Thank you for trying Sticky AMP!!

স্বপ্নগুলো সত্যি করার সহজ ১০ ধাপ

.

শখ বা স্বপ্নের অনেক কাজ অনেকেই জমিয়ে রেখে দেন অবসরে যাওয়ার পরে করবেন বলে। কিন্তু সেগুলো এখনই শুরু করে দেওয়া ভালো। কারণ, অবসর-পরবর্তী সময়টা তো না-ও আসতে পারে। জীবনে সত্যিকারের অবসর আসলে কখনোই মেলে না। সময় খুবই সীমিত, কাজেই সেটা অপচয় করার কোনো মানে হয় না। ১০টি সহজ ধাপ অনুসরণ করে আপনার স্বপ্নগুলোকে সত্যি করতে পারেন। তাই শুরু করে দিন, আজই।
১. স্বপ্নটাকে চিনে নিন:
জীবনের লক্ষ্য নিয়ে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। ব্যাপারটা সহজভাবে সমাধানের চেষ্টা করুন। আপনার কী করতে ভালো লাগে? ভাবুন। সবকিছু এখনই চূড়ান্ত করার দরকার নেই। শুধু ধারণাগুলো জড়ো করার চেষ্টা করুন। যেসব কাজ করতে গিয়ে আপনি আন্দোলিত হন ও উৎসাহবোধ করেন এবং যা কিছুর সঙ্গে আপনার বিশেষ ভালো লাগা ও আবেগ যুক্ত রয়েছে সেগুলোর সম্ভাবনা নিয়ে ভাবুন। সম্ভব হলে এ রকম কিছু বিষয় লিখে রাখুন। জীবন নিয়ে কী কী স্বপ্ন দেখেন, সেগুলো গুছিয়ে লেখার বা ভাবার চেষ্টা করেই দেখুন, কী হয়। চোখ বন্ধ করে ভবিষ্যতের একটা ছবি কল্পনা করুন। যেমন যদি আপনি লেখক হতে চান, প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখুন। এভাবেই নিজের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় চর্চাটা চালিয়ে যান।
২. সিদ্ধান্ত নিন এবং আস্থাবান হোন:
অনেকেই উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন দেখেন এবং সেগুলোর সম্ভাবনা নিয়ে নিজেই নিজেকে নিরুৎসাহিত করেন: ‘আমি পারব না... আমাকে দিয়ে হবে না’ ইত্যাদি। এ ধরনের প্রবণতা বন্ধ করুন। নিজের স্বপ্ন নিয়ে নেতিবাচক ধারণাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। স্বপ্নটাকে নিয়ে অঙ্গীকার থাকতে হবে। আর সেটা পূরণের প্রতিশ্রুতি নিজেকেই দিতে হবে। প্রতিদিনই স্বপ্নটাকে একটু একটু করে বাস্তবে রূপ দেওয়ার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। সিদ্ধান্তের সঙ্গে আত্মবিশ্বাস যোগ করলেই সেটা অঙ্গীকারে রূপ নেয়। সিদ্ধান্ত নিন আপনি জীবনে কী করতে চান। বিশ্বাস করুন, সেটা অবশ্যই সম্ভব হবে এবং ঘটবেই। এই বিশ্বাসের জাদুকরী পরশেই আপনার স্বপ্নটা বাস্তবে রূপ নেবে। যদি সিদ্ধান্ত না নেন, বিশ্বাস না করেন এবং অঙ্গীকারবদ্ধ না হন, আপনি লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন না।
৩. ভয়কে জয় করুন: এটা একবারের বিষয় নয়। বারবার আপনাকে এই কাজটা করতে হবে। স্বপ্ন ব্যর্থ হওয়ার ভয়টা আপনাকে পিছিয়ে দেবে। লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য প্রাসঙ্গিক বিষয়টি নিয়ে বিস্তর চর্চা বজায় রাখতে হবে। নিয়মিত। এটাকে কঠিন মনে করবেন না। সঠিক চর্চা বা অভ্যাসটাকে বেছে নিন। বারবার চর্চা করুন। এই পুনরাবৃত্তি ইতিবাচক।
৪. তৎপর হোন: খুঁজে বের করুন, ঠিক কোন কাজটা করলে আপনার স্বপ্ন পূরণ হবে। তারপর সেটা শুরু করে দিন। প্রতিদিন। নিরন্তর। এই ধাপের মূল কথা হলো, প্রতিদিন নিজের সক্রিয়তা ধরে রাখুন।
৫. নিজেকে ভালোবাসুন: প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় নানা কাজের ঝামেলা ও বিড়ম্বনায় স্বপ্ন বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতা থেকে আপনার বিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা অনেক। তাই তাড়াহুড়া করা যাবে না। তাহলে সব পণ্ড হতে পারে। ধীরে ধীরে ধৈর্যসহকারে অগ্রসর হোন। মাঝে মাঝে বিরতি নিন। নিজেকে সুস্থির রাখুন। নিজের কথা শুনুন। প্রতিদিন কিছুটা সময় নীরবতা ও নির্জনতার মধ্যে কাটান। নিজেকে সময় দিন। নিজেকে সময় দিন অনুভূতি ও ভাবনাগুলোকে সুসজ্জিত করার। এতে আপনি নিজের স্বপ্ন ও লক্ষ্যগুলোর সংস্পর্শে থাকতে পারবেন। ইচ্ছেগুলোও বেঁচে থাকবে।
৬. অন্যদের সাফল্য থেকে প্রেরণা নিন: কাউকে দেখে যদি নিজের চেয়ে বেশি ভাগ্যবান মনে হয়, নিজেকে বলুন, ‘জেনে রাখো, আমিও লক্ষ্যে পৌঁছাব। আমি পারবই!’ যদি ভালো কিছু আশা করেন, সব নেতিবাচকভাবে নিজের চারপাশ থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করুন। এগুলো আপনার শক্তি ক্ষয় করে। অন্যদের ব্যাপারেও নেতিবাচক ভাবনাকে প্রশ্রয় দেবেন না। কাউকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। সবাই যার যার মতো। ফেসবুকেও নেতিবাচক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। অন্যদের অনুপ্রেরণা দিন। এর সুফল আপনিও পাবেন। অর্থের পেছনে ছুটবেন না। টাকাই চূড়ান্ত নয়, আরও অনেক কিছু আছে অর্জনের। টাকাপয়সাকে অতিমূল্যায়ন করবেন না।
৭. ভুল থেকে শিক্ষা নিন: ভুল তো হবেই, তাকে নিজ স্বপ্নগুলো বাদ দেওয়ার অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাবেন না। অনেক ব্যর্থতার মুখোমুখি হতে হবে। সেগুলোর কোনো কোনোটি আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। আবার কোনোটি হয়তো লক্ষ্যটাকেই বদলে দেবে। স্বপ্নটাকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারলে অবশ্য এ ধরনের ঘটনার সম্ভাবনা কম। সময় নিন। নিষ্ঠার সঙ্গে ভাবুন। দু-একটা ভুল করে ফেললেও সঠিক পথে ফিরে আসার সুযোগ খোলাই থাকে। নিজেকে আসল পথে দেখতে পেলে আপনারই ভালো লাগবে।
৮. ছোট ছোট সিদ্ধান্তও গুরুত্বপূর্ণ: প্রতিদিন সকাল সকাল জেগে ওঠার সিদ্ধান্ত নিন। এটাকে বড় কিছু মনে না হলেও একসময় আপনার জীবনে বড় প্রভাব বিস্তার করবে। প্রতিটি ছোট্ট সিদ্ধান্তই তাৎপর্যপূর্ণ। কোনো না কোনোভাবে সেগুলো কাজে লাগে। কারণ, আপনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই একসময় ঘটবে। আর আপনি সাফল্য, নাকি ব্যর্থতা অর্জন করবেন, সেটা আপনার কিছু সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করবে। তাই সিদ্ধান্ত বা বাছাই করার ক্ষেত্রে সুবিবেচনার পরিচয় দিতে হবে।
৯. বদ-অভ্যাসকে জয়ী হতে দেবেন না: এই সংক্ষিপ্ত জীবন, অনেক ব্যর্থতা ও নেতিবাচক অভ্যাসগুলোর ওপর দোষ চাপানোর সুযোগ অনেক। কিছু কিছু বিষয়ের ওপর আমরা বিরক্ত হয়ে পড়ি, সেগুলোর ব্যাপারে একঘেয়ে অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হই। এসবের বেড়াজাল থেকে বের হওয়ার পথ নিজেকেই খুঁজে নিতে হবে। অভ্যাস বদলানো কঠিন হলেও অসম্ভব তো নয়। তাই কোনো বদ-অভ্যাসকে আপনার ওপর ছড়ি ঘোরানোর সুযোগ দেবেন না।
১০. সবাইকে বন্ধু ভাবুন: দ্য আলকেমিস্ট বইয়ের লেখক পাওলো কোহেলো বলেছেন, ‘আর যখন তুমি কিছু চাইবে, সমগ্র মহাবিশ্ব তোমাকে সেটি অর্জনে সহায়তা করবে।’ এই উদ্ধৃতির আলোকে অনুপ্রাণিত হয়ে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনটি ধাপ অনুসরণ করুন: প্রথমত, বড় স্বপ্ন দেখুন। দ্বিতীয়ত, অবিরত তৎপর থাকুন। তৃতীয়ত, বিশ্বাস রাখুন, স্বপ্নপূরণের পথে মহাবিশ্ব আপনার পাশে আছে।

‘হাফিংটন পোস্ট’ অবলম্বনে