ভিটামিন শরীরের সঠিক বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে। অসুস্থতার সময় বা অতিরিক্ত ডায়েট কন্ট্রোল করার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়। তখন বাধ্য হয়ে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। তবে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট কিন্তু যখন-তখন নেওয়া যাবে না। এরও আছে নির্দিষ্ট সময়।
সময়: সকালে খাবার খাওয়ার পর খেতে হবে।
কারণ: এটি ফ্যাট-সলিউবল (চর্বিতে দ্রবণীয়) ভিটামিন। তাই সামান্য চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে খেলে শোষণ বাড়বে।
উপকার: চোখের দৃষ্টি, ত্বকের স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
সময়: সকালে নাশতার আগে বা নাশতার সঙ্গে খেতে হবে।
কারণ: খালি পেটে বা হালকা খাবারের সঙ্গে ভিটামিন বি ভালো শোষণ হয়। এটি শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে, তাই দিনের শুরুতে খেলে বেশি ভালো। স্নায়ুকে উত্তেজিত করে, ফলে ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে, তাই রাতে না খাওয়াই ভালো।
উপকার: স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
সময়: দিনের যেকোনো সময় খাবারের পর খাওয়া ভালো।
কারণ: পানিতে দ্রবণীয়, সহজে শোষিত হয়। খালি পেটে খেলে অ্যাসিডিটি হতে পারে, তাই খাবারের পর খাওয়া ভালো।
উপকার: রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ত্বকের কোলাজেন গঠন করে। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে।
সময়: সকালে বা দুপুরে খাবার খাওয়ার পর খেতে হবে।
কারণ: চর্বিতে দ্রবণীয়, তাই চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে খেতে হবে। সকালে বা দুপুরে খেলে শরীরের প্রাকৃতিক হরমোনের সঙ্গে মানিয়ে যাবে।
উপকার: হাড় ও দাঁত মজবুত করে এবং ক্যালসিয়াম শোষণ বৃদ্ধি পায়।
সময়: যেকোনো বেলা খাবার খাওয়ার পর খেতে হবে।
কারণ: ফ্যাট-সলিউবল, তাই চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে খাওয়া ভালো।
উপকার: ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, কোষের সুরক্ষা দেয় এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
সময়: দুপুর বা রাতের খাবারের পর খাওয়া ভালো।
কারণ: চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে ভালো শোষণ হয়।
উপকার: রক্ত জমাট বাঁধা ও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
অতিরিক্ত ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ ক্ষতির কারণ হতে পারে।
একই সঙ্গে বিভিন্ন ভিটামিন খাওয়া যাবে না, এতে শোষণক্ষমতা কমে যাবে। যেমন ক্যালসিয়াম ও আয়রন একসঙ্গে খেলে আয়রনের কার্যকারিতা কমে যায়। আবার আয়রনের সঙ্গে ভিটামিন সি খেলে আয়রনের শোষণ বাড়ে।
যাঁদের বিশেষ রোগ (যেমন কিডনি বা লিভারের সমস্যা) আছে, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সাপ্লিমেন্ট নেবেন না।
প্রাকৃতিক উৎস থেকে ভিটামিন পাওয়া সব সময় ভালো।
ডা. আফলাতুন আকতার জাহান, জুনিয়র কনসালট্যান্ট, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা