‘কিটো ভাই’, অর্থাৎ মাসরুর রাব্বি ইনান আবার আসছেন টেলিভিশনের পর্দায়
‘কিটো ভাই’, অর্থাৎ মাসরুর রাব্বি ইনান আবার আসছেন টেলিভিশনের পর্দায়

কিটো ভাই এবার ‘নাপতা’

করোনাকালে উকুলেলে হাতে, মুখে হাসি নিয়ে বরিশালের ভাষায় গান গেয়ে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিলেন তিনি। ‘এ গেদু, সমেস্যা কী?’—এই গান দিয়ে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সচেতনতার বার্তা, মানুষকে হাসিয়েছিলেন, আশাও জুগিয়েছিলেন। সেই ‘কিটো ভাই’, অর্থাৎ মাসরুর রাব্বি ইনান আবার আসছেন টেলিভিশনের পর্দায়, অভিনয়শিল্পী হিসেবে। তাঁকে দেখা যাবে ‘নাপতা’ নাটকে, মূল ভূমিকার অভিনয় করেছেন তিনি।
বরিশালের আঞ্চলিক শব্দ ‘নাপতা’—অর্থাৎ নাপিত—এই শব্দটিকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে বিশেষ নাটক ‘নাপতা’। গল্প ও পরিচালনায় আছেন রাহাত মোহাম্মদ। প্রায় ৪০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই নাটকে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মাশরুর ইনান, যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিত ‘কিটো ভাই’ নামে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৪০ মিনিট দৈর্ঘ্যের ‘নাপতা’ নাটকটি শিগগিরই চ্যানেল আইয়ের টেলিভিশন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে।

বরিশালের মাটির গন্ধ, হাস্যরস, প্রেম ও রাজনীতি মিশিয়ে তৈরি এই নাটক দর্শকদের কাছে নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেবে বলে আশা নির্মাতার।

মাশরুর ইনান

ভাইরাল থেকে অভিনয়ের মঞ্চে
‘কিটো ভাই’ পরিচিতি পেয়েছিলেন করোনার সময়। বরিশালের ভাষায় তৈরি তাঁর হাস্যরসাত্মক ভিডিও ও গানে যেমন হাসি ছিল, তেমনি সচেতনতার বার্তাও। ‘কিটো স্টে হোম সং’, ‘কিটো হ্যাপি সং’, ‘সুপার হিরো সং’—এ গানগুলো তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়। সেই সময় থেকেই দর্শক তাঁকে চিনে নেয় এক আশাবাদী তরুণ মুখ হিসেবে। সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়িয়ে এবার তিনি পা রাখছেন টেলিভিশন নাটকে। নিজস্ব ভাষার মজা, অভিনয়ের স্বতঃস্ফূর্ততা আর স্বাভাবিক হাস্যরস দিয়েই দর্শককে আবারও মুগ্ধ করতে চান তিনি।

গ্রামের মাঠ, ফুটবল আর নাপিতের গল্প
‘নাপতা’র গল্পে দেখা যাবে বরিশালের এক গ্রামের জীবন। গ্রামজুড়ে চলছে ফুটবল খেলার উৎসব। খেলোয়াড়দের স্টাইলিশ চুল কাটার দায়িত্ব পড়ে স্থানীয় নবাবী সেলুনের নাপিত সিরাজের হাতে—যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইনান। চুল কাটায় যেমন পারদর্শী, তেমনি গ্রামজীবনের নানা বিষয়ে তার মতামতও গুরুত্বপূর্ণ। ধীরে ধীরে সিরাজ হয়ে ওঠে গ্রামের প্রভাবশালী এক মুখ। কিন্তু জনপ্রিয়তাই একদিন কাল হয়ে দাঁড়ায়। স্থানীয় চেয়ারম্যান তার সেলুনে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর শুরু হয় এক সাধারণ নাপিতের সংগ্রামের গল্প—অপমান, প্রতিশোধ আর টিকে থাকার লড়াই।

পরিচালক রাহাত মোহাম্মদ বলেন, ‘“নাপতা” আসলে এক গ্রামের প্রতিচ্ছবি। গ্রামের এক সাধারণ মানুষ কীভাবে জনপ্রিয়তা পেলে ক্ষমতার মানুষদের চোখে হুমকি হয়ে ওঠে—সেই গল্পই বলতে চেয়েছি। তবে গল্পের ভেতর কোনো ভারী বার্তা নয়, বরং মানবিক হাস্যরস ও জীবনঘনিষ্ঠ বাস্তবতা।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিটো ভাই এই চরিত্রে একেবারে অন্য রকম। তিনি শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার কৌতুকনির্ভর মুখ নন, তাঁর মধ্যে দারুণ অভিনয়ক্ষমতা আছে। দর্শক তাঁকে নতুনভাবে দেখবেন।’ জানা গেছে, ‘নাপতা’ নাটকের চিত্রগ্রহণ, লোকেশন ও পোশাক—সবকিছুতেই রাখা হয়েছে বরিশালের আঞ্চলিক রং। সংগীত পরিচালনা করেছেন ব্যান্ড ‘শহরতলি’র সদস্য সাদি মোহাম্মদ। পরিচালক বলেন, ‘আমরা চাই দর্শক যেন নাটক দেখে বরিশালের গন্ধটা অনুভব করতে পারেন—ভাষায়, সংগীতে, পোশাকে।’

সূত্র: চ্যানেল আই