পাঠক হাজির

আমার হৈমন্তী

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

‘ভারি একখানি সাদাসিধা মুখ, সাদাসিধা দুটি চোখ কিন্তু সমস্তটি লইয়া কী যে মহিমা সে আমি বলিতে পারি না’—এই লাইনগুলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখে না গেলে বেশ বিপদে পড়তাম। রবীন্দ্রনাথ আমার মতো অভাজনের বেশ উপকার করেছেন। নীলিমার কথা বলতে গেলে হৈমন্তীর কথাই বলতে হয় আমাকে। মেয়েটার সবকিছুই সাদাসিধে। তারপরও কেন যেন ভালো লাগে। নিষ্পাপ চেহারাটা কারণ সম্ভবত।
ওর আর আমার রোল নম্বর পাশাপাশি হওয়ায় প্রায় সব সেশনেই এক গ্রুপে পড়ে যাই। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিই সে জন্য। স্যাররা আলাদা করে প্রতিটি গ্রুপকে কাজ বুঝিয়ে দেন, আমি ওর পাশে দাঁড়িয়ে মাথা নেড়ে সেগুলো বোঝার ভান করি। ল্যাবে এক-আধটু ‘বুঝিনি, বুঝিয়ে দে’ গোত্রের কথাবার্তা ছাড়া তেমন কিছুই হয় না কখনো। তারপরও উপভোগ করি ওর পাশে দাঁড়িয়ে থাকার দুর্লভ মুহূর্তগুলো। তলস্তয়ের আন্না কারেনিনার মতো নীলিমাও এমন এক মেয়ে, যার সঙ্গে কথা বলা আর পাশে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা, দুইই আমার জন্য সমান আনন্দের।
তবে আনন্দের দিনগুলো শেষ হয়ে আসছে। ওর পাশে দাঁড়িয়ে আর ল্যাবের কাজ বোঝা হবে না, একসঙ্গে ‘অপটিমাম ওয়াটার কনটেন্টে’ মাটির স্যাম্পল তৈরি করা হবে না। কাঁটাবন মোড়ে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে গাড়ি গোনার দিনগুলো শেষ হয়ে গেল কত দ্রুত। ভাবতেই অবাক লাগে। চার বছর কী দ্রুতই না চলে গেল!
খিলগাঁও, ঢাকা