টুকিটাকি

ঘুরতে যাওয়ার আগে

বেড়াতে যাওয়ার আগে গুছিয়ে নিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ছবি: নকশা
বেড়াতে যাওয়ার আগে গুছিয়ে নিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ছবি: নকশা

বছরের এই সময়টায় ক্লাস-পরীক্ষা শেষ হলে স্কুলপড়ুয়ারা মেতে ওঠে ছুটির আনন্দে। ছেলেমেয়েদের ছুটির এই কয়টা দিন বেরিয়ে পড়তে পারেন দল বেঁধে। আর শীতকালে ঘোরার মজাই তো আলাদা৷ বেড়ানোটাকে আনন্দময় করে তুলতে তাই আগে থেকেই কিছু প্রস্তুতি নেওয়া ভালো; যাতে বাইরে গিয়ে সমস্যায় পড়তে না হয়৷ ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘শীতের সময়টাতে কিছু অসুখের প্রকোপ বেড়ে যায়। এ সময় অনেকেরই সর্দি-কাশি বা জ্বর হয়ে থাকে। তাই ঠান্ডা আবহাওয়ায় বেড়াতে গেলে অবশ্যই মাফলার, কানঢাকা টুপিসহ গরম কাপড় সঙ্গে রাখতে হবে।’
বেড়ানোর সময় কিছু জিনিসপত্র সঙ্গে নিলে সুবিধা। সেসবের খোঁজ নেওয়া যাক।

চাই বড় ব্যাগ
তিন-চার দিনের ভ্রমণে প্রতিদিনের জন্য আলাদা কাপড় নেওয়া প্রয়োজন। তাই বড় ব্যাগ সঙ্গে নিতে হবে। অনেকেই ঘুরতে গিয়ে কেনাকাটা করে থাকেন। এ জন্য ছোট একটি ব্যাগ ভাঁজ করে নিজেদের ব্যাগে ঢুকিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

রোদের সঙ্গে মিতালি
শীতের রোদটা মিষ্টি লাগলেও সারাটা দিন রোদে ঘুরে ত্বকে খানিকটা পোড়াভাব তো চলে আসতে পারে। তাই রোদে অন্তত ১৫ মিনিট সানস্ক্রিন লোশন লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন মুজিবুর রহমান। রোদ থেকে বাঁচতে টুপিও সঙ্গে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে টুপির সামনের অংশটা চওড়া হওয়া ভালো। পাশাপাশি রোদচশমা, বেশি রোদ হলে ছাতা নিতেও যেন ভুল না হয়।

শিশুর জন্য বাড়তি সতর্কতা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক আবু সাঈদ বলেন, ‘বেড়াতে গিয়ে যদি পরিবারের ছোট সদস্যের কোনো সমস্যা হয়, তা হলে সবাই পড়ে যান দুশ্চিন্তায়। তাই শিশুদের জন্য প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। শিশুদের কখনো গাড়ির সামনের আসনে বসানো ঠিক নয়। শিশুদের জন্য বাড়তি শীতপোশাক যেমন প্রয়োজন, তেমনি খাবারদাবারে সতর্ক থাকা দরকার। আবু সাঈদ জানালেন, রেস্তোরাঁর খাবার কখনোই শিশুদের জন্য ভালো নয়। রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার আগে নিশ্চিত হোন সেখানকার খাবারের গুণগত মান সম্পর্কে। নিজেদের কাছেই বিশুদ্ধ পানির বোতল রাখতে পারেন। সমুদ্র বা যেকোনো জলাশয়ের কাছে ঘুরতে গেলে সব সময় শিশুদের দিকে খেয়াল রাখুন৷ না হলে আপনার অগোচরে শিশু দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। শিশুদের জন্য কিছু শুকনা খাবারও সঙ্গে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের আরেক চিকিৎসক আজকা সেঁজুতি।

গাড়িতে শরীর খারাপ?
ভ্রমণের সময় অনেকেরই বমি হয়ে থাকে। বমিভাব বা শরীর গুলিয়ে আসার মতো সমস্যা থাকলে ভ্রমণের আধা ঘণ্টা আগেই বমির ওষুধ খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন আবু সাঈদ। এমন সমস্যা যাঁদের হয়, যাত্রা শুরুর আগে তাঁদের হালকা খাবার খাওয়া উচিত। এ ছাড়া বমিভাব দূর করতে চলন্ত গাড়ির ভেতরে না তাকিয়ে বাইরে তাকানোর পরামর্শ দিলেন এই চিকিৎসক।

দূরে থাক জীবাণু ও পোকামাকড়
বেড়াতে গিয়ে খাবার খাওয়ার আগে হাত ধোয়ার কথা কিন্তু ভুললে চলবে না। পাহাড়ি এলাকায় মশার উপদ্রব বেশি হয়ে থাকে। এ জন্য মশারি ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে ফুলহাতা জামা ও মোজা ব্যবহার করতে পারেন। বেড়াতে গিয়ে যেখানে থাকবেন, সেখানকার বিছানার চাদর বা বালিশের কভার পরিষ্কারভাবে ধোয়া আছে কি না, তা নিশ্চিত হয়ে নেবেন।
না হলে ত্বকে চর্মরোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে।
সঙ্গে রাখুন কিছু ওষুধ
ব্যাগের ভেতরে প্যারাসিটামল ও অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ এবং শিশুদের নাকের ড্রপ গুছিয়ে নিন। অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম আর ব্যান্ডেজও সঙ্গে রাখা ভালো। যেকোনো সময় কাজে লাগতে পারে এগুলো। যাঁদের অ্যাজমা বা হাঁপানি আছে, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শমতো ইনহেলার বা অন্যান্য যেসব ওষুধ নিয়মিত সেবন করেন, বেড়াতে যাওয়ার সময় অবশ্যই সেগুলো সঙ্গে নিতে হবে।