
এবার দায়িত্ব মনে করে ভোলাবাসীর পাশে দাঁড়ালেন অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব। তিনি মনে করেন, ভোলাবাসী দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াত নিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তিনি নিজেও এর ভুক্তভোগী। চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসহ মানবিক বহু সমস্যা সমাধান দরকার। যে কারণে ‘ভোলা-বরিশাল সেতু চাই’ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম পোষণ করেছেন এই অভিনেতা।
ভোলার দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মেঘনা পাড়ে এই অভিনেতা বাড়ি। তিনি শৈশব থেকেই এই গ্রামের নানা প্রতিকূল অবস্থা দেখেছেন। যে কারণে তিনি দাবির পক্ষে। তৌসিফ বলেন, ‘আমার গ্রামের অধিকাংশই মেঘনা নদীর তলে চলে গিয়েছে। এই ভাঙনসহ অনেক কিছু ভুক্তভোগী আমার পরিবার, পূর্বপুরুষসহ আমি নিজেও। যখনই আমি ভোলা যাই আমাকে লঞ্চে করে যেতে হয়। এই জন্য দীর্ঘ একটা পরিকল্পনা করতে হয়।’
এই অভিনেতা তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘প্রায় ২০ লাখ মানুষের ভোলা জেলাটি বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ। যেখানে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলো লঞ্চ বা জলযোগ। নেই কোন উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা কিংবা শিক্ষাব্যবস্থা। সেই ভোলা বরিশাল সেতুর দাবিতে, আমাদের ভাইয়েরা ভোলার শেষ প্রান্ত চরফ্যাশন থেকে পায়ে হেঁটে পথিমধ্যে তেঁতুলিয়া নদী পার হয়ে পদ্মা সেতু পর্যন্ত আসে। কর্তৃপক্ষ থেকে পদ্মা সেতু পার হওয়ার পারমিশন না পেয়ে, বাংলাদেশের সবচেয়ে খরস্রোতা পদ্মা নদীতে এই শীতের মধ্যে সাঁতার কেটে পাড়ি দেয়। এখন তারা ৮ দিন ধরে ঢাকায়, দাবি আদায়ের জন্য।’
তৌসিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে আমাদের অনেক ভুগতে হয়। আমাদের জেলায় মানসম্মত হাসপাতাল নেই। আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সবাই মনে করে, বরিশাল বড় একটা হাসপাতাল রয়েছে। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে মানুষ ঠিকমতো চিকিৎসা নিতে পারে। কিন্তু যোগাযোগের সুযোগ-সুবিধা নাই। বিভিন্ন সময় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে অনেকের প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটেছে।’
তৌসিফ জানান, শুধু ভোলাই নয়। এমন পরিস্থিতি দেশের বিভিন্ন জেলায় রয়েছে। বর্তমান এই সময়ে এসে দেশের সবার নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি। তিনি বলেন, ‘ভোলাবাসী তথা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের এই যৌক্তিক দাবির সমর্থন করছি। পাশাপাশি সরকারের প্রতি আবেদন যেন এই যৌক্তিক দাবিটি মেনে নেওয়া হয়। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা-আকাঙ্ক্ষার এই সেতু শুধু দুই অঞ্চলের নয়, বরং সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের স্বপ্ন বহন করে।’