ফুল ফুটেছে পোশাকে
>ফুল সুন্দর। কখনো ঘর সাজানোর উপকরণ, কখনো গয়না, কখনো উপহার ফুল। ফুলেল নকশায় রাঙানো হয় নববধূর হাত। বাঙালির জীবনে ফুল আছে পোশাকেও। বিশ্বের ফ্যাশনধারাতেও চলছে ফুলেল মোটিফ। সেই তালে তাল মিলিয়ে এ দেশের ফ্যাশন হাউসগুলোও এনেছে ফুলেল নকশার পোশাক।
কোনো পোশাকের পুরোটা জুড়েই ফুল, কোনোটার এই কোণ থেকে ওই কোণ পর্যন্ত। কোনোটির শুধু নিচের অংশে ফুল, কোনোটির আবার ওপরের অংশে। ফুলের সঙ্গে পোশাকে আছে লতা-পাতা-ডালও। উজ্জ্বল ফুল, হালকা রঙের ফুল—কী নেই! হালকা কাজ, ভারী কাজ; রোজকার পোশাক, উৎসবের পোশাক—সব পোশাকেই রয়েছে ফুলেল নকশার ব্যবহার। মেয়েদের পোশাকের পাশাপাশি ছেলেদের পোশাকেও ফুলেল নকশার গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।
যেভাবে এল
বসন্ত ও গ্রীষ্ম—এই দুই ঋতুতে বিশ্ব ফ্যাশনের ধারা, বিগত সময়ে মানুষের চাহিদা আর বাংলাদেশের ফ্যাশনের চলতি ধারার কথা মাথায় রেখেই ফুলেল নকশার মোটিফে তৈরি হচ্ছে পোশাক। এমনই জানালেন সেইলরের ডিজাইন ও উন্নয়ন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. শিবলী রহমান। আবার দেশালের অন্যতম স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার ইশরাত জাহান বলেন, ফ্যাশন পরিবর্তনশীল। এখন ফুলেল নকশার পোশাক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও ফুলেল পোশাক পছন্দ করছেন।
তবে ফুলে ফুলে ছাওয়া পোশাকের এ ধারাটা একেবারে নতুন নয়। সত্তরের দশকে ছেলেদের কিছু পোশাকে ফুলেল মোটিফের প্রচলন ছিল। ইশরাত জাহান বললেন, এখন নতুনভাবে বৈচিত্র্যময় কাটের পোশাকে আবার এসেছে ফুলেল নকশা। ছেলেদের পোশাকে ফুল ছাড়াও আছে পাতা আর ডালপালা। মেয়েদের পোশাকের ফুলের নকশা কখনো কখনো সত্যিকারের ফুলের মতোই। অর্থাৎ, কৃষ্ণচূড়া দেখতে যেমন, সেভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পোশাকে। হয়তো ডালপালার মধ্যে থোকা ফুল। জামার এক কোণে হাতে সেলাই দিয়ে তোলা এক থোকা ফুল। আবার ফুলের আসল গড়ন ভেঙে বিমূর্ত নকশায় নিয়ে গিয়ে সেই মোটিফও ব্যবহার করা হচ্ছে পোশাকে।
পোশাক-রং-বুনন
এ বছর ছেলেদের শার্ট, টি-শার্ট এবং মেয়েদের বিভিন্ন টপে রঙিন ফুলেল নকশা ব্যবহার করা হচ্ছে। মধু–সরিষা রং, হালকা হলুদ, লেবু হলুদ ও হালকা লাল রঙের ছোঁয়া পাবেন পোশাকগুলোতে। হালকা বুননের সুতি কাপড় (ভয়েল, পপলিন, মোডাল) ব্যবহার করার কারণেই উজ্জ্বল রংগুলো বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন ডিজাইনাররা।
মেয়েদের জন্য পাশ্চাত্য ও এথনিক ধাঁচের পোশাক, শাড়ি আর ছেলেদের জন্য ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্টগুলো অধিকাংশ সুতির পোশাকেও পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবহারের সুবিধার কথা মাথায় রেখে কিছু জর্জেট ও সিনথেটিক কাপড়ের পোশাকও করা হচ্ছে। মেয়েদের পোশাকে রয়েছে বাহারি রং। লাল, নীল, কমলা, পিচ, গোলাপির পাশাপাশি আছে সাদা ও চাঁপা সাদা রঙের ব্যবহার। ছেলেদের পোশাকে আছে নীল, সাদা, কালো ও সবুজের প্রাধান্য।
এই সময়ে সবুজের বিভিন্ন শেড, হলুদের কিছু শেড (যেমন ধনে রং, কাঁচা হলুদ রং, ক্যাডমিয়াম ইয়েলো ইত্যাদি) ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার কোনো পোশাক হয়তো তৈরি করা হয়েছে ধূসর বা ফ্যাকাশে রঙের কাপড়ে, তাতে রয়েছে উজ্জ্বল রঙের ফুলেল নকশা। ফুলের কাজগুলো চমৎকারভাবে ফুটে আছে যেন। সারা লাইফস্টাইল লিমিটেডের প্রধান ডিজাইনার কাশফিয়া নেহ্রীন জানালেন, বিশ্বের ফ্যাশনধারায় চলছে ফুল ও ট্রপিক্যাল মোটিফ। বসন্ত আর ফুল বাঙালির হৃদয়ে একই সুতোয় গাঁথা। ডিজাইনাররাও তাই মাথায় রাখেন মৌসুম আর আবহাওয়াকে।
যেমন কাজে ফুটে উঠছে ফুল
ফ্যাশন হাউসগুলো ঘুরে দেখা যায়, শার্টে মূলত ছাপা নকশার কাজ করা হচ্ছে। টি-শার্ট ও পোলো শার্টে ছাপা নকশা আর ব্যাজ এমব্রয়ডারির (পোশাকে ব্যাজের মতো একটা অংশ নকশা করা) কাজ করা হচ্ছে। টি-শার্টে কিছু ডাই আবহও ব্যবহার করা হয়েছে। পাঞ্জাবিতে আছে এমব্রয়ডারি। ফতুয়াতেও রয়েছে ফুলেল নকশা। মেয়েদের নিত্যব্যবহার্য পোশাক, যেমন টপ বা কুর্তাতে হালকা কারচুপি, হ্যান্ড ও মেশিন এমব্রয়ডারির, অ্যাপ্লিক ও প্যাচওয়ার্কের কাজ করা হয়েছে। স্ক্রিন প্রিন্টও রয়েছে। মেয়েদের ফতুয়া, কামিজ, টপ, টিউনিক, পালাজ্জো ও পাঞ্জাবিতে পাবেন এমন নানান নকশা। টপের কাটে রয়েছে বৈচিত্র্য। দাওয়াত উপযোগী পোশাকে আছে ভারী কাজও। মেয়েদের টি-শার্টেও পাওয়া যাবে ফুলেল নকশা।
যেখানে পাবেন
সেইলর, সারা লাইফস্টাইল লিমিটেড, আর্টিসান, ফ্রিল্যান্ড, মিলান, ইজি, প্লাস পয়েন্ট, অক্সিজেন, স্মার্টেক্স, ইয়েলো, ইনফিনিটি মেগা মল, ক্লাব হাউস, গ্রামীণ ইউনিক্লো ও মান্ত্রা ক্রিয়েশনে পাবেন ফুলেল নকশার পোশাক। দেশাল, নগরদোলা, আড়ং, বাংলার মেলা, নিপুণ, কে ক্রাফট, রঙ বাংলাদেশ, অন্যমেলা, প্রাইডসহ অন্যান্য দেশীয় ফ্যাশন হাউসেও খোঁজ করতে পারেন।
আরও পড়ুন
-
সকাল ৯টার ট্রেন ছাড়েনি বেলা ২টায়ও, স্টেশনেই ঘুমিয়ে পড়েছেন ক্লান্ত মা-মেয়ে
-
বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকতে সাংবাদিকদের বাধা ব্যাংক লোপাটকারীদেরই উৎসাহিত করবে: নোয়াব সভাপতি
-
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত
-
মোদির বিভাজনের রাজনীতির পেছনের কারিগর, যেভাবে উত্থান অমিত শাহর
-
ঝড়বৃষ্টি হতে পারে ৬ দিন ধরে, বলছে আবহাওয়া অফিস