ভালো থাকুন

মুখ শুকিয়ে যায়?

অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী
আমাদের মুখের ভেতরটা আর্দ্র বা স্বাভাবিক রাখে লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত লালা। নানা কারণে মুখের ভেতরের লালা বা থুতুর স্বাভাবিক মাত্রা কমে যেতে পারে। এর ফলে বারবার মুখ শুকিয়ে আসতে পারে। আসুন জেনে নিই সেই রকম কিছু তথ্য।
১. ওষুধ: প্রায় ৬০০ ধরনের ওষুধ আছে, যা মুখের আর্দ্রতাকে পরিবর্তন করতে পারে। যেমন: অ্যালার্জি, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, ঘুমের ওষুধ, ব্যথানাশক, মানসিক রোগের ওষুধ ইত্যাদি। মাদকাসক্তিও একটি কারণ।
২. দেহে জলীয় অংশ: দেহে জলীয় অংশের পরিমাণ কমে গেলে বা পানিশূন্যতার কারণে লালা কমে যেতে পারে। ফলে মুখ শুকিয়ে যায়। তা ছাড়া রক্তস্বল্পতা, ডায়রিয়া, কিডনি অকার্যকারিতায় মুখ শুকায়।
৩. লালাগ্রন্থির প্রদাহ: লালাগ্রন্থির সংক্রমণ বা প্রদাহ যেমন মাম্পস হলেও মুখের আর্দ্রতা নষ্ট হয়।
৪. সোগ্রেনস সিনড্রম: এটি এক ধরনের অটোইমিউন ডিজিজ, যা লালাগ্রন্থিকে আক্রান্ত করে ও লালার পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
৫. লালাগ্রন্থির নালি সমস্যা: লালার খনিজ জমে গিয়ে অতি সূক্ষ্ম পাথর তৈরি হয়, যা লালা বেরোনোর নালিকে বন্ধ করে দিয়ে এর স্বাভাবিক গতিকে ব্যাহত করে। ফলে মুখ শুকিয়ে যায়।
৬. অন্যান্য রোগ: ডায়াবেটিস, এইডস, এমাইলোডোসিস, সেরিব্রেল পালসি, পারকিনসন ডিজিজ, প্রাইমারি বিলিয়ারি সিরোসিস, লুপাস ইত্যাদি রোগের কারণে মুখের ভেতরে আর্দ্রতা নষ্ট হয়।
৭. স্নায়ু সমস্যা: লালাগ্রন্থির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে ফেশিয়াল নার্ভ, যা কোনো ধরনের আঘাত বা শল্যচিকিৎসার জটিলতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে লালার স্বাভাবিক গতিময়তা বাধাগ্রস্ত হয়।
৮. ক্যানসার চিকিৎসা: ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য কেমো বা রেডিওথেরাপি (যদি মাথা বা ঘাড়ে হয়) দেওয়া হলে সাময়িকভাবে লালা তৈরির কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।
৯. অন্যান্য কারণ: যারা মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়, যেমন সাইনুসাইটিস বা অ্যালার্জির কারণে সব সময় নাক বন্ধ অথবা গর্ভাবস্থায় বা মেনোপজের পরও মুখের লালা কিছুটা কমে যেতে পারে।  দন্ত বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল|