জাতিসংঘ পার্কে সুইমিংপুল ও ব্যায়ামাগার নির্মাণ প্রকল্প

এক বছর মেয়াদের কাজ শেষ হয়নি তিন বছরেও

জাতিসংঘ পার্কে দুটি সুইমিংপুল নির্মাণ করা হলেও প্রকল্পের অন্যান্য কাজ শেষ না হওয়ায় সেগুলো এখনো চালু হয়নি l প্রথম আলো
জাতিসংঘ পার্কে দুটি সুইমিংপুল নির্মাণ করা হলেও প্রকল্পের অন্যান্য কাজ শেষ না হওয়ায় সেগুলো এখনো চালু হয়নি l প্রথম আলো

নগরের জাতিসংঘ পার্কে সুইমিংপুল ও ব্যায়ামাগার নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল এক বছর। এরপর আরও দুই দফা সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ সময় ধরা হয় ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু কাজ এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যে ব্যয় বেড়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।
এই প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হতে কমপক্ষে আরও তিন থেকে ছয় মাস লাগবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম। আর্থিক সংকটের কারণে প্রকল্পকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুইমিংপুল ও ব্যায়ামাগারের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ। আশপাশে সিটি করপোরেশনের কোনো নিরাপত্তারক্ষীকে দেখা যায়নি। ফলে ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। তারপরও বাইরে থেকে দেখা যায়, ফটকের ভেতরে দুটি সুইমিংপুলের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের নথিপত্র থেকে জানা যায়, নগরের পাঁচলাইশ এলাকার জাতিসংঘ পার্কের প্রায় এক একর জায়গার ওপর দুটি সুইমিংপুল ও একটি ব্যায়ামাগার নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়। তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম ২০১২ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর করেছিলেন। প্রথমে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। প্রকল্পের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জে জে ট্রেডার্স। করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথমবার সময় ধরা হয় ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর আবার ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা বাড়ানো হয়। বর্তমানে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকায়।
জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জে জে ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানকে দুটি সুইমিংপুল নির্মাণ ও সেখানে হাঁটাপথ নির্মাণ এবং একটি ব্যায়ামাগার স্থাপনের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর করা হলেও ভৌত কাজ শুরু হয় পরের বছর এপ্রিল-মে মাসের দিকে। ২০১৪ সালের অক্টোবরের দিকে কার্যাদেশ অনুযায়ী প্রকল্পের অবকাঠামোর কাজ সম্পন্ন হয়। এরপর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানোর জন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, সুইমিংপুলের জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন ও নালা নির্মাণের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। গত জুনে এসব কাজও শেষ হয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতির ব্যাপারে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আনোয়ার হোছাইন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম সম্প্রতি তাঁর কার্যালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, সুইমিংপুল ও ব্যায়ামাগারের নির্মাণকাজ শেষ হলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গ্যালারি, রেস্ট হাউস ও টি কর্নার নির্মাণ। এ ছাড়া ব্যায়ামাগারের জন্য যন্ত্রপাতিও স্থাপন করা হবে সেখানে। এসব কাজ শেষ করতে কমপক্ষে তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগবে। এসব কাজ শেষ হলে সুইমিংপুল ও ব্যায়ামাগার চালু করা হবে। এরপর তা পরিচালনার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।