Thank you for trying Sticky AMP!!

সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়া ৫ চিত্রকর্ম

৫০০ বছরের পুরোনো চিত্রকর্ম ‘সালভাতোর মুন্ডি’ নিয়ে আলোড়ন পড়ে গেছে গোটা বিশ্বে। ধারণা করা হচ্ছে, যিশুখ্রিষ্টের মুখের চিত্রকর্মটি এঁকেছিলেন ইতালিয়ান রেনেসাঁর কালজয়ী শিল্পী লেওনার্দো দা ভিঞ্চি। গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ছবিটির নিলামে দাম উঠেছে ৪৫ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৭৬১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা)। এযাবৎকালে সবচেয়ে বেশি দাম দিয়ে চিত্রকর্মটি যিনি কিনেছেন, তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি। টেলিফোনের মাধ্যমে নিলামে অংশ নিয়ে মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে চিত্রকর্মটি কিনে ফেলেন সেই ব্যক্তি।
আসুন, জেনে নিই এমন ৫টি চিত্রকর্ম সম্বন্ধে, নিলামে যেগুলো বিকিয়েছে সবচেয়ে বেশি দামে:

ভিঞ্চির আঁকা ‘সালভাতোর মুন্ডি’। এটাই এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামি চিত্রকর্ম। ছবি: উইকিপিডিয়া


সালভাতোর মুন্ডি
মাত্র ২০ মিনিট স্থায়ী নিলামে আগের সব রেকর্ড ভেঙে দেয় ‘সালভাতোর মুন্ডি’। নিলাম সংস্থা ‘ক্রিস্টিজ’ কিছুদিন আগে ভিঞ্চির আঁকা এ ছবিটি নিলামে তুলেছিল। নিলামঘরে উপস্থিত ক্রেতাদের সঙ্গে ফোনেও সংযুক্ত ছিলেন চার আগ্রহী ক্রেতা। ফোনের সেই চার ক্রেতার মধ্য থেকে শেষ পর্যন্ত একজন ছবিটি কিনেছেন ৪৫ কোটি ডলারে! বিশ্লেষকদের ধারণা, ১৫০৫ সালের কিছু পরে ছবিটি এঁকেছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ভিঞ্চি। অনেক দিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকার পর ২০০৫ সালে ছবিটি প্রকাশ্যে এলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। ২০১৩ সালে ছবিটি ১২ কোটি ৭৫ লাখ ডলারে কিনে নেন রুশ সংগ্রাহক এবং ফুটবল ক্লাব এএস মোনাকোর মালিক দিমিত্রি রাইবলোভেলভ। নিলামে হাতবদল করে ছবিটিকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি চিত্রকর্মের মর্যাদা দিয়েছেন এক অজ্ঞাত ব্যক্তি।
ইতিহাস গড়া এই ছবিটি যিশুখ্রিষ্টের। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি এক হাত তুলে রয়েছেন (আশীর্বাদ দেওয়ার ভঙ্গি) এবং অন্য হাতে একটি স্ফটিকের গোলক। ‘সালভাতোর মুন্ডি’—শব্দের অর্থ ‘বিশ্বের পরিত্রাতা’।

উইলিয়াম ডি কুনিংয়ের আঁকা বিমূর্ত ছবি ‘ইন্টারচেঞ্জ’। ছবি: উইকিপিডিয়া


ইন্টারচেঞ্জ
ডাচ-আমেরিকান বংশোদ্ভূত শিল্পী উইলিয়াম ডি কুনিং ছিলেন বিমূর্ত ছবির কবি। ১৯৫৫ সালে তাঁরই আঁকা বিমূর্ত তৈলচিত্র ‘ইন্টারচেঞ্জ’ ইতিহাস গড়ে ৬০ বছর পর। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ডেভিড গেফেন ফাউন্ডেশনের নিলামে তোলা হয় ছবিটি। বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ‘সিটাডেল’-এর প্রতিষ্ঠাতা কেনেথ সি গ্রিফিন ছবিটি কিনে নেন ৩০ কোটি ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৫১১ কোটি টাকা)। ভিঞ্চির ‘সালভাতোর মুন্ডি’ নতুন ইতিহাস গড়ার আগ পর্যন্ত এটাই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামি চিত্রকর্ম।

‘দ্য কার্ড প্লেয়ার্স’ চিত্রকর্মে বাগানের মালি আর এক কৃষকের প্রতিরূপ এঁকেছিলেন শিল্পী পল সেজান। ছবি: উইকিপিডিয়া


দ্য কার্ড প্লেয়ার্স
চিত্রকলায় প্রতিচ্ছায়াবাদের বিপক্ষে যে কয়জন শিল্পী এঁকেছেন, পল সেজান তাঁদের অন্যতম। ১৮৯২ থেকে ১৮৯৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ‘দ্য কার্ড প্লেয়ার্স’ নামে পাঁচটি তৈলচিত্র নিয়ে সিরিজ নির্মাণ করেছিলেন ফরাসি এ চিত্রশিল্পী। সেজানের এই চিত্রকর্মকে ধরা হয় ১৮৯০ দশকের ‘ভিত্তি’ হিসেবে। ‘তাস খেলোয়াড়েরা’ ছবিতে সেজান মডেল হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তাঁর বাগানে মালি আর এক কৃষককে। ছবিতে দেখা যায়, পাথুরে মুখ নিয়ে দুই ব্যক্তি তাস খেলছেন। ২০১১ সালে কাতারের রাজপরিবার এ ছবিটি ২৬ কোটি ৬০ লাখ ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১৭৬ কোটি টাকার বেশি) কিনে নেয়।

তাহিতি দ্বীপের দুই নারী। এঁকেছেন পল গঁগ্যা। ছবি: উইকিপিডিয়া


হোয়েন উইল ইউ ম্যারি?
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পল গঁগ্যাকে চিত্রশিল্পী হিসেবে কেউ সেভাবে মূল্যায়ন করেনি। কিন্তু ১৯০৩ সালে ফরাসি ‘পোস্ট-ইমপ্রেশনিস্ট’ এই শিল্পীর মৃত্যুর পরই তাঁর কদর বেড়ে যায়। ১৮৯২ সালে অমর তৈলচিত্র ‘নাফেয়া ফা ইপোইপো’ (হোয়েন উইল ইউ ম্যারি) ছবিটি আঁকেন গঁগ্যা। এ ছবিতে তিনি তাহিতি দ্বীপের দুই নারীর প্রতিমূর্তি অঙ্কন করেন। ১৮৯১ সালে প্রথমবারের মতো তাহিতি দ্বীপে গিয়ে এই ছবির রসদ জোগাড় করেছিলেন গঁগ্যা। ২০১৪ সালে সুইস ব্যবসায়ী রুডলফ স্টায়েচলিনের কাছ থেকে নিলামে ২১ কোটি ২০ লাখ ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭৫৭ কোটি টাকার বেশি) ছবিটি কিনে নেয় কাতারের রাজপরিবার।

জ্যাকসন পোলকের বিমূর্ত চিত্র। কাঠের তন্তুর ওপর ছবিটি এঁকেছিলেন তিনি। ছবি: উইকিপিডিয়া


নাম্বার ১৭এ
বিমূর্ত ছবির জগতে জ্যাকসন পোলক বেশ সমীহ জাগানিয়া নাম। মাত্র ৪৪ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় পৃথিবীর মায়া কাটানো এই চিত্রশিল্পী ১৯৪৮ সালে ‘নাম্বার ১৭এ’ ছবিটি এঁকেছিলেন। কাঠের তন্তুর ওপর আঁকা এই তৈলচিত্রটি ২০১৫ সালে ২০ কোটি ২০ লাখ ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬৭৪ কোটি টাকার বেশি) কিনে নেন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ‘সিটাডেল’-এর প্রতিষ্ঠাতা কেনেথ সি গ্রিফিন। পল গঁগ্যার আঁকা তাহিতির নারীরা ইতিহাস গড়ার আগ পর্যন্ত জ্যাকসনের এ ছবিটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামি চিত্রকর্ম।