খোঁজখবর

কোথায় পাবেন তামা-কাঁসার তৈজসপত্র

কৃতজ্ঞতা: শিমুলিয়া কাঁসা–পিতল ঘর
ছবি: নকশা

তামা, কাঁসা ও পিতলের সাদৃশ্য অনেক। তবে কাঁচমাল আলাদা। কাঁসা তৈরি হয় তামা ও টিনের মিশেলে। দস্তা আর তামা গলিয়ে বানানো হয় পিতল। পুরোনো যুগে শুধু জমিদারবাড়ির শোভা ছিল না এসব ধাতব তৈজসপত্র। কাঁসা, পিতল ও তামা ছিল নিত্যব্যবহার্য। এমনকি উপহার হিসেবেও দামি ছিল এগুলো।

পূজা–পার্বণ বা বিয়ের উৎসবে এখনো পিতল, কাঁসা ও তামার ব্যবহার দেখা যায়।

তামার পাত্র, রুপার অলংকার, দেবমূর্তির পট, রেশমের কাপড়, ছেলেদের খেলার জন্য কাঠের ডমরু, মাটির পুতুল, পাতার বাঁশি, অর্ঘ্যের উপকরণ, ফল মালা ধূপ বাতি, ঘড়া ঘড়া তীর্থবাড়ি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘প্রথম পূজা’ কবিতায় কার্তিকের পূজায় তামাপাত্রের ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেন। পূজার নানা আয়োজনে ব্যবহারের পাশাপাশি শখ করেও ঘরে তামা, কাঁসা বা পিতলের পাত্র শোভা পেতেই পারে। পুরোনো দিনের বা কিছুটা বনেদি কারুকাজের কদর আছে সব সময়েই। তবে রুচির পরিবর্তনে কিছুটা আধুনিক নকশার চকচকে তৈজসপত্র অনেকেরই পছন্দে নতুন যোগ। একসময় দেখা যেত পূজা এলেই পুরোনো ঢাকার অলিগলিতে সবাই ছুটছেন তামা ও পিতলের পণ্য কিনতে। এখনো আছে সেই ধারা, তবে এই বাজারের বিস্তার ছুঁয়ে গেছে অনলাইনকেও। কিছুটা আধুনিক ও নতুনত্ব নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে পণ্য তৈরিতে। রং পুড়িয়ে নকশা বা খাঁজকাটা পানির বোতল, কাপ-পিরিচ, মগ, কাঁটা চামচ ও টেবিল চামচ, পানির জগ, ফল রাখার ঝুড়ি, টিস্যুপেপারের বাক্স, টেবিল ল্যাম্প ও তামার সসপ্যান অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।

অনলাইনভিত্তিক পেজ ‘শিমুলিয়া কাঁসা–পিতল ঘর’–এর স্বত্বাধিকারী পিজুস সরকার বলেন, পূজা এলে কাঁসা, পিতল ও তামার পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় মেলার আয়োজন হচ্ছে। তবে পূজাকে কেন্দ্র না করেও সারা বছর অনেক ক্রেতাই কেনেন এই ধাতুর পণ্য। আধুনিক গঠন ও কম কারুকাজের পণ্যই এখন বেশি পরিচিতি পাচ্ছে। এ ছাড়া উৎসব হলে পুরোনো ধাঁচের পণ্যের চাহিদাও বেড়ে যায়।

পণ্যের মূল কাঠামো পিযুস সরকারের বাবা তৈরি করলেও পণ্যে কারুকাজগুলো ফুটে ওঠে ঢাকার ধামরাইয়ের কারিগরদের হাতে। অনলাইন ছাড়াও পুরান ঢাকার দোকানে পাইকারিভাবে কেজি দরে পণ্য সরবরাহ করা হয়। তবে অনলাইনের ক্রেতারা পছন্দমতো একটি করে পণ্য কিনতে পারবেন।

বনানীতে পেয়ে যাবেন কাঁসা-পিতলের কিছু পণ্য। আধুনিক নকশার ধাঁচ আছে এগুলোতে। এ ছাড়া কাপ-পিরিচ, মগও পেয়ে যাবেন। আবার রাজধানীর শাঁখারীবাজার, ইসলামপুর, তাঁতীবাজার ও সূত্রাপুর এলাকায় কাঁসা-পিতলের থালা–বাসনের অসংখ্য দোকান পাবেন। ফরমাশ দিয়ে পছন্দমতো আকার-আকৃতি ও নকশায় থালা, বাটি, গ্লাস, পাতিল, ছোট বাটি, বড় চামচ সাজাতে চাইলে চলে যেতে হবে ধামরাইয়ে।

দামদর

যাত্রামেলায় পানির বোতল পাওয়া যাবে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। এ ছাড়া যাত্রায় কাপ, পিরিচ ও মগ পাওয়া যাবে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। অনলাইনে তামার জগ ২ হাজার ২০০ টাকা, পিতলের জগ ১ হাজার ৪০০ টাকা, তামার মগ ৮০০ টাকা এবং কাপ–পিরিচ ৮০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।