আপনি কি বেশি খুঁতখুঁতে?
বারবার হাত ধোয়া, ঘর থেকে বেরিয়ে চুলা নেভানো হয়েছে কি না—তা দেখতে আবার ঘরে ঢোকা, খাওয়ার আগে ধোয়া প্লেট বা গ্লাস আবার ধোয়া—কখনো কখনো কারও মধ্যে এ রকম একই চিন্তা, অনুভূতি বা কাজের ইচ্ছা থাকে। তৈরি হয় উৎকণ্ঠা আর তীব্র মানসিক চাপ। যাপিত জীবনকে করে তোলে বিষময়। আক্রান্ত ব্যক্তি এসব চিন্তা, অনুভূতি বা অবয়বকে দমন করতে চায়, এড়িয়ে চলতে চায়। এ জন্য একই কাজ বারবার করতে শুরু করে। মানসিক স্বাস্থ্যের এই সমস্যার নাম অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি), যা সাধারণ পরিচ্ছন্নতা বা সাধারণ গুছিয়ে রাখার প্রবণতার মতো নয়, তার চাইতে অনেক বেশি, যেটি রীতিমতো রোগের পর্যায়ে পড়ে।
এই চিন্তা ও আচরণ মনের মধ্য থেকেই তৈরি হয়। রোগী নিজেও বুঝতে পারে যে এগুলো ভিত্তিহীন বা অযৌক্তিক, কিন্তু তা–ও চিন্তাটা সরাতে পারে না। এগুলোর পেছনে প্রতিদিন অনেক কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। কাজকর্মও ব্যাহত হয়। শরীর নোংরা হওয়ার ভয়, অহেতুক সন্দেহ, কোনো অমূলক শারীরিক সমস্যা নিয়ে চিন্তা, সবকিছুর মধ্যে নিখুঁত সামঞ্জস্য তৈরি করার ভাবনা, বিনা কারণে উত্তেজিত হয়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক ও অতিরিক্ত যৌন চিন্তা, ধর্মীয় বিষয়ে অস্বাভাবিক চিন্তা ও শ্রম, বারবার একই জিনিস পরীক্ষা করা (দরজা বন্ধ কি না, তা অনেকবার দেখা), অসংখ্যবার হাত ধোয়া, বেশি সময় ধরে গোসল করা বা বাথরুমে থাকা, কোনো কিছু বারবার গোনা (অনেকবার টাকা গুনে দেখা), একই প্রশ্ন বারবার করা, সবকিছু নিখুঁতভাবে সাজিয়ে রাখার চেষ্টা করা, প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় সবকিছু সংগ্রহে রাখা অর্থাৎ পরে কাজে লাগতে পারে ভেবে অপ্রয়োজনীয় বস্তুটিও ফেলে না দেওয়া ইত্যাদি হচ্ছে ওসিডির সাধারণ লক্ষণ। ওসিডি দমন করতে না পেরে আগ্রাসী আচরণ বা অত্যধিক রাগ হতে পারে কারও কারও।
পরিবারের কেউ এমন আচরণ করলে হেসে উড়িয়ে দেওয়ার কিছু নেই। ভাববেন না যে ও তো এ রকমই, একটু বেশি শুচিবায়ু বা খুঁতখুঁতে।
ওসিডি একটি রোগ এবং এর সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা রয়েছে। চার থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে ওষুধের প্রভাবে কিছুটা উন্নতি দেখা দিতে পারে। তবে পুরোপুরি ফল পেতে অপেক্ষা করতে হয় কয়েক মাস। ওষুধের পাশাপাশি ধারণা ও আচরণ পরিবর্তনকারী চিকিৎসা (কগনিটিভ-বিহেভিয়ার থেরাপি) এ রোগের জন্য বিশেষ কার্যকরী।
ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা
প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন: আমার বয়স ২৩ বছর ৯ মাস, উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি, ওজন ১০৫ কেজি। ব্যস্ততার কারণে খাওয়ার শিডিউল ঠিক রাখা কিংবা ডায়েট করা সম্ভব হয় না। প্রতিদিনের খাবার থেকেই কীভাবে ডায়েট করা যায়?
উত্তর: প্রতিদিনের খাবার ক্যালরি মেপে সারা দিনে অল্প অল্প করে খেতে হবে। শর্করা ও চর্বিযুক্ত খাবার কমান। আমিষ, সবজি, তাজা ফলমূল, দুধ বা দই, বাদাম খান। একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে ক্যালরি অনুযায়ী খাবার তালিকা নিন। আখতারুন নাহার, পুষ্টিবিদ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রয়েছে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক সময় ঘরে বসে কিংবা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপনার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান। উত্তর দেবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বয়স লিখতে ভুলবেন না।
ই–মেইলে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান: valothakun@prothomalo.com