পূজার কেনাকাটার তালিকা তৈরি করতে গিয়ে কাঁদলেন চঞ্চল

চঞ্চল চৌধুরী
ছবি: ফেসবুক

শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এই উৎসব ঘিরে অন্যদের মতোই অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর পরিবারে বইছে খুশির হাওয়া। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটায় ব্যস্ত এই অভিনেতা। নিজ হাতেই এসব দায়িত্ব পালন করে থাকেন তিনি। এবারও কেনাকাটার তালিকা তৈরি করতে গিয়ে কাঁদলেন এই অভিনেতা।

বাবার সঙ্গে চঞ্চল চৌধুরী

চঞ্চল চৌধুরী তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘কিছুটা সামর্থ্য হওয়ার পর থেকেই প্রতিবছর পূজায় সবার আগে মা–বাবার জন্য নতুন পোশাক কেনা আমার জন্য ছিল সবচেয়ে বড় প্রশান্তির, সবচেয়ে বড় আনন্দের অভ্যাস। এবারও নিজ হাতে সবার জন্য নতুন কাপড় কেনার তালিকা তৈরি করতে গিয়ে প্রথমেই বাবার নামটা লিখে ফেলেছি। হঠাৎ মনে হলো, আরে…বাবা তো নেই। চুপ করে বসে থাকলাম অনেকক্ষণ। চোখের জল কোনোভাবেই বন্ধ করতে পারছিলাম না।’

চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক

গত বছর বাবাকে হারিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। জন্মের পর থেকে এই প্রথম বাবাকে ছাড়া কোনো দুর্গাপূজা পালন করছেন এই অভিনেতা। তাঁর বাবার জন্য কিছু কেনা না হলেও বাবার কিনে দেওয়া পোশাকগুলোর স্মৃতি তাঁকে আবেগপ্রবণ করেছে। সেই পোশাকের আলাদা ঘ্রাণ থাকত। কিন্তু সেই ঘ্রাণ এখন যেন আর পাওয়া যায় না। তিনি লিখেছেন, ‘বাবা বেঁচে থাকলে একটা কথা জিজ্ঞাসা করতাম, প্রথম যে বছর আমি দুর্গাপূজায় তোমার জন্য পাঞ্জাবি কিনে দিয়েছিলাম, সেই নতুন পাঞ্জাবির ঘ্রাণটা তোমার কাছে কেমন লেগেছিল বাবা? শুদ্ধ (চঞ্চল চৌধুরীর ছেলে)) কি পূজায় আমার কিনে দেওয়া নতুন শার্ট বা পাঞ্জাবিতে কোনো ঘ্রাণ খুঁজে পায়? যে ঘ্রাণ এখনো আমার নাকে, মুখে, সারা শরীরে লেপটে আছে।’

চঞ্চল চৌধুরী

শৈশবে একটা সময় অর্থনৈতিক টানাপোড়েন দেখতে হয়েছে চঞ্চল চৌধুরীকে। পূজা ছাড়া বছরের বেশির ভাগ সময় নতুন পোশাক পড়ার তেমন সুযোগ হতো না। এই স্মৃতি স্মরণ করে তিনি লিখেছেন, ‘সারা বছর তেমন নতুন পোশাক আমাদের কপালে জুটত না। কঠিন দারিদ্র্যতার ভেতরেও পূজার সময় বাবা সাধ্যমতো চেষ্টা করতেন সব ভাইবোনকে নতুন কাপড় কিনে দেওয়ার। সারা বছরে একমাত্র এ পূজাতেই আমাদের সৌভাগ্য হতো নতুন পোশাক পরার।’