স্টপ নট, ফিল্ম বানাও

দর্শকের ভোটে সেরা ফিল্ম ‘ফিরে এসো ফারিয়া’ দলের সদস্যরা
দর্শকের ভোটে সেরা ফিল্ম ‘ফিরে এসো ফারিয়া’ দলের সদস্যরা

‘একটা ঘুড়ি হঠাৎ করে বোকাট্টা হয়ে গেল...’ লেখক আনিসুল হক করে দিলেন গল্পের শুরু। ১০ মিনিট ভেবে তাঁরা বানিয়ে ফেললেন গল্পের বাকিটা। সেই গল্প নিয়ে বানানো শর্টফিল্ম ফিরে এস ফারিয়া হয়ে গেল ক্যাম্পাস-ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিযোগিতা ‘স্টপ নট—গল্প চালাও ফিল্ম বানাও’ প্রতিযোগিতায় দর্শকদের ভোটে সেরা ফিল্ম।
পরিচালক হাসান যোবায়ের তাঁর গল্পের ভাবনা নিয়ে বলেন, ‘ফারিয়া একটি রূপক চরিত্র। সবাই ফারিয়ার মতো করে যেন ফিরে আসে, এটাই ছিল আমাদের গল্পের থিম। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ের সামাজিক যোগাযোগের যে বিশাল ক্ষমতা, তাও আমরা আমাদের ফিল্মের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’
ফিল্মে মূল চরিত্রে ছিলেন অমিও পোদ্দার ও মুনজেরিন মুক্তা। ক্যামেরার পেছনে পরিচালকের সহকারী ছিলেন আতিকুর রহমান, আবির ইমতিয়াজ ও অ্যান্থনি অনিক। প্রপস অ্যান্ড সেট ডিজাইনিং নিয়ে কাজ করেছেন আনিসুর রহমান ও আমান মিয়া। তাঁরা সবাই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী।
ফিল্ম বানাতে গিয়ে অনেক মজার অভিজ্ঞতা হয়েছে এই দলটির। দলের অভিনেত্রী মুনজেরিন বলেন, ‘যেহেতু ঘুড়ি দিয়ে গল্পের শুরু, তাই প্রথমে অনেক ঘুড়ি উড়ানোর প্রয়োজন পড়ে। তখন দেখা যায় আমাদের শুটিং দলের সদস্য, লাইটম্যান, মেকআপম্যান, প্রোডাকশনবয়সহ সবাই সবকিছু ফেলে ঘুড়ি উড়ানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এমনকি চিত্রগ্রাহকও ক্যামেরার লেন্সের মাথায় ঘুড়ির সুতা বেঁধে উড়ানোর চেষ্টা করেন।’
পরিচালক হাসান যোবায়ের পড়ছেন মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিষয়ে। সিনেমা বানানোই তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। নিজের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এখনো শিখছি। কেবল শেখার শুরু। পড়াশোনা শেষ হলে ভবিষ্যতে চলচ্চিত্র নিয়েই ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছা। সেটা অ্যানিমেশন ফিল্মও হতে পারে। যা–ই করি না কেন, সেখানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার থাকবেই—এমনটাই আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।’
‘স্টপ নট—গল্প চালাও ফিল্ম বানাও’ প্রতিযোগিতাটি আয়োজিত হয়েছে পারফেট্টি ভ্যানমেলে বাংলাদেশ লিমিটেডের অর্থায়নে। ১০টি ক্যাম্পাস থেকে ১০টি গল্প সংগ্রহ করার মাধ্যমে এ বছরের জুলাই মাসে এই প্রতিযোগিতার সূচনা ঘটে। আর সেই সংগৃহীত গল্প থেকে বানানো শর্টফিল্ম প্রদর্শনের মাধ্যমে গত ২৯ নভেম্বর শেষ হয় এই প্রতিযোগিতা। ফিল্মগুলোতে শিক্ষার্থীরাই স্ক্রিপ্ট লেখা থেকে শুরু করে পরিচালনা, অভিনয় ও পোস্ট প্রোডাকশনের যাবতীয় কাজ করেছেন। পুরো আয়োজনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলেন লেখক আনিসুল হক ও আশীফ এন্তাজ রবি।
জাঁকজমকপূর্ণ সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমাস হলে। এতে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। জনপ্রিয়তার বিচারে সেরা ফিল্ম নির্বাচিত হয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফিরে এসো ফারিয়া। সমালোচকদের বিচারে সেরা ফিল্ম নির্বাচিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বুনোফুল এবং সেরা গল্প নির্বাচিত হয় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রত্যাবর্তন। সেরা অভিনেতার স্বীকৃতি পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমিত জাহিদি ও সেরা অভিনেত্রী ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সিমরান ধর।