প্রাথমিক অবস্থায় শিশুর শরীরে বড় কোনো উপসর্গ না–ও থাকতে পারে। তবে রক্তশূন্যতার কারণে শিশুর শরীর কিছুটা ফ্যাকাশে দেখায়। শিশু সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। খাবারে অরুচি থাকে।

দিন দিন ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে—এমন উপসর্গ নিয়ে যখন শিশুকে চিকিৎসকের কাছে আনা হয়, তখন প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, শিশুটি রক্তশূন্যতায় ভুগছে। শিশুর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যদি স্বাভাবিক মানের নিচে থাকে, তাহলে শিশুটি রক্তশূন্যতায় ভুগছে ধরে নেওয়া হয়।
শিশুর রক্তশূন্যতার পেছনে বড় একটি কারণ আয়রনের ঘাটতি। এ ছাড়া বংশগত ব্যাধি থ্যালাসেমিয়া, কৃমির সংক্রমণ, কোনো কারণে রক্তকোষ উৎপাদন বাধাপ্রাপ্ত হওয়া, কিডনির দীর্ঘমেয়াদি অসুখ, এমনকি ক্যানসারের কারণে শিশুর শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
শিশুর আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতার প্রধান কারণ—
অপরিণত শিশুর জন্ম এবং জন্মকালে ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকা (জন্মকালীন ওজন ২ হাজার ৫০০ গ্রাম বা তার কম)
জন্মের পর মাতৃদুগ্ধ পান না করা
কৃমির সংক্রমণ
শিশুর ছয় মাস বয়স হওয়ার পরও অন্য কোনো খাবার না দিয়ে দীর্ঘদিন কেবলই বুকের দুধ চালিয়ে যাওয়া।
প্রাথমিক অবস্থায় শিশুর শরীরে বড় কোনো উপসর্গ না–ও থাকতে পারে। তবে রক্তশূন্যতার কারণে শিশুর শরীর কিছুটা ফ্যাকাশে দেখায়। শিশু সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। খাবারে অরুচি থাকে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি রক্তশূন্যতার কারণে শিশুর মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। শিশুর নিশ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। শ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ শোনা যায়। এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শিশুকে সবুজ শাকসবজি, কলিজা, ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
জন্মের প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধু বুকের দুধ দিতে হবে। জন্মকালীন ওজন কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ছয় সপ্তাহ বয়স থেকে তিন মাস পর্যন্ত আয়রন ওষুধ দিতে হবে।
শিশুকে নির্দিষ্ট বিরতিতে কৃমিনাশক দিতে হবে। পরিচ্ছন্নতার দিকে জোর দিতে হবে।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল