
আমাদের বয়স বাড়তে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে কোষ বিভাজনক্ষমতা কমে যেতে থাকে। ফলে নতুন কোষ তৈরি হয় কম। বাড়তে থাকে বয়স্ক ও মৃতকোষ। কমে যেতে থাকে মেটাবলিক ক্রিয়ার গতি। যে কারণে মুখমণ্ডলের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয় ভাঁজ। এই বলিরেখাই যেন বার্ধক্যের প্রথম প্রকাশ। অনেকে দুশ্চিন্তায় থাকেন ত্বকের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ভাঁজ বা দাগ নিয়ে।
তবে শুধু বয়স নয়, আরও অনেক কারণে বলিরেখা তৈরি হয়। প্রখর সূর্যালোকে বেশি সময় কাটানো, অনিয়মিত জীবনযাপন, মানসিক চাপ, প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি পান, কম ঘুমানো, রাত জাগা ও বেশি জাঙ্ক ফুড খাওয়ার মতো নানা অনিয়মেও ত্বকে বলিরেখা পড়তে পারে। স্বস্তির বিষয় হলো, পরিমিত খাবারদাবারের সঙ্গে কিছু নিয়মিত যোগাভ্যাস বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। এমনকি যোগের নিয়মিত অভ্যাসে বৃদ্ধ বয়সেও ত্বকের টোন ও ঔজ্জ্বল্য বজায় থাকে।
উপকরণ: দুটো পায়ের পাতার মাঝে ১ ফুটের মতো ফাঁকা রেখে সোজা টান টান চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই পা ভাঁজ করে গোড়ালি নিতম্বের কাছাকাছি নিয়ে আসুন। হাত দুটো সোজা ওপরে তুলে আস্তে আস্তে হাতের তালু মাথার দুই দিকে মাটিতে রাখুন। এই অবস্থায় হাতের আঙুল কাঁধের দিকে মুখ করানো থাকবে। কনুই ছড়িয়ে না রেখে ছাদের দিকে মুখ করানো থাকবে। এবার শ্বাস নিতে নিতে প্রথমে নিতম্ব, তারপর পিঠ এবং অবশেষে মাথা তুলে ফেলুন। মাথা নিচের দিকে ঝুলিয়ে দেবেন, হাতের কনুইয়ে যাতে ভাঁজ না থাকে। আসন থেকে নামার সময় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আগে পিঠ নামাবেন, তারপর কোমর ও নিতম্ব নামিয়ে শেষে মাথা নামিয়ে শবাসনে বিশ্রাম নিন।
সময়কাল: ৩০ সেকেন্ড করে ৩ বার করুন।
সতর্কতা: উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা করবেন না। প্রথম অবস্থায় অনুশীলন নরম বিছানার ওপর করুন।
উপকারিতা: ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। নিয়মিত অভ্যাসে বলিরেখা দূর হয়। কোমরের গঠন সুন্দর হয়।
মনে রাখুন: বিশ্রামের ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়ম হলো, যতক্ষণ আসন করবেন ততক্ষণ বিশ্রাম নেবেন।
যেভাবে করবেন: পায়ের পাতা কাছাকাছি রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। দম নিতে নিতে হাত শরীরের পাশ থেকে ওপরে তুলুন, একই সঙ্গে গোড়ালি উঁচু করে পায়ের পাতার ওপর দাঁড়ান। হাত এমনভাবে সোজা করুন, যেন বাহু আপনার কানের সঙ্গে লেগে থাকে। আসনে থাকা অবস্থায় স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস চলবে। চোখের দৃষ্টি সামনে রাখুন বা চোখ বন্ধ করেও থাকতে পারেন।
সময়কাল: ৩০–৬০ সেকেন্ড করে ৩ বার করুন।
উপকারিতা: পুরো শরীরের স্ট্রেচিং হয় বিধায় ত্বকের টোন ভালো রাখে। ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। ছোটদের বা টিনেজাররা নিয়মিত এই আসন করলে উচ্চতা তাড়াতাড়ি বাড়ে।
যেভাবে করবেন: চিত হয়ে টান টানভাবে শুয়ে পড়ুন। হাঁটু দুটো ভাঁজ করে মুখমণ্ডলের দিকে টান দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে গোড়ালি ওপর দিকে (ছাদের দিকে) ধাক্কা দিন। এই অবস্থায় আপনার নিতম্ব, কোমর এমনিতেই ওপরে উঠে যাবে এবং একই সময় কোমরে হাত বাঁধিয়ে দেবেন। চেষ্টা করবেন কাঁধ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত সোজা রাখার। হাত কোমর থেকে আস্তে আস্তে পাঁজরের দিকে নিলে শরীর সোজা হতে থাকবে। নির্দিষ্ট সময় থাকার পর পা দুটো মাথার দিকে ঝুঁকিয়ে আস্তে আস্তে পিঠ, কোমর ও নিতম্ব নামিয়ে তারপর পা নামান।
সময়কাল ও শ্বাসপ্রশ্বাস: আসনে থাকা অবস্থায় ধীরে ধীরে শ্বাসপ্রশ্বাস চালাবেন। আসন থেকে ভালো সুফল পাওয়ার জন্য ৩ মিনিট করে দু–তিনবার করুন।
উপকারিতা: বলিরেখা দূর করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। চুল পড়া কমায়। থাইরয়েড গ্রন্থি সুস্থ রাখে
সতর্কতা: উচ্চ রক্তচাপ, ঘাড় ব্যথা, হার্টের সমস্যা প্রভৃতি রোগীরা এই আসন করবেন না।