শুক্রবারের স্বাস্থ্য পরামর্শ

ব্যায়াম হোক নিরাপদ

.

বসন্তের বাতাস বইছে। উদ্দীপিত সবাই। অনেকে ব্যায়ামটা নতুন উদ্যমে শুরু করছেন। ব্যায়ামের উপকারিতা অনেক, তাতে সন্দেহ নেই। তবে ব্যায়াম করতে গিয়ে কখনো কখনো অসাবধানতার কারণে চোট লাগতে পারে। তাই কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকুন:
* ব্যায়ামের শুরুতে খানিকক্ষণ শরীর গরম করে নিন। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে হালকা লাফাতে পারেন। কিংবা হাত দুটো পর্যায়ক্রমে ভাঁজ করুন আর প্রসারিত করুন। ধীরে ধীরে শরীরটাকে একটু নাড়িয়ে-চাড়িয়ে নেওয়া জরুরি। শুরুতেই ভারী ব্যায়াম করা ঠিক নয়। হালকা ব্যায়াম থেকে ধীরে ধীরে কঠিন ব্যায়ামে যেতে হবে।
* ব্যায়ামের সময় একটু ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। একদম আঁটসাঁট নয়, আবার বেশি ঢিলে পোশাকও নয়। শাড়ির চেয়ে সালোয়ার-কামিজ ব্যায়ামের জন্য বেশি উপযোগী। ব্যায়ামের সময় যেমন পোশাকে স্বস্তি পাবেন, তেমনটাই বেছে নিন। বাজারের প্রচলিত ট্র্যাকস্যুট মন্দ নয়। তবে গরমের সময়টাতে এ ধরনের ট্র্যাকস্যুটে অস্বস্তি লাগতে পারে। সম্ভব হলে পাতলা ও আরামদায়ক কাপড় দিয়ে ট্র্যাকস্যুটের ডিজাইনে ব্যায়ামের পোশাক বানিয়ে নিন।
* নরম জুতা পরে ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি করুন। শক্ত জুতা ব্যবহার করলে পায়ের পাতায় ব্যথা হতে পারে। মসৃণ জায়গায় ব্যায়াম করুন। হাঁটাচলা বা যেকোনো ব্যায়ামের জায়গায় ইট-পাথর ছড়িয়ে থাকলে আঘাত লাগার আশঙ্কা বেশি থাকে। পিচ্ছিল স্থানে ব্যায়াম করবেন না।
* কেউ কেউ সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামাকে ব্যায়াম ভেবে ভুল করেন। দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে গেলে যেকোনো বয়সী মানুষই পড়ে আঘাত পেতে পারেন। তাই প্রয়োজনে সিঁড়ি ব্যবহার করলেও ব্যায়ামের জন্য সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করবেন না। ছাদে ব্যায়াম করতে গেলেও নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখুন। রেলিংবিহীন ছাদে ব্যায়াম না করাই ভালো।
* হাঁটুব্যথার রোগীরা ব্যায়ামের সময় ‘নি ক্যাপ’ ব্যবহার করুন। কোমরে ব্যথা থাকলে লাম্বার করসেট পরে নিয়ে ব্যায়াম করা উচিত।
* পায়ের তলায় ব্যথা বা কোনো ক্ষত থাকলে পায়ে ভর দিয়ে ব্যায়াম করবেন না। বরং বসা অবস্থায় বা শোয়া অবস্থায় যেসব ব্যায়াম করা যায়, সেগুলো অনুশীলন করুন।
* ঘাড়ে ব্যথা থাকলে ‘সিট আপ’ ব্যায়াম করা যাবে না। পেটের চর্বি কমানোর ব্যায়াম ‘সিট আপ’। এ ব্যায়ামে একবার পিঠ সোজা রেখে শোয়ার মতো ভঙ্গি করতে হয়, এ সময় ঘাড় উঁচু রাখা হয়। আবার উঠে বসার সময় পেটের মাংসপেশিতে যেমন চাপ পড়ে, তেমনি ঘাড়েও চাপ পড়ে। তাই ঘাড়ে ব্যথার রোগীদের এ ধরনের ব্যায়াম এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
* ব্যায়ামের সময় হঠাৎ পায়ের পেছনের মাংসপেশিতে ব্যথা শুরু হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যায়াম থামিয়ে দিন এবং বসে পড়ুন। এ অবস্থায় ব্যায়াম চালিয়ে যাওয়া ঠিক নয়, বরং বিশ্রামটাই জরুরি।
চেয়ারম্যান, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়