অপূর্ব
অপূর্ব

অপূর্বর পারিবারিক মুহূর্তের ভিডিওর বিকৃত প্রচারণা, আইনি পদক্ষেপ

অভিনেতা অপূর্বর ব্যক্তিগত জীবনের একটি সুন্দর মুহূর্তকে বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নানা ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্যসহ। বিষয়টি নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ইউনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশের অভিযানে ইতিমধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে, বাকিদের ধরতে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানালেন এই অভিনেতা।  
অপূর্বর অভিযোগ, কিছু ভুঁইফোড় ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ তাঁর শেয়ার করা একটি পারিবারিক মুহূর্তকে ব্যবহার করে মিথ্যা গল্প বানিয়েছে, ভুয়া শিরোনাম দিয়েছে এবং দর্শক টানার জন্য তা ভাইরাল করেছে। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি তাঁর পরিবারকেও অপমান করা হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত ৭ মাস যুক্তরাষ্ট্রে থাকার পর দেশে ফেরার দিন থেকে। দেশে ফিরে প্রথমেই তিনি ছুটে যান ছেলে জায়ান ফারুক আয়াশের কাছে। গভীর ঘুমে থাকা ছেলেকে স্নেহমাখা স্পর্শে জাগিয়ে দেন বাবা। প্রিয় মানুষকে সামনে দেখে আবেগে ভেসে ওঠে আয়াশ, খুশির কান্নায় বাবাকে জড়িয়ে ধরে। বাবা-ছেলের এই নিখাদ ভালোবাসার মুহূর্তটি অপূর্ব নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। গত ৫ আগস্ট বেলা ১টা ৫১ মিনিটে প্রকাশিত এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটি প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার রিঅ্যাক্ট হয়, মন্তব্য জমা হয় ৩ হাজারের বেশি। শেয়ার হয়েছে ২ হাজার। তবে কেউ কেউ এ ভিডিওর অপপ্রচার করে এবং ঘটনার বিকৃত উপস্থাপন করে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) দেওয়া দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে অপূর্ব লেখেন, ‘কিছু মানুষের সত্য-মিথ্যার বোধ নেই, ন্যূনতম সম্মানবোধও নেই। কিছু মানুষের গসিপ আর মিথ্যার কারখানা সমাজকে বিষাক্ত করে। আর কিছু গড়পড়তা মানুষ যাচাই না করেই শেয়ার করেন, রিঅ্যাক্ট দেন, ভুল বিচার করেন। সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের ভালোবাসা নিয়েও চলে নোংরা বিচার ও আজেবাজে মন্তব্য—এটা শুধু লজ্জাজনকই নয়, চরম অমানবিকও।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘যাদের পরিবার তাদের ভেতর কোনো মূল্যবোধ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে, যাদের সমাজ মানবিকতা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে—তাদের কাছে কোনো জ্ঞান দিয়ে লাভ নেই। যাদের মস্তিষ্ক ও হৃদয়ে নেগেটিভিটির ক্যানসার, তাদের কাছে মা-বাবার ভালোবাসা প্রমাণ করার দরকার নেই। প্রতিটি বাবা-মায়ের কাছে তাঁর সন্তান জীবনের সবচেয়ে বড় অংশ। সন্তানের প্রতিটি হাসি, প্রতিটি কান্না, প্রতিটি অর্জন তাঁরা হৃদয়ে অনুভব করেন। সন্তানের হাসি-কান্না ও অনুভূতি পিতা-মাতার প্রতিটি দিনকে করে তোলে উজ্জ্বল ও অর্থবহ।’

জিয়াউল ফারুক অপূর্ব

অপূর্ব কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন তাঁদের, যারা পিতা-পুত্রের ভালোবাসার মধ্যেও নোংরা ইঙ্গিত খুঁজেছেন।

তাঁর ভাষায়, ‘কিছু নীচ মানসিকতার মানুষ এতটাই নীচ যে পিতা-পুত্রের গভীর ভালোবাসার মধ্যেও অন্য কিছু খোঁজার চেষ্টা করেছে।’ সন্তান ও পরিবারের নামে এমন অপপ্রচার চালানো হয়েছে মন্তব্য করে অপূর্ব লিখেছেন, এই সব হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ইউটিউব চ্যানেল ও পেজ সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাকেও কলঙ্কিত করছে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে তিনজনকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে এবং বাকিদেরও শিগগিরই ধরা হবে। এ জন্য বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে ধন্যবাদ জানিয়ে অপূর্ব লেখেন, ‘সবাই মিলে একটা সুস্থ সমাজ গড়ে তুলি, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিই। সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। যাঁরা আমাদের ভালোবাসা ও সমর্থন দিয়ে পাশে আছেন, আপনাদের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা ও অশেষ কৃতজ্ঞতা।’
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য দর্শকপ্রিয় নাটক ও টেলিফিল্ম উপহার দিয়েছেন অপূর্ব। অভিষেকের পর থেকেই তিনি তাঁর অভিনয়গুণ, ব্যক্তিত্ব ও পরিশীলিত নির্বাচনের জন্য শুধু দর্শকের কাছেই নয়, নির্মাতাদের কাছেও আস্থার প্রতীক হয়ে আছেন। নাটকের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিওতেও নিয়মিত কাজ করেছেন তিনি। ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও সফলভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন।
৩১ জুলাই ক্যাপিটাল ড্রামা ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পেয়েছে অপূর্ব অভিনীত ‘দেরি করে আসবেন’ নাটকটি। মুক্তির পর থেকে চার মিলিয়নের বেশি ভিউ পেয়েছে নাটকটি এবং দর্শকের প্রশংসায় ভাসছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের স্টোরি ও রিলসেও নাটকের নানা দৃশ্য ঘুরছে, বিশেষ করে অপূর্বর সংলাপ ও আবেগঘন মুহূর্তগুলো আলাদা করে সাড়া ফেলেছে। সমালোচকেরাও তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন।