মায়াবী এক নাচের সন্ধ্যায় তারার ঝলক

হাস্যোজ্জ্বল চঞ্চল চৌধুরী, কানিজ আলমাস খান ও জাহিদ হাসান
ছবি: সংগৃহীত

সবে সন্ধ্যা নেমেছে। আলোকি কনভেনশন সেন্টারের ভেতর ও বাইরে তখন আলো–আঁধারির মায়াময় এক পরিবেশ। মূল প্রবেশদ্বার পার হয়ে ভেতরে ঢুকতেই হাতে বেলি ফুলের মালা পরিয়ে আয়োজকেরা জানালেন সাদর সম্ভাষণ। স্নিগ্ধ সন্ধ্যায় গত ২৫ এপ্রিল তেজগাঁওয়ের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মায়া বেঙ্গল ইন মোশনের এক মনোমুগ্ধকর নাচের আয়োজন।

২৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক নৃত্যদিবসকে সামনে রেখে এ আয়োজন করা হয়। এবারের আয়োজনের থিম ছিল ‘টাইমলেস টেগোর’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য ও গানের সঙ্গে পরিবেশিত হয় নাচ। মূলত রাবীন্দ্রিক ধারাকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ছিল আয়োজকদের।

সাদা পোশাকে ইফা

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারা। দেশি পোশাক আর স্নিগ্ধ সাজে উপস্থিত হয়েছিলেন তাঁরা। কথা হলো অভিনেত্রী অপি করিমের সঙ্গে। জানালেন, অনুষ্ঠানের আবহের সঙ্গে মিলিয়ে জামদানি পরেছেন তিনি। খোলা চুলে মিষ্টি আবহ ছিল তাঁর সাজে। সাজেও ছিল স্নিগ্ধতার আবেশ। মডেল জান্নাতুল পিয়া পরেছিলেন সাদা জামদানি। রুনা খান, আজমেরী হক বাঁধনসহ আরও অনেকেই এসেছিলেন জামদানি পরে।

যেহেতু অনুষ্ঠানটির পুরো আয়োজন ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্ম নিয়ে, তাই অনুষ্ঠানে আসা অতিথিদের সাজপোশাকে রাবীন্দ্রিক সাজের ধারা দেখা যায়। অনেকেই খোঁপায় জড়িয়েছিলেন বেলি ফুলের গাজরা; বেছে নিয়েছিলেন সাদা রঙের দেশি কাপড়ের পোশাক। আফজাল হোসেন, চঞ্চল চৌধুরী, মেহজাবীন, মৌসুমী হামিদ, শবনম ফারিয়া, রেহানসহ অনেক তারকাই উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

জমকালো সাজে শবনম ফারিয়া

সন্ধ্যা ৬টা ৩০ বাজতেই হলরুমে শুরু হলো মূল অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য দেন স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী ও এমডব্লিউ ম্যাগাজিন বাংলাদেশের সম্পাদক ও প্রকাশক রুমানা চৌধুরী। মঞ্চে রুমানা চৌধুরী বলেন, ২০২৩ সালে শুরু হয় মায়া বেঙ্গল ইন মোশনের যাত্রা। সেই বছর প্রথমবার আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠানের। এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই আয়োজন। ভবিষ্যতেও এমন অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা জানালেন তাঁরা।

অনুষ্ঠানে মায়ার পণ্যের নানা গুণগত দিকের কথা তুলে ধরেন অঞ্জন চৌধুরী। স্কয়ারের পণ্যের মানে কোনো ধরনের আপস করা হয় না বলে জানালেন তিনি।

এভাবে ক্যামেরায় ধরা পড়লেন নৃত্যশিল্পী সামিনা হোসেন ও অভিনত্রী মেহজাবীন

‘আগুনের পরশমণি’ গানটির সঙ্গে নৃত্যশিল্পী আনিসুল ইসলাম হিরু ও মাহবুবা চাঁদনীর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের। দলীয় এই নৃত্যে দলগত নৃত্যশিল্পীরা পরেছিলেন সাদা পোশাক। আনিসুল ইসলাম হিরু ও মাহবুবা চাঁদনীর পরনে ছিল ছাই রঙের পোশাক। কোরিওগ্রাফির নান্দনিকতা ও আলোকসজ্জার দ্যোতনায় দর্শকদের মধ্যে যেন মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ধারাবাহিকভাবে পরিবেশিত হয় ভরতনাট্যম, কথক, মণিপুরি ও ওডিশি নাচ।

দেশি শাড়ি ও সাজে বাঁধন ও শাহনাজ খুশি

নৃত্য পরিবেশন করেন সাদিয়া ইসলাম মৌ, সাবরিনা শাফি নিশা, সামিনা হোসেন প্রেমা, আনিকা কবির শখ, তামান্না রহমান ও তাঁর দল। ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি’ গানটির সঙ্গে মণিপুরি নাচের কোরিওগ্রাফিতে সমসাময়িক বাংলাদেশের পটভূমিতে রবীন্দ্রনাথকে নতুনভাবে আবিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়েছে। তামান্না রহমান ও তাঁর দলের চমৎকার এই পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হন সবাই। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আজরা মাহমুদ ও মীর রাব্বী।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আজরা মাহমুদ ও মীর রাব্বী

উদ্যোক্তারা শুরুতেই জানান, বাংলাদেশের সমৃদ্ধময় সংস্কৃতিকে তাঁরা বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে চান। এরই প্রচেষ্টায় এ ধরনের আয়োজনের শুরু। এ আয়োজনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল সান কমিউনিকেশনস লিমিটেড।

বেঙ্গল ইন মোশনের আগে সিটি ব্যাংক ও আমেরিকান এক্সপ্রেসের সহযোগিতায় ‘ঢাকা ডায়োরামা ইমপ্রেশন অব আ মেগা সিটি’ নামের একটি গ্রুপ আর্ট এক্সিবিশনের আয়োজন করেছিল এমডব্লিউ ম্যাগাজিন।