
পোপ ফ্রান্সিসকে বলা হয় ক্যাথলিক চার্চের মহান সংস্কারক। সহনশীলতা ও ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে পেয়েছেন বিপুল জনপ্রিয়তা। আজ ২১ এপ্রিল তিনি মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। দীর্ঘদিন ফুসফুসের গুরুতর জটিলতায় ভুগছিলেন। এর আগে ইতালির রোমে একটি হাসপাতালে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা চলেছে তাঁর। আজ সোমবার ভ্যাটিকানে কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে মারা যান তিনি। তাঁর সম্পর্কে জেনে নিন অজানা চমকপ্রদ কিছু তথ্য।
পোপ ফ্রান্সিসের পুরো নাম হোর্হে মারিও বেরগোগলিও। জন্ম আর্জেন্টিনার বুয়েন্স এইরেসে, ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বাবা ছিলেন ইতালীয় অভিবাসী রেলকর্মী, মা গৃহিণী। পোপের আরও চার ভাই–বোন আছে।
ধর্মীয় পথে আকৃষ্ট হওয়ার আগে, তরুণ বয়সে পোপ ফ্রান্সিস ট্যাঙ্গো নাচতেন তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে। কৈশোরে এক সংক্রমণের কারণে তাঁর একটি ফুসফুস অপসারণ করা হয়।
ছাত্রজীবনে বুয়েন্স এইরেসের একটি বারে বাউন্সার হিসেবেও কাজ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস এবং কিছু সময়ের জন্য ঝাড়ুদারের কাজও করেছেন।
পোপ ফ্রান্সিস দর্শন পড়েছেন এবং বুয়েন্সে এইরেস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেছেন রসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। পরে সাহিত্য, মনোবিজ্ঞান, দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব পড়াতেন, এরপর হন বুয়েন্সে এইরেসের আর্চবিশপ।
আর্জেন্টিনায় দায়িত্বে থাকাকালে পদমর্যাদার সুবিধা গ্রহণ না করে নিজেই রান্না করতেন ও বাসে যাতায়াত করতেন। পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর ইকোনমি ক্লাসে রোমে উড়ে যান এবং নিজের লাগেজ নিজেই বহন করেন।
দারুণ ফুটবলপ্রেমী ছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। প্রিয় দল ছিল আর্জেন্টিনার সান লোরেঞ্জো ক্লাব।
পোপ ফ্রান্সিস ২৬৬তম পোপ এবং গ্রেগরি তৃতীয়ের পর প্রথম অইউরোপীয় পোপ। গ্রেগরি তৃতীয়ের জন্মস্থান বর্তমান সিরিয়ায়। পোপ হিসেবে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন ৭৩১ সালে।
তিনিই প্রথম পোপ হিসেবে ‘ফ্রান্সিস’ নামটি ব্যবহার করছেন। নামটি বেছে নিয়েছিলেন সেন্ট ফ্রান্সিস অব অ্যাসিসির সম্মানে, যিনি দরিদ্রদের বন্ধু হিসেবে পরিচিত।
২০১৩ সালের শেষ দিকে নিশ্চিত হওয়া যায়, পোপ ফ্রান্সিস রাতে গোপনে ভ্যাটিকান ছেড়ে গরিবদের দান করতে যেতেন।
পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী পোপ ফ্রান্সিসকেও রেড শু দেওয়া হয়েছিল, তবে তিনি তা পরেননি। বরং পুরোনো, কালো জুতাই পরেছেন নিয়মিত
পোপ ফ্রান্সিস পোপাল প্রাসাদে না থেকে ভ্যাটিকানের সেন্ট মার্থা হাউসে অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে থাকতেন।
২০১৫ সালের জুনে পোপ ফ্রান্সিস পরিবেশ রক্ষার ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রকাশ করেন, যা ধর্মীয় নেতাদের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতন করতে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সূত্র: হলিনেম ডটওআরজি ডটইউকে