
গত বছর থেকে মোটামুটি এ বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত লিপস্টিকের চল ছিল লাল, কমলা আর গোলাপির মতো উজ্জ্বল রংগুলো। আর এখন দেখা যায় বেরি শেডের লিপস্টিক। অর্থাৎ বেরি-জাতীয় ফলগুলোর রং যেমন বেগুনি, গাঢ় লাল ইত্যাদি রঙের নানা শেড। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে হঠাৎ করেই পশ্চিমা মডেল কাইলি জেনার ও কেনডেল জেনারের ন্যুড লিপ এখনকার সর্বাপেক্ষা আলোচিত লিপস্টিক ট্রেন্ড। গাঢ় রংগুলো তো চলছেই, তবে সাজতে পছন্দ করেন এমন সবাই সংগ্রহে রাখছেন ত্বকের সঙ্গে মানানসই ন্যুড রঙের লিপস্টিক।
কাইলি জেনার একা নন, টেইলর সুইফট, জেসিকা অ্যালবা, কিম কারদাশিয়ান, জেনিফার লোপেজ এবং আরও তারকার এখনকার সাজে দেখা যাবে ন্যুড লিপস্টিকের নতুন অধ্যায়। মূলত নব্বই দশকের চল হলেও মেকআপে এটি পেয়ে গেছে ‘ক্লাসিক’ মর্যাদা। কেননা, ন্যুড লিপ যেমন যেকোনো পোশাক, সময় ও বয়সভেদে মানানসই ঠিক তেমনি বর্ণ-নির্বিশেষে যেকোনো সাজের সঙ্গেও মানানসই। ন্যুড লিপস্টিক মানে কিন্তু একটা রং নয়, এর মধ্যেই রয়েছে রঙের ভিন্নতা। গোলাপি, লালচে, বাদামি, পিচ ইত্যাদি নানা রঙের আভায় ন্যুড লিপস্টিকের শেড অগণিত। সব ন্যুড শেডগুলো যেকোনো বণের্র ত্বকের সঙ্গেই মানিয়ে যাবে তা নয়। তবে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মার্কিন মেকআপশিল্পী ববি ব্রাউনের মতে, ন্যুড লিপস্টিকের এত শেড আছে, যার মধ্যে বর্ণ-নির্বিশেষে সঠিক শেডটি খুঁজে পাওয়া যাবেই।
কিছু পরামর্শ
ত্বকের রঙের দিকে খেয়াল রাখুন। আপনি যদি খুব ফরসা হন তাহলে হালকা গোলাপি টোনের ন্যুড লিপস্টিক বেছে নিন। আপনার ত্বকের বর্ণ হলুদাভ হলে উষ্ণ বাদািম, কোরাল ও পিচ শেডগুলো খুব সহজে মানিয়ে যাবে। জলপাই আর গাঢ় বণের্র ত্বকের জন্য ব্রোনজ অথবা ক্যারামেল শেডের লিপস্টিকগুলো মানানসই।
ন্যুড লিপস্টিক পরার পর যদি আপনার সাজ খুব ফ্যাকাশে লাগে তাহলে বুঝবেন আপনার শেডটি ত্বকের রঙের থেকে বেশি হালকা, সে ক্ষেত্রে ত্বকের রঙের চেয়ে গাঢ় লিপস্টিক বাছাই করুন অথবা পুরো মুখের সাজে একটু ভিন্নতা আনুন। যেমন: চোখের মেকআপ একধাপ গাঢ় করে নিতে পারেন অথবা গালে ব্লাশ ও ব্রোনজারের ছোঁয়ায় একটু উষ্ণতা বাড়িয়ে নিন।
ক্রিমি বা ম্যাট কেমন লিপস্টিক ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করে নিজের পছন্দের ওপর। তবে ন্যুড লিপস্টিকের ক্ষেত্রে একটু সতর্ক হতে হবে। ক্রিমি টেক্সচারের লিপস্টিক ব্যবহারই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ। অনেক সময় ম্যাট ন্যুড লিপস্টিক ব্যবহারে ঠোঁট বেশ শুষ্ক দেখায়, ঠোঁটের ত্বকের ভাঁজগুলো দেখা যায়। আপনার ঠোঁট যদি পাতলা হয় তবে ফ্রস্ট টেক্সচার এড়িয়ে যান নয়তো আপনার ঠোঁট আরও ছোট ও পাতলা দেখাবে।
সাধারণত ন্যুড লিপস্টিকের রং অন্য রঙের লিপস্টিকের চেয়ে হালকা হয়, অর্থাৎ এর কভারেজ কম হয়। তাই ন্যুড লিপস্টিক পরার আগে অবশ্যই স্ক্রাবিংয়ের মাধ্যমে ঠোঁট মসৃণ করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
ঠোঁটের রঙে অসামঞ্জস্যতা থাকলে লিপস্টিক দেওয়ার আগে এক পরত ফাউন্ডেশন অথবা কনসিলার দিয়ে অসামঞ্জস্যতাটুকু ঢেকে ফেলুন।
ঠোঁটের রঙের সঙ্গে অথবা লিপস্টিকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে লিপ লাইনার পরুন, তারপর পছন্দের লিপস্টিকটি দিন। এতে যেমন লিপস্টিকের স্থায়িত্ব বাড়বে তেমনি আপনার ঠোঁটের রং আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
ন্যুড লিপস্টিকের সঙ্গে স্বচ্ছ ক্লিয়ার অথবা একই শেডের লিপগ্লস আপনার ঠোঁটের সাজে আনতে পারে ভিন্ন মাত্রা। লিপগ্লসের ব্যবহারে একেবারে অনভ্যস্ত না হলে একটু গ্লসের ছোঁয়া লাগিয়ে নিতে ভুলবেন না।
লেখক: গ্রিনস্টোরি নামের সৌন্দর্যবিষয়ক ব্লগ পরিচালনা করেন।