অভিনেত্রী প্রিয়াংকা প্রিয়া ও অভিনেতা শামীম হাসান সরকারের শুটিং সেটে সংঘটিত বাগ্বিতণ্ডা অভিযোগ নিয়ে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা অভিনয় অঙ্গনের নজর কেড়েছে। শুটিং সেটে প্রিয়াংকা প্রিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও দমন করায় অভিযোগ ওঠে শামীম হাসান সরকারের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি প্রিয়াংকা ধর্ষণের অভিযোগও এনেছিলেন শামীমের বিরুদ্ধে। বিষয়টি দ্রুত ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিনোদন অঙ্গনের অনেকেই এ বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন।
ঘটনার গুরুত্ব বুঝে ছোটপর্দার শিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ দুজনকেই ডেকে আলোচনা করে। অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে ওই কমিটি দুজনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে। আলোচনা শেষে প্রিয়াংকা ও শামীম নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। শামীম হাসান সরকার গালাগাল ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে ধর্ষণের অভিযোগ প্রিয়াংকার পক্ষ থেকে ঠিক হয়নি বলে জানানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সালিস শেষে শামীম জানান, ভবিষ্যতে কোনো সহশিল্পীর সঙ্গে এমন খারাপ ব্যবহার আর ঘটবে না। প্রিয়াংকাও বলেন, ‘অভিনয়শিল্পী সংঘকে না জানিয়ে বিষয়টি বাইরে নিয়ে আসা ঠিক হয়নি। আমার উচিত ছিল সংগঠনের সাহায্য নেওয়া।’
১০ বছর ধরে অভিনয়জগতে থাকা শামীম একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘সম্প্রতি প্রিয়াংকার সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি। আমি তাকে বকা দিয়েছি, গালি দিয়েছি। আমি লজ্জিত, দুঃখিত। এ রকম আচরণ ঠিক হয়নি।’ রাগ নিয়ন্ত্রণে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘অভিনয় শিল্পী সংঘ আমাকে সতর্ক করেছে। আমি তাদের কথা রেখেই কখনো এমন ঘটনা ঘটাতে চাই না।’
অন্যদিকে প্রিয়াংকা প্রিয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘শুটিংয়ের সময় আমার আচরণের কারণে শামীম রাগান্বিত হয়ে গালাগাল করেছেন। তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। ধর্ষণের অভিযোগ ভুল।’ তিনি বলেন, ‘নতুন হওয়ার কারণে আমি বিষয়টি ঠিকমতো বুঝতে পারিনি। সংগঠন এ সমস্যার সুন্দর সমাধান করেছে, ভবিষ্যতে কোনো জটিলতা হলে প্রথমেই সেখানে জানাব।’
এর আগে শামীম হাসান সরকারের বিরুদ্ধে গালিগালাজ ও নেশাদ্রব্য সেবনের অভিযোগও উঠেছিল। এই বিষয়গুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা ও চর্চা শুরু হয়। এরপর নিজেই ক্ষমা চেয়ে বিতর্কে থামানোর চেষ্টা করেন শামীম।
অভিনয় শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ তাদের অফিশিয়াল পেজে জানায়, শামীম হাসান সরকার সংগঠনের সদস্য হওয়ায় শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য তাঁকে শেষবারের মতো সতর্ক করা হলো। পুনরায় এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংগঠন গঠনতান্ত্রিক নিয়মে তাঁর সদস্যপদ বাতিল করতে পারে।
সংগঠন জানায়, দুজনের পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে একসঙ্গে এবং আলাদাভাবে কথা বলে একটি অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাঁরা উভয়েই অনুতপ্ত হয়েছেন এবং শিল্পমাধ্যমের মর্যাদা ক্ষুণ্নের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে শিল্পী ও দর্শক সবাই যেন সম্মিলিতভাবে একটি সুষ্ঠু ও সম্মানজনক শিল্পপরিবেশ গড়ে তুলতে পারেন, সেটাই প্রত্যাশা।