বাবার শাসনে বাধ্য হয়ে করা কাজগুলোই এখন অভ্যাস

আজ জুন মাসের তৃতীয় রোববার, বাবা দিবস। এ উপলক্ষে ‘বাবার পথেই হেঁটেছি’ শিরোনামে লেখা আহ্বান করেছিল ‘স্বপ্ন নিয়ে’।

বাবা–ছেলে দুজনই প্রকৌশলী
বাবা–ছেলে দুজনই প্রকৌশলী

জীবনের সঙ্গে আমার পরিচয় বাবার মাধ্যমে। সকালে ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে যাওয়া, বাজার করা, স্কুলে যাওয়া, খেলতে যাওয়া, এর সঙ্গে সামাজিকতা—প্রতিটি বিষয় ঘুরেফিরে বাবাকে দেখেই শেখা। সবকিছুতে ছিল বাবার কঠোর শাসন, সেই সঙ্গে প্রতিটি কাজ আরও ভালো করে করার আদেশ! ভয়ে ভয়ে করে ফেলা কাজগুলো এখন অভ্যাসের অংশ।

আমার বাবা হাসান কবির স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের একজন প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাবার কাজের সুবাদে দেশের নানা প্রান্ত ঘুরেছি। রাস্তাঘাট, সেতু, বাজার, স্কুল—এসবের নির্মাণকাজ দেখা ছিল খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। ছোটবেলায় এগুলোর গুরুত্ব বুঝতাম না। যত বড় হয়েছি, বুঝেছি একটা রাস্তা কীভাবে গ্রামের সব মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে। একটা সেতু কীভাবে দুটি এলাকাকে যুক্ত করে। একটা খাল পুনঃখননের পর সেখানে যখন পানি আসে, একজন কৃষকের কাছে সেটা যে কত গুরুত্বপূর্ণ, পাঠ্যবই আমাকে সেটা শেখাতে পারেনি। একটা স্কুল কীভাবে একটা সম্প্রদায়কে বদলে দেয়, নিজের চোখে না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়।

আমি এখন কাজ করছি হাওর অঞ্চলে। এখানে কিছু গ্রাম ছয় মাস পানির নিচে থাকত, আর গ্রামের বাসিন্দারা বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয় নিত আশপাশে। কিছু গ্রাম উঁচু করার ফলে একটা গ্রামের সব কটি পরিবার সারা বছর এখন নিজের ঘরে থাকতে পারছে। বাবার কাছেই শিখেছি, সততা আর কাজের প্রতি নিষ্ঠা নিয়ে পরিশ্রম করলে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায়। বাবাকে ছাপিয়ে যেতে হয়তো পারব না। তবু চেষ্টা থাকবে যেন মানুষের জীবনে তাঁর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারি।