Thank you for trying Sticky AMP!!

তলপেটে ব্যথা হয় কেন

তলপেটে ব্যথা খুব সাধারণ কারণে যেমন হয়, তেমনি আবার এর পেছনে থাকতে পারে মারাত্মক কোনো কারণ

নাভির নিচের অংশে ব্যথা হলে তাকে তলপেটের ব্যথা হিসেবে দেখা হয়। তলপেটে ব্যথা খুব সাধারণ কারণে যেমন হয়, তেমনি আবার এর পেছনে থাকতে পারে মারাত্মক কোনো কারণ।
নারী-পুরুষনির্বিশেষে তলপেটে ব্যথার সাধারণ কারণগুলো নিয়ে প্রথমে আলোচনা করা যাক। তলপেটের ডানদিকে যদি তীব্র ব্যথা হয়, তাহলে তা অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা কি না, নিশ্চিত হতে হবে। অন্য কারণের মধ্যে আছে মূত্রথলির প্রদাহ, মূত্রথলির পাথর, প্রস্রাবের ইনফেকশন ইত্যাদি। কখনো কখনো কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা হজমের সমস্যা থেকেও তলপেটে ব্যথা হতে পারে। টানা ব্যথার সঙ্গে কোনো চাকা থাকলে, গায়ে জ্বর অনুভব করলে বা ওজন কমে যাওয়ার সমস্যা হলে অন্যান্য মারাত্মক কারণ, যেমন পেটের টিউমার, টিবি রোগ ইত্যাদির কথাও ভাবতে হবে।

মেয়েদের ক্ষেত্রে তলপেটে ব্যথার আরও কিছু বিশেষ কারণ রয়েছে। মাসিকের সময় এই ব্যথার কথা অনেকেই বলেন। দুই মাসিকের মাঝামাঝি সময়েও অনেকের ব্যথা হতে পারে, ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার কারণে। একে বলে ওভুলেশন পেইন। এন্ডোমেট্রিওসিস নামের এক জটিল ব্যাধিতেও তলপেটে ব্যথার উপসর্গ থাকতে পারে। জরায়ুতে কোনো প্রদাহ, টিউমার ইত্যাদি কারণে ব্যথা হয় হামেশাই। ডিম্বাশয় বা ওভারি নারীদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ওভারিতে প্রদাহ বা ইনফেকশন হলে, ওভারি প্যাঁচ খেয়ে গেলেও তলপেটে তীব্র ব্যথা হতে পারে। আরেকটা মারাত্মক কারণ হচ্ছে, যদি কোনো নারীর গর্ভধারণ জরায়ু বাদে অন্য জায়গায়, যেমন জরায়ু নালি বা ইউটেরাইন টিউব বা তলপেটের অন্যান্য স্থানে হয়। একে এক্টোপিক প্রেগনেন্সি বলে। সেই ক্ষেত্রে হঠাৎই তলপেটে মারাত্মক ব্যথা নিয়ে রোগী চিকিৎসকের কাছে আসতে পারেন, যার তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি।

মোদ্দাকথা হচ্ছে, যেকোনো ব্যথার ক্ষেত্রেই শুধু ব্যথার বড়ি না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। মাসিকের ব্যথা হলে ব্যথার ওষুধ প্রয়োজন অনুযায়ী খাওয়া যায়, তবে সঙ্গে এন্ডোমেট্রিওসিস আছে কি না, দেখতে হবে। পেটের সমস্যার কারণে হলে উপসর্গ অনুযায়ী ওষুধ খেলে আরাম পাওয়া যায়। প্রস্রাবের ইনফেকশন হলেও অ্যান্টিবায়োটিকের পাশাপাশি কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে আরাম পাওয়া সম্ভব। কিন্তু ব্যথা যদি জটিল মনে হয়, সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ থাকলে অবশ্যই কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া দরকার। কিছু জটিলতা, যেমন অ্যাপেন্ডিসাইটিস বা এক্টোপিক প্রেগনেন্সির ক্ষেত্রে কিন্তু জরুরি অস্ত্রোপচার লাগতে পারে। যদি তা সময় মতো না করা হয়, তাহলে প্রাণঘাতীও হতে পারে।
তলপেটে ব্যথা মেয়েদের ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ উপসর্গ হিসেবে গণ্য করা হলেও যেহেতু এর পেছনে জটিল কারণও রয়েছে, সেহেতু এটিকে অবশ্যই গুরুত্বসহকারে দেখা দরকার। প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কারণ নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

Also Read: কত বছর বয়স পর্যন্ত একজন পুরুষ বাবা হতে পারেন