
উৎসবের ঢাক বাজল বলে। বছর ঘুরে দুয়ারে পয়লা বৈশাখ। জীর্ণতা ধুয়ে-মুছে নতুনের আবাহনে মেতে ওঠার দিন। পান্তা-ইলিশে উদরপূর্তি। লাল-সাদা পোশাকে মেলায় সারাবেলা। পথে পথে ডুগডুগি, ভেঁপু।
সব তো হবে! তবে সবার আগে চাই বর্ণিল পোশাক। বেশি সময় ব্যয় হয় এই কাজে। ফলে পছন্দসই পোশাক পেতে ঘোরাঘুরির শেষ নেই। ফ্যাশন হাউসগুলোও পোশাকের নকশা আর রঙে কম কাটা–ছেঁড়া করছে না। গত বছর তো রীতিমতো প্রথা ভাঙার ধুম পড়েছিল।
রঙের বৈচিত্র্য ছিল চোখে পড়ার মতো। লাল-সাদার পাশাপাশি ছিল হলুদ, সবুজ, নীল, মেজেন্টা ও কমলা। এবারও এসব রঙের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে পোশাকে। এ ছাড়া পোশাকের নকশায় দেশীয় মোটিফে ফিউশনধর্মী ওয়েস্টার্ন প্যাটার্নও নজর কাড়ছে।
শৈল্পিকের কর্ণধার ও ফ্যাশন ডিজাইনার এইচ এম ইলিয়াস বলেন, সময়ের সঙ্গে তাল রেখে ফ্যাশন বদলায়। পোশাকের ডিজাইন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে, আরও হবে। আগে যেমন বৈশাখী পোশাকে রং হিসেবে লাল-সাদার প্রাধান্য থাকত, এখন লাল-সাদার পাশাপাশি অন্য রঙেরও দেখা মিলছে। মূল কথা, যা-ই পরি না কেন, উজ্জ্বল রঙের পোশাক হওয়া চাই। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের পোশাক নিয়ে তো প্রতিনিয়ত ভাবতে হয়। তবে নকশায় দেশীয় মোটিফ থাকছেই।
প্রতিটি বিপণিবিতানে বৈশাখী পোশাকের সমাহার। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও টি–শার্টে ভরপুর বাজার। প্রতিটি
পোশাকের নকশায় দেখা গেছে দেশীয় নানা মোটিফ—ঘুড়ি, কলস, ঘণ্টা, পাখি, হাতপাখা, ফুল, ময়ূর, টেপা পুতুল প্রভৃতি। কাপড়ে প্রাধান্য পেয়েছে সুতি, সিল্ক, মসলিন ও লিলেন। জমকালো কাজ শাড়ি ও সালোয়ার–কামিজে। ছেলেদের পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও টি-শার্টের নকশায়ও আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। প্রায় ফ্যাশন হাউসে শিশুদের জন্য রয়েছে ফতুয়া, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট ও টপস।
ফ্যাশন ডিজাইনারদের মতে, পয়লা বৈশাখ তপ্ত দিন। তাই পোশাক নির্বাচনে অসচেতন হলে গরম ভোগাবে। দিনের পোশাক হওয়া চাই হালকা রঙের এবং আরামদায়ক। সুতির লাল-সাদার পোশাক হলে সবচেয়ে ভালো। উৎসবের আমেজ, আরাম—ষোলো আনাই পাওয়া যাবে।