ক্যাম্পাসের প্রিয়মুখ

নিঝুমের এগিয়ে চলা

ফারহানা রাজ্জাক
ফারহানা রাজ্জাক

সবাই তাঁকে ডাকেন নিঝুম নামে। নামের প্রকৃতি চুপচাপ হলেও কাজেকর্মে বেশ সাড়া জাগানো মেয়েটির নাম ফারহানা রাজ্জাক। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের স্নাতকোত্তর শেষ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তিনি। ২০১৪ সালের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৮১ সিজিপিএ পেয়ে বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন ফারহানা।
ভবিষ্যতে অর্থনীতি, নিরাপত্তা আর মানবাধিকার নিয়ে গবেষণা করার আগ্রহ তাঁর। নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে ফারহানা জানান, ‘নিজেকে আমি একজন আত্মনির্ভরশীল মানুষ হিসেবে দেখি। আমি কোনো কিছুতে দমে যেতে চাই না। সামনে নিজের পড়াশোনা ও কাজ দিয়ে দেশের জন্য আলোচিত কিছু গবেষণা করতে চাই।’
বাবা আবদুর রাজ্জাক আর মা রাফেয়া রাজ্জাকের মেয়ে ফারহানার জন্ম আর বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকায়। মা-বাবা দুজনেই শিক্ষকতায় সম্পৃক্ত ছিলেন বলে ফারহানারও দূর ভবিষ্যতের দৃষ্টি শিক্ষকতার দুনিয়ায়।
পড়াশোনার পাশাপাশি নানা ধরনের সামাজিক কাজে যুক্ত ফারহানা। তিনি এশিয়ান ইয়ুথ ফোরামের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া বিভাগের বিতর্ক ও ক্যারিয়ার ক্লাবের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত রয়েছেন। বিভাগের একাডেমিক জার্নালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও কাজের অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার বাইরে বাংলাদেশ অধ্যয়ন কেন্দ্রে গবেষণায় সম্পৃক্ত। ফারহানা বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননার আয়োজনের কাজে কয়েক বছর ধরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন।
কলেজ শেষে ফারহানার প্রথম পা পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে। সেখানে শিল্পকলার ইতিহাসে এক বছর পড়ার সময়ে শহীদ শাহনেওয়াজ স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছিলেন। চারুকলার মায়া কাটিয়ে ফারহানা পা রাখেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে।
ছবি আঁকার পাশাপাশি স্কুল আর কলেজ থেকেই গল্প লেখার আগ্রহ আছে ফারহানার। ২০০৫ সালের ঐতিহ্য-গোল্লাছুট, প্রথম আলো গল্পলেখা প্রতিযোগিতার পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। আর অভিনয়, স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সেমিস্টারে ভালো ফলের জন্য নিয়মিত পুরস্কার, সম্মাননা ও বৃত্তি পেয়ে যাচ্ছেন তিনি।
নিজে ছবি তোলা আর ঘুরতে দারুণ পছন্দ করেন বলে ফারহানার শেষ কথা, ‘পুরান ঢাকার অলিগলিতে আমি ক্যামেরা নিয়ে হারিয়ে যাই। এটা আমার শখ।’
ফারহানা ২০১৪ সালে বাংলাদেশের এক শ তরুণ প্রতিনিধির একজন সদস্য হিসেবে ভারত সফরে যান।
ভবিষ্যতে ফারহানা কোথায় থাকবেন প্রশ্নে তাঁর উত্তর, ‘পড়াশোনা শেষে গবেষণাসম্পৃক্ত কাজে নিজেকে যুক্ত করতে চাই। গবেষক হলে আজীবন পড়াশোনার সঙ্গে থাকার সুযোগ মিলবে, তাই গবেষণার টেবিলে মোটা চশমা পরা আমাকে দেখতে চাই।’