
ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) তখন ইউরোপ জয়ের নেশায় যুদ্ধ বাধিয়ে চলেছেন। এদিকে সৈন্যদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হচ্ছে সব সময়ই। ক্ষণে ক্ষণে পাঠাতে হচ্ছে বিভিন্ন নির্দেশনা। দিনের বেলায় এই নির্দেশনাগুলো পড়তে কোনো সমস্যা না হলেও রাতের অন্ধকারে আলো জ্বালিয়ে নির্দেশনা পড়ার অর্থ ছিল শত্রুপক্ষকে নিজের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া!
এই সমস্যার সমাধান চেয়ে নেপোলিয়ন নির্দেশনা জারি করলেন। ফরাসি সৈন্যবাহিনীর জনৈক সামরিক কর্মকর্তা চার্লস বার্বিয়ার ‘নাইট রাইটিং’ নামে একটি ব্যবস্থার প্রস্তাব করেন, যেখানে ফরাসি ভাষার প্রতিটি অক্ষরের জন্য ১২টি ডটকে বিভিন্ন বিন্যাসে সাজিয়ে একটা নতুন বর্ণমালা সৃষ্টি করা হয়। এই ডটগুলোয় হাত বুলিয়ে সেনারা বিশেষ ব্যবস্থায় লেখা নির্দেশনাগুলো কোনো রকম আলোর সাহায্য ছাড়াই পড়ে নিতে পারতেন।
১৮২১ সালে চার্লস বার্বিয়ারের নাইট রাইটিং নিয়ে কাজ করা শুরু করে ফরাসি স্কুলপড়ুয়া কিশোর লুই ব্রেইল। মাত্র চার বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারানো ব্রেইল কিছুদিনের মধ্যেই বার্বিয়ারের ১২টি ডটের বর্ণমালাকে আরও সহজবোধ্য করে ৬টি ডটে বিন্যস্ত করে নতুনভাবে সাজান।
এই ছয়টি ডটের বর্ণমালাকেই লুই ব্রেইলের মৃত্যুর দুই বছরের মাথায়, ১৮৫৪ সালে রয়্যাল ইনস্টিটিউট ফর ব্লাইন্ড ইন প্যারিস ব্রেইল পদ্ধতি হিসেবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের লেখাপড়ার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে।
ইনডিপেনডেন্ট ও দ্য সান অবলম্বনে আকিব মো. সাতিল