Thank you for trying Sticky AMP!!

চুক্তি করবেন যেভাবে

ব্যবসা, লেনদেন বা অঙ্গীকার—যেকোনো বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন করার প্রয়োজন হতে পারে। বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট কেনা-বেচার সময়ও চুক্তি করা প্রয়োজন হতে পারে। আবার কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লেনদেনের জন্য বিশেষ করে ঋণের জন্য চুক্তিপত্র সম্পাদন প্রয়োজন। এ ছাড়া ব্যক্তিগত যেকোনো ধরনের কাজে চুক্তিনামা দরকার হয়। চুক্তি আবার যেনতেনভাবে করলে হবে না। যেকোনো চুক্তিই হোক না কেন, তা বিধিবিধান মেনেই করতে হবে।

চুক্তিনামায় যা থাকবে
প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে চুক্তি করতে গিয়ে কোনো অপূর্ণতা যেন না থাকে। ব্যবসার জন্য হলে তা ছোট হোক আর বড় হোক, চুক্তিতে কার কী রকম দায়দায়িত্ব, তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। কোনোভাবেই ফাঁকফোকর রাখা যাবে না। এতে চুক্তি নিয়ে বড় ধরনের জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা থাকবে। চুক্তিতে পক্ষগণের নাম ও ঠিকানা স্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হলে এর ঠিকানা থাকতে হবে। চুক্তিতে কার কতটুকু অংশ বা ভূমিকা থাকবে, চুক্তি কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা কাজ নিয়ে হলে তা শুরুর তারিখ এবং সম্পন্ন বা অবসান হওয়ার তারিখ থাকতে হবে। ব্যবসাসংক্রান্ত হলে পুঁজি কত এবং এ থেকে কীভাবে লভ্যাংশ আদায় হবে, ব্যবসার ব্যবস্থাপনা কেমন হবে প্রভৃতি বিষয় অবশ্যই থাকতে হবে চুক্তিতে।
কোনো বিরোধ দেখা দিলে তার নিষ্পত্তি কীভাবে হবে, সেটি চুক্তিতে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। বিশেষ করে বিরোধ হলে আলোচনা কিংবা সালিসের মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করার সুযোগ থাকবে কি না, তার উল্লেখ অবশ্যই থাকা দরকার।
বর্তমানে সব ক্ষেত্রেই মীমাংসার মাধ্যমে যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তিকে উৎসাহিত করা হয়। তাই চুক্তিপত্রের একটি অনুচ্ছেদে এ-সংক্রান্ত শর্ত রাখা জরুরি। চুক্তিনামায় সালিস আইন ২০০১-এর মাধ্যমে নিষ্পত্তির বিধানটি রাখা যেতে পারে। যেকোনো চুক্তিপত্রের শেষের অংশে দুই পক্ষের এবং সাক্ষীদের সই থাকতে হবে। যে তারিখে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে, সে তারিখ চুক্তিপত্রে দিতে হবে। নাবালক, পাগল, দেউলিয়া ব্যক্তি, সরকারি কর্মচারী, রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, বিদেশি রাষ্ট্রদূত, বিদেশি শত্রু ও দেশদ্রোহী ব্যক্তির সঙ্গে কোনো চুক্তি করা যাবে না। বিশেষ করে ব্যবসায়িক চুক্তি তো একবারেই নয়।

যেভাবে সম্পাদিত হবে
সাধারণত চুক্তিপত্র করতে হয় ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে এর তারতম্য হতে পারে। যেমন অংশীদারি ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র করতে হয় ২ হাজার টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে। ব্যবসার মূলধন ৫০ হাজার টাকার নিচে হলে ১ হাজার টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তি করলেই চলবে। সাধারণ চুক্তিপত্র নোটারি পাবলিক বা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে নোটারাইজড করতে হবে। অংশীদারি চুক্তিরÿক্ষেত্রে নিবন্ধন করাতে হবে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ থেকে। কোনো জমি বা ফ্ল্যাট কিনতে বায়নানামা সম্পাদন করার প্রয়োজন হতে পারে। বায়নানামাও একধরনের চুক্তি। তবে বায়নানামা সম্পাদন করলে তা অবশ্যই সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং রেজিস্ট্রশন বাধ্যতামূলক।

লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট