সাজপোশাকের অনুষঙ্গ হিসেবে কাচের চুড়ির আবেদন কখনোই কমেনি। বিভিন্ন সময় কাচের চুড়ি পরার ঢঙে হেরফের হলেও তরুণীদের কাছে এর কদর সব সময়ই আছে। শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে কাচের চুড়ি সহজেই মানিয়ে যায়। ফ্যাশন-সচেতন তরুণীরা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে নানান ঢঙে বিভিন্ন নকশার কাচের চুড়ি পরছেন।
রাজধানীর শপিং মলগুলোতে, ফুটপাতে ঘুরে দেখা যায় পয়লা ফাল্গুন সামনে রেখে কাচের চুড়ির পসরা বসেছে। এখন বাজারে বিভিন্ন রং, পুরুত্ব ও নকশার কাচের চুড়ি পাওয়া যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে চুড়ির ভান্ডার নিয়ে প্রায়ই বসেন চুড়িবিক্রেতা শিল্পী। তিনি বলেন, কাচের চুড়ির নকশায় এখন অনেক ভিন্নতা এসেছে। পুরোনো নকশার একরঙা সাদামাটা কাচের চুড়ির পাশাপাশি খাঁজকাটা, চুমকি ও পাথর বসানো, রাজস্থানি, কাশ্মীরিসহ নানা নকশার কাচের চুড়ি পাওয়া যাচ্ছে এখন। দেশীয় যেকোনো উৎসবে পরার জন্য তরুণীরা কাচের চুড়ি পছন্দ করছেন।
বিবিয়ানার ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার মনে করেন, চুড়ি পরার কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই। এখন প্রায় সব রঙের কাচের চুড়িই পাওয়া যায়। পোশাকের সঙ্গে রং মিলিয়ে যেমন পরা যায়, তেমনি পোশাকের রঙের সঙ্গে কন্ট্রাস্ট করেও পরা যায়। তিনি বলেন, দেশীয় পোশাকের সঙ্গে এক হাত ভরে চুড়ি পরলে অন্য হাতে একটি মোটা বালা পরা চলে অথবা দুই হাতে চুড়ি পরলে কিছুটা ফাঁকা রেখে পরলে ভালো লাগবে। এখন চুড়ির সঙ্গে মিলিয়ে কাঠের বা অক্সিডাইজড ধাতুর মোটা বালাও পরছেন অনেকে। আবার কাচের চুড়ির মধ্যে একটু মোটা ধরনের চুড়িগুলো অল্প কয়েকটা এক হাতে ব্রেসলেটের মতো করে পরলেও ভালো লাগবে। চুমকি বসানো বা জমকালো নকশার চুড়িগুলোর সঙ্গে মাঝে পাথর বসানো মোটা চুড়ি কয়েকটা পরা যায়।
শাড়ির সঙ্গে পরার জন্য নিউমার্কেটে চুড়ি খুঁজছিলেন রাজধানীর ফার্মগেট থেকে আসা সানজিদা। তিনি বলেন, শাড়ির সঙ্গে দুহাত ভরে চুড়ি পরতে পছন্দ করেন তিনি। পয়লা ফাল্গুনে পরার জন্য তিনি একরঙা রেশমি চুড়ি খুঁজছিলেন। চারুকলার সামনে ফুটপাতে চুড়ি কিনছিলেন চারুকলার শিক্ষার্থী ফাইজা। তিনি মনে করেন, পোশাকে বাঙালিয়ানা ফুটিয়ে তুলতে কাচের চুড়ির বিকল্প নেই। শাড়ির সঙ্গে হাতে কাচের চুড়ি না পরলে সাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায় বলে তাঁর মনে হয়।
কোথায় পাবেন
ঢাকার চকবাজার, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনীচকে কাচের চুড়ির বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। এমন কোনো চুড়ি নেই, যা এখানে পাওয়া যায় না। এ ছাড়া ঢাকার মৌচাক, আনারকলি, ইস্টার্ন প্লাজা, বসুন্ধরা সিটিসহ অন্য মার্কেটগুলোতেও কাচের চুড়ি পাওয়া যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনে ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এবং ঢাকার বেইলি রোডের ফুটপাতেও সাধারণত চুড়িবিক্রেতারা তাঁদের পসরা সাজিয়ে বসেন। বিভিন্ন উৎসব সামনে রেখে কিছু ফ্যাশন হাউসও ক্রেতাদের জন্য তাঁদের কাচের চুড়ির সংগ্রহ নিয়ে আসে। ফ্যাশন হাউস বিশ্বরঙ, মাদুলি, প্রবর্তনা, মাদলেও কিছু কাচের চুড়ির সংগ্রহ রয়েছে।
দরদাম
বিভিন্ন রকম কাচের চুড়ির দাম সাধারণত ৩০-৬০ টাকার মধ্যে হয়। নকশাভেদে দামে তারতম্য আসতে পারে। একদম সাধারণ কাচের চুড়ি বা রেশমি চুড়ির দাম সাধারণত প্রতি ডজনে ২৫ থেকে ৩০ টাকা হয়। আর বহুরঙা এবং রাজস্থানি বা কাশ্মীরি নকশার চুড়ি প্রতি ডজনের দাম পড়বে ৪০ থেকে ৬০ টাকা।