও মৌসুমী ফ্রেমবন্দী হন। তখন সবে সালমান শাহ ও মৌসুমীর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। শাবনাজ বলেন, ‘তখন দেশের বন্যা বা কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তহবিল সংগ্রহ করা হতো। এমন একটি আয়োজনে আমরা হাজির হয়েছিলাম। সেদিন অনেক ছবি উঠেছিলাম। আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন রাজীব ভাই। আর এ সময়ে আমাদের পাশেই ছিলেন সালমান শাহ। পরে দেখি সে ছবিতে নেই। তখন সালমান শাহ স্টেডিয়ামের ভক্তদের কাছে গিয়ে অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন। আমরা অতটা কাছে যাইনি। বসে খেলা দেখছিলাম। সবার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম। দিনটি এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে।’

সেদিন একাই স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন শাবনাজ। তাঁর সঙ্গে নাঈম না থাকায় অনেকেই জানতে চাইতেন, ‘নাঈম কোথায়?’ কারণ, সেই সময় দুজনের মন দেওয়া–নেওয়া চলছিল। শাবনাজ বলেন, ‘আমি আর নাঈম একসঙ্গে বেশির ভাগ জায়গায় যেতাম। বড় এই আয়োজনে আমি একাই গিয়েছিলাম। তখন জরুরি একটি কাজে দেশের বাইরে ছিল নাঈম।’

নাঈম ও শাবনাজ। ছবি: শাবনাজের সৌজন্যে