নতুন নেতৃত্ব পেল অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ। তিন বছর মেয়াদের এই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আজাদ আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন রাশেদ মামুন অপু
নতুন নেতৃত্ব পেল অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ। তিন বছর মেয়াদের এই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আজাদ আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন রাশেদ মামুন অপু

অভিনয়শিল্পীদের নির্বাচনে জিতলেন যাঁরা

নতুন নেতৃত্ব পেল অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ। তিন বছর মেয়াদের এই কমিটিতে ৩১০ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আজাদ আবুল কালাম। ৩৬৭ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন রাশেদ মামুন অপু। আজ শনিবার রাত সাড়ে আটটায় ভোটে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন নরেশ ভূইঁয়া ও ফারুক আহমেদ। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার খায়রুল আলম সবুজসহ অন্য কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।

নব্বই দশকের তুমুল জনপ্রিয় দুই অভিনয়শিল্পী তৌকীর আহমেদ ও আজিজুল হাকিম। তৌকীর দেশের বাইরে থাকেন, এবার এসেছেন দিন দশকে আগে। থাকবেন, আরও মাস দেড়েক। তিনিও এসেছিলেন ভোট দিতে। দেখা হয়ে গেল আজিজুল হাকিমের সঙ্গে। আড্ডায় মেতের ওঠার মুহূর্তটা এভাবে ক্যামেরাবন্দী করা হয়।

তিন বছর মেয়াদের এই কমিটির বিজয়ী অন্য সদস্যরা হলেন আজিজুল হাকিম, শামস সুমন ও ইকবাল বাবু (সহসভাপতি), রাজীব সালেহীন ও সুজাত শিমুল (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক), মাসুদ রানা মিঠু (সাংগঠনিক সম্পাদক), এম এ সালাম সুমন (অনুষ্ঠান সম্পাদক), সুচনা শিকদার (আইন ও কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক), মুকুল সিরাজ (প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক), আর এ রাহুল (তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক)। এর বাইরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মুহাম্মদ নুর এ আলম (অর্থ সম্পাদক), মাসুদ আলম তানভীর (দপ্তর সম্পাদক)।

ভোট প্রদান শেষে আড্ডায় মেতে ওঠেন অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা। তেমনি এক মুহূর্তে শতাব্দী ওয়াদুদ, চিত্রলেখা গুহ, বিজরী বরকতুল্লাহ ও ইন্তেখাব দিনার।

কার্যনির্বাহী পদে বিজয়ীরা হলেন এমরান হোসেন, জুলফিকার চঞ্চল, শিউলি আক্তার, এনায়েত উল্লাহ সৈয়দ, আবু রাফা মো. নাঈম, রেজাউল রাজু ও তুহিন চৌধুরী।
অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশের ভোটগ্রহণ উপলক্ষে আজ শনিবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে দিনভর বসেছিল তারার মেলা। বিভিন্ন বয়সী অভিনয়শিল্পীদের পদচারণে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল চিত্রশালা মিলনায়তন। নির্বাচনের জন্য বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। দুপুরে ছিল বিরতি। ত্রিবার্ষিক এই নির্বাচনে ২১ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৪০ জন প্রার্থী। ভোটার সংখ্যা ৬৯৯।

ইমতিয়াজ বর্ষণের তোলা সেলফিতে অভিনয়শিল্পী আয়শা মনিকা ও তানজিকা আমিন

এদিকে ভোটগ্রহণের দিন সকাল থেকেই সবার মাঝেই কৌতূহল; কে জিতবেন, কে হারবেন। ভোট দিয়ে দায়িত্ব শেষ, এমন মানসিকতা ছিল না কারও মধ্যে। বরং ভোট দেওয়ার পর দল বেঁধে শিল্পীদের আড্ডা দেওয়া ও গল্পে মেতে উঠতে দেখা গেছে। সকালের দিকে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। জ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পীদের পাশাপাশি তরুণ শিল্পীরাও ভোট উৎসবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। দিনব্যাপী সেই ভোট উৎসব তারকাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

ভোটকেন্দ্রে ঢোকার পথে দেখা হয় অভিনয়শিল্পী ফজলুর রহমান বাবুর সঙ্গে। প্রথম আলোর অনুরোধে ছবি তোলার জন্য পোজ দেন। তিনি বললেন, সবাই তো সবার মতো করে ব্যস্ত। এই দিনে সবার সঙ্গে দেখা হয়। একটা উৎসব উৎসব ব্যাপার সবার মধ্যে থাকে।

ভোট দিতে এসে মোশাররফ করিম বলেন, ‘এবারের নির্বাচনের পরিবেশটা একটু অন্য রকম। প্রতিবারের চেয়ে আলাদা। আমরা যাঁরা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের একটি বিশেষ দিন আজ। এখানে অনেকেই আমার খুব প্রিয়। কাকে রেখে কাকে ভোট দেব—ভাবনায় পড়ে যাই।’

নির্বাচন কমিশনার নরেশ ভূঁইয়া বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ অনেক সুন্দর ছিল, প্রার্থীরা সবাই বলছেন নির্বাচন একটি প্রক্রিয়া, এটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়। সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে আনন্দ নিয়ে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন।’

অভিনয়শিল্পী সংঘের ভোট গ্রহণের ফাঁকে ক্যামেরাবন্দী হন তাঁরা। এই স্থিরচিত্র রওনক হাসান পোস্ট করে লিখেছেন, ‘প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক—এক ফ্রেমে! চলছে অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশের নির্বাচনী উৎসব। অভিনয়শিল্পী ভোটারগণ সবাই চলে আসুন।’

এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে আজাদ আবুল কালামের সঙ্গে লড়েছেন আবদুল্লাহ রানা ও সাধারণ সম্পাদক পদে রাশেদ মামুন অপুর সঙ্গে লড়েছেন শাহেদ শরীফ খান। অভিনয়শিল্পী সংঘের বর্তমান সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম ও সম্পাদক রওনক হাসান এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি।