
আজকাল সুপারফুড বলে একটা কথা চালু হয়েছে। যেসব খাবারের পুষ্টিগুণ সাধারণ খাবারের তুলনায় অনেক বেশি, সেগুলো সুপারফুড। আমলকীর গুণাগুণের কথা বিবেচনা করলে একে সুপারফুডের চেয়েও এগিয়ে রাখা যায়। প্রায় স্বচ্ছ-সবুজ দেখতে টক ও তেতো স্বাদের এই ফল ভিটামিন সির দারুণ উৎস। আমলকীর পলিফেনলস নামক অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবেও পরিচিত। বহুগুণসমৃদ্ধ আমলকী শুধু খাদ্য উপাদান নয়, ত্বক ও চুলের সৌন্দর্যেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে আদিকাল থেকে। স্বাস্থ্যকর ও ঝলমলে চুল পেতে অনেকেই নিয়মিত আমলকী ব্যবহার করেন।
চুলের যত্নে আমলকী
রুক্ষ-শুষ্ক চুলকে মসৃণ ও ঝরঝরে করতে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে আমলকীচূর্ণ ব্যবহার করতে পারেন।
আমলকীতে থাকা ফাইটো-নিউট্রিয়েন্ট, ভিটামিন ও খনিজ প্রয়োজনীয় কোলাজেন প্রোটিন তৈরি করে। কোলাজেন চুলের ফলিকলের মৃত কোষকে নতুন কোষে প্রতিস্থাপন করে।
আমলকীর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল উপাদান মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখে। ত্বকে পুষ্টি জোগায় এবং খুশকি দূর করে।
আমলকীর রস চুলের ফলিকলগুলো শক্তিশালী করে চুলকে মজবুত করে। দ্রুত চুল বাড়তে সাহায্য করে। এটি মাথার ত্বক ও চুলের টনিক হিসেবেও দারুণ কাজ করে।
নিয়মিত আমলকীর রস পান করলে এতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সাইড বয়সের আগে চুল পাকা রোধ করবে।
সপ্তাহে দু-তিন দিন আমলকীর রস দিয়ে চুল পরিষ্কার করলে চুলের পাকা ভাব কমে। চুল পড়া কমে যায়।
আমলকী মাথার ত্বকের রক্তসঞ্চালন বাড়াতে ও ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহারে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং চুল দেখতে মসৃণ হয়।
চুলের যত্নে যেভাবে আমলকী ব্যবহার করবেন
আমলকীর হেয়ারপ্যাক: আমলকী রোদে শুকিয়ে মিহি গুঁড়া করে নিন। নারকেল তেল বা অন্যান্য ভেষজ উপাদান, যেমন মেহেদি বা মেথির গুঁড়ার সঙ্গে মিশিয়ে হেয়ারপ্যাক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
আমলকীর তেল: আমলকী কেটে সেদ্ধ করে রোদে শুকিয়ে নিন। নারকেল তেলের সঙ্গে শুকনো টুকরাগুলো ২০ মিনিট ধরে গরম করুন। ঠান্ডা হলে বয়ামে সংরক্ষণ করুন। সপ্তাহে এক-দুবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
আমলকীর রস: এটি বেশ সহজ প্রক্রিয়া। আমলকী কেটে পানি যোগ করে ব্লেন্ড করে নিন। আমলকী ও লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় দিয়ে ৩০ মিনিটের মতো রেখে দিন। হালকা গরম পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিন। নিয়মিত আমলকীর রস ব্যবহারে চুলের গোড়া শক্ত হয়।