
ফুলেল নকশা, পাথর, পুঁতিসহ নানান কারুকাজ আর বাহারি রং। তবে, এগুলো জামা বা শাড়িতে নয়—জুতায়। এবার সাধারণ ডিজাইন বা রঙের বাইরে গিয়ে বৈচিত্র্যময় জুতার খোঁজ করছেন ক্রেতারা। তাঁদের জন্যই এমন জুতা। মেয়েদের জন্য এবারের চল আরামের সঙ্গে বর্ণোজ্জ্বল জুতা। ছেলেদের স্লিপার।
পেশায় ব্যাংকার জান্নাতুল ফেরদৌস মাকে নিয়ে জুতা কিনতে এসেছেন রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে। কী ধরনের জুতা খুঁজছেন, জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘চাকরি যেহেতু করি, কমফোর্টের কথা চিন্তা করতে হয়। আবার একটু ফ্যাশনেবলও হতে হবে।’ জানালেন, নিজের জন্য মাঝারি হিল আর মায়ের জন্য একটু নরম সমান্তরাল জুতা কিনবেন তিনি।
এই শপিং কমপ্লেক্সের বাটার শোরুমে ঢুকে দেখা গেল, মেয়েদের জুতার নকশায় এবার অনেক রং প্রাধান্য পেয়েছে। গায়ের জামার যে পুঁতি, পাথর এত দিন কারচুপির কাজে ব্যবহৃত হতো, তা এবার জুতার নকশাতেও স্থান পেয়েছে। উঁচু থেকে শুরু করে মাঝারি ও নিচু সমান্তরাল—সব জুতাতেই চুমকি, পুঁতি, পাথর বা বিভিন্ন ফুলেল নকশা করা হয়েছে।
বাটার স্টোর ম্যানেজার রাজীবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে ব্ল্যাক, ব্রাউনসহ কয়েকটি কমন কালারই বেশি চলত। কিন্তু এখন অলংকারের কাজ বেশি চলছে। অনেক বেশি কালারফুল জুতা চলছে এবার।’ এখনো জুতার কেনাকাটা সেভাবে শুরু হয়নি বলে জানালেন তিনি। তবে শিগগিরই ভালো বিক্রি শুরু হবে বলে আশা করছেন।
পোশাকের ব্র্যান্ড আড়ং বরাবরই ভিন্ন নকশার জুতা আনে। চামড়া ছাড়াও নানান এমব্রয়ডারি নকশার নিচু সমান্তরাল জুতা পাওয়া যাবে আড়ংয়ে। ধরন অনুযায়ী দাম পড়বে ৬০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা।
রোজার ঈদে পাঞ্জাবির বেশ চাহিদা থাকে। আর পাঞ্জাবির সঙ্গে স্লিপার না হলে চলেই না। তার ওপর আবহাওয়াটাও গরম। কিছুটা খোলামেলা নকশার স্লিপারই এবার ছেলেদের পছন্দের। অ্যাপেক্সের বিক্রয়কর্মী মো. আলামিন বলেন, দুই ফিতা ও পেছনে বেল্ট দেওয়া স্লিপার চলছে বেশি। পাঞ্জাবির সঙ্গে পড়তে আরামদায়ক। তবে জুতার মধ্যে সামনে কিছুটা সরু নকশার জুতাও বেশ চলেছে বলে জানালেন। আরেকটি জুতার ব্র্যান্ড ওরিয়নে পাওয়া যাচ্ছে স্লিপার ছাড়াও বিভিন্ন রঙের লোফার। ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন জুতা পাওয়া যাবে ৭৯০ টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকায়।
বলা যায়, ভরা বর্ষায় আসছে এবারের ঈদুল ফিতর। বৃষ্টি-কাদা-পানির কথাও চিন্তা করেছে বিভিন্ন জুতার ব্র্যান্ড। অ্যাপেক্স রাবার সোলের জুতা এনেছে। কিছুটা উঁচু। ওরিয়নে পাওয়া যাচ্ছে ‘পলিইউরিথিন’-এর ব্যালেরিনা সু ও রাবার সোলের জুতা। বসুন্ধরা সিটির আউটলেট ম্যানেজার আবদুল মালেক বলেন, বর্ষার সময় হওয়াতে এ জুতা বেশি চলছে। এগুলোর নকশাতেও বিভিন্ন কারুকাজ করা হয়েছে।
একটু মোটা ও চওড়া হিলে ফুলেল নকশা দেখা গেল। ‘লা মোড’ নামের আরেকটি জুতার ব্র্যান্ড ‘বাসন্তী’ নামের হিলে সুতার কাজের নকশা করেছে। অ্যাপেক্সের ‘মৌচি’ নামের জুতার হিলেও নকশা করা আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জুতার দোকানে এবার সামনের দিকে কাপড়ের সঙ্গে পুঁতি ও পাথর বসিয়ে নকশা করা হয়েছে। ‘লা-মোডে জুতার দাম পড়বে ৫৫০ টাকা থেকে ২৭৫০ টাকার মধ্যে।
যাঁরাই কিনতে এসেছেন, সব নকশা ছাপিয়ে আরামদায়ক জুতার কথাই ভাবছেন। তবে জুতার দোকানগুলোয় তুলনামূলক ভিড় কম। বিক্রেতারা বলছেন, মানুষের কাপড় কেনা এখনো শেষ হয়নি। দু-চার দিনের মধ্যেই মানুষ ভিড়তে শুরু করবে।