‘ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে নতুন ক্যাম্পাস’

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চলছে ‘জিপিএইচ ইস্পাত-প্রথম আলো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব ২০২৩’। এ উপলক্ষে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে তাঁদের ভাবনা জানিয়েছেন। এখানে পড়ুন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ এর বক্তব্য।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ
ছবি: সংগৃহীত

মানবিক মূল্যবোধ, আধুনিক জ্ঞান ও উন্নত গবেষণাচর্চার সমন্বয়ে যুগোপযোগী শিক্ষাদানের মাধ্যমে শিক্ষিত ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির লক্ষ্যে ২০০১ সালে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ কেসিএমজি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ২০১৯ ও ২০২০ সালে টানা দুবার দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণাক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করেছে। বিশ্বের ২৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম–সংক্রান্ত চুক্তি আছে। এ ছাড়া টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ইউনিভার্সিটি ইমপ্যাক্ট র‍্যাঙ্কিং ২০২৩-এ জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ‘দারিদ্র্য বিমোচন’ অর্জনে বিশ্বের সেরা পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।

আছে গবেষণা, আছে পুরস্কার

মানসম্মত গবেষণার জন্য ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট, ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ, সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসসহ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান সুনামের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণা কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা বিভাগ ও ইনস্টিটিউটগুলোকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। এ বছর মোট ১৫টি রিসার্চ সিড গ্রান্ট ইনিশিয়েটিভ (আরএসজিআই) অনুদান পেয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।

দেশে-বিদেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আয়োজনে আমাদের শিক্ষার্থীরা সব সময়ই সফলতার ছাপ রেখেছে। প্রথম বাংলাদেশি দল হিসেবে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকেরা ২০২২ সালের ওয়ার্ল্ড ডিবেট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে। সেই সঙ্গে ২০২১ সালে কেমব্রিজ ইউনিয়ন আয়োজিত বিশ্বের আরেক মর্যাদাপূর্ণ বিতর্ক প্রতিযোগিতা কেমব্রিজ ইন্টারভার্সিটি জিতে নেয় দলটি। ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের অন্যতম সেরা ও মর্যাদাপূর্ণ রোবোটিকস প্রতিযোগিতা ‘ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ’–এ অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান ও স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ঠিক পরেই স্থান করে নেয় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের নকশা করা মঙ্গলযান ‘মঙ্গল-তরী’। ২০২১ সালে জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি এবং ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আয়োজিত ‘কিবো রোবট প্রোগ্রামিং চ্যালেঞ্জ’ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের দল ‘এনিগমা সিস্টেমস’।

জাপানের কিয়ুসু ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে একমাত্র বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে মহাশূন্যে ‘অন্বেষা’ নামে ন্যানো স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। শিক্ষার্থীদের ক্রিটিক্যাল স্কিল তৈরিতে অবদান রাখায় ২০২২ সালে টানা তৃতীয়বারের মতো আইইইই রিজিওনাল এক্সেমপ্লারি স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ অ্যাওয়ার্ড জিতেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

নতুন ক্যাম্পাস ঘিরে আরও প্রত্যয়

শিক্ষার্থীদের সহানুভূতিশীল ও দায়িত্ববান মানুষে পরিণত করতে এবং তাদের মধ্যে নেতৃত্বের দক্ষতা গড়ে তুলতে ঢাকার অদূরে সাভারে আমাদের রয়েছে একটি আবাসিক ক্যাম্পাস। এই ক্যাম্পাসে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের একটি সেমিস্টার সম্পন্ন করতে হয়।

এ ছাড়া মেরুল বাড্ডায় আমাদের দৃষ্টিনন্দন নতুন ক্যাম্পাস তৈরির কাজ একেবারে শেষের দিকে আছে। ৫ একর জায়গায় ১ দশমিক ৭ মিলিয়ন বর্গফুটের এই স্থাপনা হবে পরিবেশবান্ধব। ‘গ্রিন বিল্ডিং’ হওয়ায় প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস সহজেই প্রবাহিত হতে পারবে। এই ক্যাম্পাসের মোট আয়তনের প্রায় ৫০ শতাংশ জলাশয়, লেক ও জীববৈচিত্র্যের জন্য থাকবে। নতুন এই ক্যাম্পাস ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আমার বিশ্বাস।