মৌসুম

শীতপোশাকে সচেতনতা

শীত মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত এখনই। ছবি: নকশা
শীত মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত এখনই। ছবি: নকশা

জাঁকিয়ে শীত পড়েছে, তা হয়তো বলা যাবে না, তবে শীতের হাওয়ার নাচন শুরু হয়েছে। তাই শীতপোশাক যেমন এসে গেছে বাজারে, তেমনি জমজমাট লেপ–কম্বলের বাজারও। মানে শীতে একটু ওম পাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ঢাল-তলোয়ার ছাড়া নিধিরাম সর্দার হয়ে তো আর শীতকে কুপোকাত করা যাবে না। সব প্রস্তুতির পাশাপাশি শীতের পোশাক আর লেপ-কম্বল নামানোর সময় এখনই। বাড়ির বড়দের জন্য হোক বা শিশুদের জন্য; পুরোনো বা নতুন শীতের পোশাক আর অন্যান্য জিনিসপত্র ব্যবহারের আগে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

‘গত বছরের শীতের পোশাক, লেপ ও কম্বল ভালোভাবে সংরক্ষণ করা সত্ত্বেও এতে ধুলার আস্তরণ জমতে পারে। এই ধুলা হতে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ। তাই ধুলা পরিষ্কার করতে হবে প্রথমে।’ বললেন ঢাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের বস্ত্র পরিচ্ছদ ও বয়নশিল্প বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদা আক্তার। 

ধুলা ঝাড়ার সময় নাক-মুখ ঢেকে নিতে হবে। আর তখন যেন শিশুরা আশপাশে না থাকে। এ ছাড়া শীতের পোশাক ও লেপ-কম্বল ব্যবহারের কিছু নিয়ম রয়েছে—জানালেন মাহমুদা আক্তার। দেখা যাক সেগুলো।

লেপ ও কভারের যা কিছু

লেপ সংরক্ষণের আগেই কড়া রোদে মেলে দিন। গত মৌসুমে রোদে রেখে সংরক্ষণ করা হলেও এ বছর ব্যবহারের আগে রোদে পোহাতে হবে। কড়া রোদে লেপ মেলে রাখার পর তা গরম হয়ে যাওয়া পর্যন্ত রোদেই রাখুন। এরপর ঠান্ডা স্থানে আনুন। লেপের মধ্যে থেকে রোদের উষ্ণতাটা চলে যাওয়ার পর কভার বা ঢাকনা পরিয়ে ব্যবহার করুন। লেপ এবং এর কভার আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। সংরক্ষণ এবং ব্যবহারের আগেই ঢাকনা ধুয়ে নেওয়া ভালো।

কম্বল ব্যবহারে

বাড়িতে কম্বল ধোয়ার সুযোগ থাকে না। তাই আগে থেকে ড্রাইওয়াশ করিয়ে রাখা ভালো। ড্রাইওয়াশ করানো থাকলেও ব্যবহারের আগে কম্বল রোদে দিয়ে নেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রেও কম্বল গরম হয়ে যাওয়ার পর তা ঠান্ডা স্থানে রেখে রোদের উষ্ণতা কাটিয়ে নিতে হবে। কম্বল ব্যবহারের আরও দু-এক দিন আগে থেকেই সেটি রোদে দেওয়া এবং উন্মুক্ত আলো বাতাসে রাখা প্রয়োজন।

পুরোনো আরও যা

পুরোনো পোশাক ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই তা রোদে রেখে উষ্ণ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। রোদে রাখার পরেও কাপড় থেকে ধুলার ঘ্রাণ আসতে পারে। তাই রোদে রাখার পর অবশ্যই তা ঝেড়ে নিয়ে এরপর ঘরে আনুন। ঘরের মধ্যে ধুলা ঝাড়লে ঘরের অন্যান্য জিনিসে ধুলা ছড়িয়ে পড়ে।

শিশুর শীতের পোশাক

শিশুদের ব্যাপারে কোনো রকম ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। যেকোনো পোশাক পরানোর আগে অবশ্যই ভালোমতো দেখে নিন পোশাকটিতে ধুলা-ময়লা বা কোনো ধরনের পোকামাকড় রয়েছে কি না। গত মৌসুমের শীতের পোশাক এই মৌসুমেও তার গায়ে লাগবে এবং সে ব্যবহার করতে পারবে বলে মনে হলে পুরোনো কাপড়গুলো অবশ্যই রোদে রাখুন। কাপড় উষ্ণ হয়ে যাওয়ার পর ভালোভাবে ঝেড়ে নিয়ে সেটি ঘরে আনুন। শিশুকে ফ্লানেল, উল, ভেলভেট বা যেকোনো কৃত্রিম তন্তুর তৈরি শীতবস্ত্র পরানোর আগে পাতলা ও নরম প্রকৃতির সুতি কাপড় পরিয়ে নিন। নইলে শীতবস্ত্রের কারণে শিশুর ত্বকে অস্বস্তি হতে পারে।

নতুন কিছু কিনলে

নতুন শীতপোশাক ব্যবহারের আগে আলো-বাতাস সমৃদ্ধ স্থানে মেলে রেখে ভালোভাবে ঝেড়ে নিতে হবে।

পরিষ্কার কখন করবেন?

নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে শীতের পোশাক পরিষ্কার করতে হবে, এমন কোনো নিয়ম নেই। ময়লা হয়ে যাওয়ার পর পরিষ্কার করলেই চলে। বড়রা শীতের পোশাক একটানা বেশ কয়েক দিন ব্যবহার করতে পারেন। তবে শিশুরা সহজেই পোশাক ময়লা করে ফেলে। তাই কয়েক দিন পরপরই ওদের পোশাক পরিষ্কার করতে হয়। ওদের জন্য তাই বাড়তি কয়েক সেট শীতের পোশাক কিনে রাখাই ভালো।