প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়

ভাষা বিতর্কে ট্রলের শিকার প্রসেনজিৎ, জবাব দিলেন ফেসবুকে

সিনেমার প্রচারণায় মুম্বাই গিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ‘মালিক’ শিরোনামে সেই ছবির সংবাদ সম্মেলনে বিপত্তির সূত্রপাত। মঞ্চে সিনেমাটির পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতার পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ। অনুষ্ঠানে একজন সাংবাদিক প্রসেনজিৎকে বাংলায় প্রশ্ন করেন। প্রসেনজিৎ পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘এখানে বাংলায় কেন প্রশ্ন করছেন?’ তার পর থেকে প্রসেনজিতের বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর চর্চা চলছে, ট্রলের শিকার হয়েছেন এই অভিনেতা। প্রশ্ন উঠেছে—বাংলায় কাজ করে বাংলা ভাষাকেই অপমান করলেন প্রসেনজিৎ?

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়

রীতিমতো তোপের মুখে পড়েন প্রসেনজিৎ। ভিডিও ক্লিপস ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বাংলাকে অপমান করার অভিযোগে শুরু হয় বিতর্ক। অবশেষে ঘটনাটি নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেতা। আজ বৃহস্পতিবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি লিখিত বক্তব্য প্রকাশ করেন। প্রসেনজিৎ তাঁর সেই লিখিত বক্তব্যে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হওয়াকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়

প্রসেনজিৎ লিখেছেন, ‘কিছুদিন হলো আমার একটা কথা, বলা ভালো একটা বাক্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেটা নিয়েই কিছু বলতে চাই। আমি ৪২ বছর মূলত বাংলায় কাজ করছি। গত কয়েক বছর জাতীয় স্তরে কয়েকটা কাজ করার সুযোগ এসেছে। সে রকমই একটা হিন্দি সিনেমার ট্রেলার মুক্তি উপলক্ষে ১ জুলাই মুম্বাইয়ের জুহু পিভি আর-এ সংবাদ সম্মেলন হচ্ছিল। মঞ্চে যাঁরা ছিলেন—ছবির পরিচালক, শিল্পী, অন্যরা, সবাই প্রথম থেকেই মূলত ইংরেজিতেই কথা বলছিলেন। বাংলার এক সাংবাদিক আমায় বাংলায় প্রশ্ন করেন। তিনি আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত। অত্যন্ত স্নেহের পাত্রী। কিন্তু সেই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছিল, বাংলায় উত্তর দিলে হয়তো অনেকেই সঠিক মানে বুঝতে পারবেন না। যেহেতু ওখানে বাংলা ভাষা বোঝেন না, এমন মানুষের সংখ্যাই অনেকটা বেশি। তাই খানিকটা বাধ্য হয়েই আমি ওনাকে বলি যে বাংলা ভাষায় কেন প্রশ্ন করছেন?’

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।

ফেসবুক বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘যেহেতু সামাজিক মাধ্যমে শুধু ওই একটা বাক্য তুলে দেওয়া হয়েছে, হয়তো অনেকে ওই কথার আক্ষরিক অর্থের সূত্রে আঘাত পেয়েছেন। কষ্ট আমিও পেয়েছি, এখনো পাচ্ছি। কারণ, ওই কথার এ রকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে, ভাবতেই পারিনি। হয়তো কয়েকটা ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে আমার বলা কথার উদ্দেশ্যটা আমি বোঝাতে পারিনি। আর আমার ধারণা, সেখান থেকেই ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। কারণ, নিজের মাতৃভাষাকে অসম্মান করার কথা আমি দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারি না।’

সবশেষে প্রসেনজিৎ লিখেছেন, ‘বাংলা আমার প্রাণের ভাষা, ভালোবাসার ভাষা। তবে চিরকাল আমার কাছে বাংলার মানুষের বিচার শিরোধার্য। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই ধারণা অটুট থাকবে। তবে শেষে যেটা না বললেই নয়, আমি এটুকু বুঝেছি, আমার বলা কথায় আপনাদের যথেষ্ট আঘাত লেগেছে, তাই আমি দুঃখিত। সম্পর্কে যেটুকু তথ্য বা আমার তখনকার ভাবনাটুকু আপনাদের জানালাম, ভালো থাকুন। নমস্কার।’