ফিচারালয়ে ছুটির দিনে

ছুটির দিনের স্টলে সাইফুল ইসলাম
ছুটির দিনের স্টলে সাইফুল ইসলাম

চোখ-মুখ দেখে বোঝা গেল তিনি কিছুটা দ্বিধায় ভুগছেন। দুবার স্টলের সামনে এসেছেন, পাশে বসা মানুষটাকে দেখে আবার ফিরেও গেছেন। ফের যখন তিনি এলেন, তখন আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কিছু জানতে চান? ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে বললেন, ‘উনিই কি সেই অন্য রকম একজন সাইফুল?’ সাইফুল ইসলাম নিজেই মাথা ঝাঁকিয়ে উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, আমিই সাইফুল ইসলাম নেসার।’ তারপর সাইফুল ইসলামের সঙ্গে হাত মেলাতে গিয়ে তাঁর কণ্ঠ ভারী হয়ে এল। শুধু একটি কথাই বললেন, ‘ভাই, আপনে মানুষ। ভালো থাকবেন।’

হাবিবুর রহমান নামের এই মানুষটি প্রথম আলোর ক্রোড়পত্র ছুটির দিনের পাঠক। রাজধানীর আদাবর থেকে এসেছিলেন বাংলা একাডেমিতে, প্রথম আলোর পাঠক উৎসব—এসো আঠারোয়। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী হাবিবুর রহমান স্টল থেকে বিদায় নেওয়ার আগে বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ছিল। দেখা হয়ে ভালো লাগল।’

চট্টগ্রামের সাইফুল ইসলামের নিঃস্বার্থ সেবা দেওয়ার কাহিনি আমাদের অনেকেরই জানা। তবু একটু বলে রাখা যেতে পারে, সাইফুল ইসলাম চাকরি করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। বাকি সময় কাটান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অজ্ঞাতনামা, অসহায় রোগীদের সেবা করে। যার কেউ নেই, তার পাশেই তিনি দাঁড়ান। মানবপ্রেমী এই মানুষকে নিয়েই গত সেপ্টেম্বরে ছুটির দিনে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

২৫ নভেম্বরের প্রথম আলোর পাঠক উৎসবে তিনি আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন। বসেছিলেন ছুটির দিনে স্টলে। সেখানেই ছুটির দিনের পাঠকদের ভালোবাসায় সিক্ত হন সাইফুল ইসলাম। ‘ছুটির দিনে খবর প্রকাশের পর দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ ফোন করেছেন। সাধুবাদ জানিয়েছেন। এমন ভালোবাসার তুলনা হয় না।’ তাঁকে নিয়ে পাঠকের আগ্রহের কথা বলেন সাইফুল ইসলাম।

সেদিন ছুটির দিনের স্টলে শুধু যে সাদামনের মানুষ সাইফুলের সাক্ষাৎ মিলেছে এমন নয়। প্রথম আলোর ফিচার বিভাগের ক্রোড়পত্রগুলোর স্টল ‘ফিচারালয়’ ভরপুর ছিল পাঠকের জন্য নানা আয়োজনে। ছুটির দিনে কর্নারে ছিল কুইজ পর্ব। যেখানে ক্রোড়পত্রটির বিভিন্ন বিভাগ নিয়ে ‘অতি সহজ’ পাঁচটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। অংশগ্রহণ করলেই দেওয়া হতো তাৎক্ষণিক পুরস্কার। আর সঠিক উত্তর দিতে পারলে তো কথায় নেই—আইসক্রিম কিংবা স্যুপের টোকেনের সঙ্গে জুটে যেত ছুটির দিনের ব্যাচ। ‘মেহতাব খানম ছুটির দিনের কোন বিভাগে পরামর্শ দেন?’ কুইজের উত্তর দিতে গিয়ে একটু বিরক্তই হলেন তিনি। খানিক বাদে, নীরবতা ভেঙে বলতে শুরু করলেন, ‘আপনারা কুইজে এসব কী প্রশ্ন করেছেন! এগুলো কে না জানে?’ ঢাকার বাড্ডা থেকে ফজলে রাব্বী নামের একজন পাঠক এসেছিলেন পরিবারসমেত। কথার জুতসই উত্তর দিতে গিয়ে আমাদেরও মনে হলো, এসব কে না জানে!