Thank you for trying Sticky AMP!!

'বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার নিয়ে পাড়ি দিচ্ছি'

আনীতা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

২০১১ সাল থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফার্স্ট অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আনীতা রহমান। বসেছেন ড্যাশ-৮, বোয়িং ৭৩৭-এর চালকের আসনে। বললেন, ‘দুই বছর ধরে সর্বাধুনিক বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার নিয়ে পাড়ি দিচ্ছি ইউরোপ-এশিয়ার বিভিন্ন গন্তব্যে।’

আনীতা বললেন,‘আমার বাবা ছিলেন বিমানের ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার। দেশের বাইরে বেড়াতে গেলে উড়োজাহাজের ককপিটে যেতাম। এভাবেই পাইলট হওয়ার আগ্রহ জাগে। আজ আমি ফার্স্ট অফিসার।’

 বিমানের ২০ জন নারী পাইলটের মধ্যে আনীতা একজন। পাইলটের লাইসেন্স পেয়েছেন  ২০০৬ সালে।

বিমান বহরে রয়েছে আধুনিক সব উড়োজাহাজ। আর তিনটি উড়োজাহাজ আসবে জুন মাসের মধ্যে। রুটের সংখ্যা বাড়ছে। পাইলটদের ব্যস্ত শিডিউল। প্রায় প্রতিদিনই ফ্লাইট। বিশ্রামের সময় কম। সংসারে খেয়াল রাখার সময় কমই মিলছে আনীতা রহমানের। তবে স্বামী রাফায়াত রাস্তির সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে সংসার সামলাতে খুব একটা বেগ পেতে হচ্ছে না। শাশুড়ি দিলারা কাদেরতো আছেনই। 

 আলাপচারিতায় আনীতা বললেন,‘ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৮ কোটি নারী। এর মধ্যে মাত্র ২০ জন আছেন রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমানের নারী পাইলট। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশের প্রায় ৮ কোটি নারীর প্রতিনিধিত্ব করছি। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’

 আনীতা বললেন, ‘বাবাকে দেখে আগ্রহ জাগে। আর আমি পাইলট হয়েছি আমার বড় ভাইয়ের উৎসাহে। বড় ভাইয়ের ইচ্ছে ছিল পাইলট হওয়ার, হয়েছেন প্রকৌশলী। কিন্তু এয়ারক্রাফটের খুঁটিনাটি আমার ভাই আমাকে জানাতেন। এখনো যুক্তরাষ্ট্র থেকে এয়ারক্রাফট সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য আমাকে জানান। আর ফ্লাইটে যাওয়ার পর আমার স্বামী আবহাওয়ার পূর্বাভাসসহ যা কিছু আছে, জানাতে থাকেন। ফ্লাইটে থাকার সময় সংসার নিয়ে নির্ভার থাকি আমার শাশুড়ির কারণে।’

আলাপচারিতার এই সময় ট্রলিতে করে হরেক রকমের খাবার সাজিয়ে নিয়ে এলেন আনীতার স্বামী রাফায়াত। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী।

আনীতা বললেন, ‘নারী ঘরে বসে থাকবে না, এ শিক্ষা পেয়েছি আমার মা শিরীন আক্তারের কাছ থেকে। তিনি হবীবুল্লাহ বাহার কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। আমার শাশুড়ি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। শাশুড়ি কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, ফ্লাইটে ওঠার আগে সেই খবর পেয়েছি। কিন্তু তখন কিছুই করার ছিল না। আজ  আমার জ্বর, “মানি” (শাশুড়ি) আমার সব বিষয় খেয়াল রাখছেন। আর এসব কারণেই পেশাগত যে চ্যালেঞ্জ আছে, তা খুব বেশি চ্যালেঞ্জ মনে হয় না।’

শাশুড়ি দিলারা কাদের বললেন, ‘২০১৫ সালে আনীতার বিয়ে হয়। ও আমার ছেলের বউ নয়, আমার মেয়ে। ফ্লাইটের কারণে প্রায়ই ওর দেশের বাইরে থাকতে হয়। অনেকে এসে বাড়িতে ছেলের বউকে দেখতে না পেয়ে কিছু কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি জানি, পিয়ান (আনীতার ডাক নাম) সংসারের প্রতি কতটা খেয়াল রাখে। ওর শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. কাদেরুজ্জামান বা আমার অথবা বাসার গৃহকর্মী কার কী প্রয়োজন, সব দিকে ওর লক্ষ।’